'আইজ পেট ভইরা ভাত খাইতে পারব'

রিদপুরের বন্যার্তদের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বাড়ি ফিরছেন গ্রামবাসী। গতকাল সকালে ফরিদপুরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গদাধরডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে।  ছবি: প্রথম আলো
রিদপুরের বন্যার্তদের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বাড়ি ফিরছেন গ্রামবাসী। গতকাল সকালে ফরিদপুরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গদাধরডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। ছবি: প্রথম আলো

‘পদ্মা নদীর পাড়ে বসবাস। নদীতে পানি বাড়লে সবার আগে আমরা ডুবি। ১৮–২০ দিন ধইরা পানিতে ডুইবা আছি। সাহায্য দেওয়া তো দূরের কথা, এত দিন কেউ আইসা একটু খোঁজ পর্যন্ত নেয় নাই।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া ত্রাণ নিতে এসে কথাগুলো বললেন নাসিমা বেগম (৪৬)। ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গদাধরডাঙ্গী এলাকায় তাঁর বাড়ি। তাঁর স্বামী লিটন মোল্লা (৫২) অন্যের জমিতে চাষাবাদ করেন। পানিতে জমি তলিয়ে গেছে, তিনি এখন বেকার।

নাসিমা বেগমসহ বন্যাদুর্গত ১০০ জনকে গতকাল শনিবার প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়। ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গদাধরডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ত্রাণ বিতরণের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আকতারুজ্জামান।

পানিতে বাড়ি ডুবে যাওয়ায় বৃদ্ধ হাকিম মণ্ডলের (৭০) আশ্রয় এখন সাদীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে। বাদাম বিক্রি করে তাঁর সংসার চলে। তিনি বলেন, ‘আমরা বুড়া-বুড়ি মানুষ। প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ পাইলাম। আইজ পেট ভইরা ভাত খাইতে পারব। আগামী কয়েক দিন ক্ষুধার জ্বালা থাকবে না।’

এদিকে গত শুক্রবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর ও খাসের চরের ১৫০ পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছে প্রথম আলো ট্রাস্ট।

নৌকাযোগে চর যাত্রাপুরে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে পানি আর পানি। কোথাও এতটুকু শুকনা জায়গা নেই। গ্রামের অধিকাংশ পরিবার কোথাও না কোথাও নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে গেছে। অনেক পরিবার নৌকায় বসবাস করছে। কেউ আবার
ঘরের চৌকি উঁচু করে নিজ ভিটায় কোনোমতে থাকছেন। এসব দুর্গত মানুষের কাছে গিয়ে ত্রাণসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

খাদ্যসহায়তা পেয়ে জয়নাল আবেদিন বললেন, ‘বন্যার শুরুতে একবার সাহায্য পাইছিলাম। এয়্যার পর তোমরাই দিলেন। হামরা গরিব মানুষ। দিনমজুরি করি খাই। পানিত থাকতে থাকতে হাত খালি। কিছু কিনি খাম, সে উপায় নাই। খুব উপকার হইলো বাহে।’ পরে খাসের চরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার অবস্থা আরও খারাপ। বন্যাদুর্গত অনেকে একটি উঁচু জায়গায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাদাগাদি করে থাকছে। অন্যরা নৌকায় এবং মাচা বানিয়ে বসবাস করছে।

ফরিদপুর ও কুড়িগ্রামে ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করেছেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল

হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪

ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা