'ঈদের দিনে অন্তত না খেয়ে থাকতে হবে না'

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রথম আলো ট্রাস্টের খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন বন্ধুসভার সদস্যরা। গতকাল সদরের চাপাতলা গুচ্ছগ্রামে।  ছবি: প্রথম আলো
বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রথম আলো ট্রাস্টের খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন বন্ধুসভার সদস্যরা। গতকাল সদরের চাপাতলা গুচ্ছগ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

‘আইলায় সবকিছু হারিয়েছিলাম, আম্পানেও আবার হারিয়েছি। ঘরের চাল-ডাল সব ভেসে গেছে। এখন খাওয়ার কিছু নেই। কোনো জায়গা থেকেও ত্রাণ পাইনি। প্রথম আলোর এই খাবার পেয়ে ঈদের দিন অন্তত না খেয়ে থাকতে হবে না।’

হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট পেয়ে এভাবেই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন পঞ্চাশোর্ধ্ব সালাহউদ্দিন সরদার। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে খুলনার কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের এই ব্যক্তি পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের ওপর। সালাহউদ্দিনের মতোই উপকূলীয় পাঁচ জেলার আরও প্রায় ৮৫০ পরিবারকে গতকাল শুক্রবার খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। বিতরণে সহায়তা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা।

প্রথম আলোনিজস্ব প্রতিবেদক প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

খুলনার কয়রার বিভিন্ন এলাকার ১৫০ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেঁয়াজ ও খাওয়ার স্যালাইন।

সাতক্ষীরার বিচ্ছিন্ন জনপদ শ্যামনগরের রমজান নগর ইউনিয়নের গোলাখালি গ্রাম। সকালে সাতক্ষীরা শহর থেকে সড়ক ও নৌপথে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বন্ধুসভার সদস্যরা খাদ্যসামগ্রী নিয়ে পৌঁছে দেন ওই গ্রামের ১২০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে। সহায়তা পেয়ে মোমেনা খাতুন (৭৫) বলেন, ‘ছেলেমেয়ে, নাতি-পুতনিনে কোনো রকমে মাদার নদী পার হয়ে সাইক্লোন আশ্রয়ণে জীবন বাঁচাইছি। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি এসে দেখি দুইখানা ঘর পড়েগে। আমাগো এ গ্রামের কেউ আসতেস না। প্রথম আলোর ত্রাণ পেয়ে খুব ভালো হয়ে।’

বাগেরহাট সদর উপজেলার চাপাতলা গুচ্ছগ্রাম, মাঝিডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মাঝিডাঙ্গা গ্রামে ২০০ পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে।

ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে ক্ষতিগ্রস্ত ২০০ মানুষের মধ্যে বিকেলে সহায়তা পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। সহায়তা পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটে। অশীতিপর মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রথম আলো যে সাহায্য করেছে, তাতে কিছুদিন চলবে ভালোভাবে।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি নদীর পাড়ে জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবারের মধ্যে সকালে এবং দুপুরে বঙ্গোপসাগর তীরের কলাপাড়া শহর ও টিয়াখালী ইউনিয়নের ৯৫ জন দুর্গত মানুষকে সহায়তা দেওয়া হয়।