গাইবান্ধার বন্যার্তদের পাশে প্রথম আলো

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। গতকাল গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি মার্চেন্টস উচ্চবিদ্যালয় মাঠে।  ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। গতকাল গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি মার্চেন্টস উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। ছবি: প্রথম আলো

অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে কোনোরকমে চার সদস্যের সংসার চালাচ্ছিলেন পাখি বেগম (৪২)। করোনায় কাজটা ছুটে গেল। আর সাম্প্রতিক বন্যায় ডুবে গেছে তাঁর দুটি বসতঘরই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে উঠেছেন ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট গ্রামের পাখি বেগম গতকাল মঙ্গলবার এসেছিলেন প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ নিতে। পাখি বেগমের মতো গতকাল কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট, কড়ইবাড়ি ও পারদিয়ারা গ্রামের ১০০ জন বন্যার্ত নারী–পুরুষ প্রথম আলো ট্রাষ্টের ত্রাণ পেয়েছেন। প্রত্যেককে পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি লবণ, এক কেজি আলু ও আধা কেজি মসুরের ডাল দেওয়া হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এসব ত্রাণ বন্যার্তদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ত্রাণ পেয়ে কড়াইবাড়ি গ্রামের রিকশাচালক ফারুক মিয়া (৪৫) বললেন, ‘করোনাত বাইরে বারান যায় না। বান আসি অবস্থা আরও খারাপ হচে। বানের পানিত ধান–চাউল ভাসি গেচে। দশ দিন থাকি কষ্ট করি পানির মদ্দ্যে আচি। কোনো ইলিপ (ত্রাণ) পাই নাই। তোমারঘরে পোত্তম আলোর ইলিপকোনা পায়া উপক্যার হলো।’

গতকাল সকালে গাইবান্ধা প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা পিকআপ ভ্যানে কামারজানিতে ত্রাণের প্যাকেট নিয়ে যান। বেলা একটায় কামারজানি মার্চেন্টস উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এসব ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

ত্রাণ বিতরণের আগে এক সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার, কামারজানি মার্চেন্টস উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকুল ইসলাম ও গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার।

বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, প্রথম আলোর ত্রাণ বিতরণের এই উদ্যোগ অনেক প্রশংসার। করোনার মধ্যে বন্যা এসেছে। বন্যা ও করোনা এই দুটি বিপর্যয়ে মানুষ বিপাকে পড়েছেন। এই সংকটের সময় প্রথম আলো তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। পত্রিকাটি সব সময় অসহায় মানুষের পাশে থাকে, এটা ভাল উদ্যোগ।

কামারজানি মার্চেন্টস উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকুল ইসলাম বলেন, পত্রিকার কাজ সংবাদ প্রচার করা। কিন্তু প্রথম আলো ব্যতিক্রম। পত্রিকাটি মানবিক মূল্যবোধ থেকে ত্রাণ বিতরণ করছে। এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী সাদ্দাম হোসেন, গাইবান্ধা প্রথম আলো বন্ধুসভার উপদেষ্টা নাহিদ হাসান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিল্লাত হোসাইন ও ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর : ২০৭ ২০০ ১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা