অদম্য সুমী এমবিএতে প্রথম

অদম্য মেধাবী সুমি আক্তার।
অদম্য মেধাবী সুমি আক্তার।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী সুমী আক্তার। গত বুধবার রাতে ওই ফল ঘোষণা করা হয়। এর আগে অদম্য মেধাবী ওই শিক্ষার্থী একই বিভাগ থেকে বিবিএ পরীক্ষার ফলে ব্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তিনি।

সুমীর বাড়ি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। তিনি গ্রামের হতদরিদ্র শহীদুল্লাহ ও রোকসানা আক্তারের বড় মেয়ে। নয় বছর আগে মেধাবী ছাত্রী সুমীর পাশে দাঁড়ায় প্রথম আলো। ব্র্যাক ব্যাংক -প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিলের টাকায় এইচএসসি ও বিবিএ সম্পন্ন করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সুমী আক্তারের বাবা শহীদুল্লাহ অন্যের জমিতে কাজ করেন। ওই টাকায় স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলের ভরণপোষণ টেনেটুনে চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১০ সালে সুমী বরুড়া উপজেলার নলুয়া মনোহরপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে জিপিএ ৫ পান। এরপর তাঁকে নিয়ে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তখন প্রথম আলোর উদ্যোগে ব্র্যাক ব্যাংক -প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী তহবিলের সহযোগিতায় তাঁকে বৃত্তি দেওয়া হয়। পরে সুমী কুমিল্লা কমার্স কলেজে ভর্তি হন। ২০১২ সালে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বিবিএ পরীক্ষায় সুমী সিজিপিএ ৪–এর মধ্যে ৩ দশমিক ৭৭ পেয়ে নিজের ব্যাচের মধ্যে দ্বিতীয় হন। বুধবার প্রকাশিত এমবিএর ফলে তিনি সিজিপিএ ৩ দশমিক ৯০ পেয়েছেন, যা ব্যাচের মধ্যে সেরা ফল।

সুমী আক্তার বলেন, ‘প্রত্যন্ত পল্লির মেয়ে আমি। প্রথম আলোর সহায়তায় এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার ইচ্ছা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া। লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শফিকুল আলম বলেন, সুমী পড়াশোনার প্রতি খুবই যত্নশীল। দারিদ্র্যকে জয় করে সে ভালো করেছে। বিভাগের অন্যতম মেধাবী ছাত্রী। ওর মধ্যে স্বপ্ন আছে। এখন স্বপ্ন পূরণের জন্য তাঁকে তৈরি হতে হবে।

সূত্র: প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশ ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:৫৪ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯।