দুর্গম চর থেকে অস্ত্রসহ ৪ জেএমবি সদস্য আটক

ডান থেকে ফারুক ওরফে সাজু, আবদুল হাকিম ওরফে মিলন, মো. আজাহারুল ইসলাম ওরফে ওয়ানুর ও আকরামুজ্জামান ওরফে মুকুল। বগুড়া গোয়েন্দা কার্যালয়, ৩০ জুলাই। ছবি: সোয়েল রানা
ডান থেকে ফারুক ওরফে সাজু, আবদুল হাকিম ওরফে মিলন, মো. আজাহারুল ইসলাম ওরফে ওয়ানুর ও আকরামুজ্জামান ওরফে মুকুল। বগুড়া গোয়েন্দা কার্যালয়, ৩০ জুলাই। ছবি: সোয়েল রানা

তিনটি বিদেশি অস্ত্র, ১৫টি গুলিসহ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সন্দেহভাজন চার সদস্যকে আটক করা হয়েছে। গতকাল রোববার তাঁদের আটক করা হলেও আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা।

গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রংপুরের গঙ্গাচড়া এলাকার চড় বাগডাহড়া থেকে তাঁদের আটক করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাথা (ডিবি) যৌথভাবে এ অভিযান চালায়। রংপুর ও লালমনিরহাট জেলা পুলিশ তাদের সহযোগিতা করে।

আটক করা চারজন হলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া এলাকার কুড়িবিশ্বা দোলাপাড়ার মো. আজহারুল ইসলাম ওরফে ওয়ানুর (৩২), একই থানার চড় বাগডাহড়া গ্রামের মো. আকরামুজ্জামান ওরফে মুকুল (২৬), মো. ফারুক ওরফে সাজু (২২) ও মো. আবদুল হাকিম ওরফে মিলন (২৪)।

পুলিশ জানায়, আজহারুল রংপুর জেলা দাওয়াহ বিভাগের প্রধান, আকরামুজ্জামান রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া থানার দাওয়াহ বিভাগের প্রধান এবং ফারুক ও হাকিম রংপুর জেলার ইছাবা (সামরিক) সদস্য।

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলি। ছবি: সোয়েল রানা
উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলি। ছবি: সোয়েল রানা

অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা নিজ দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, গতকাল দুপুরে রংপুরের গঙ্গাচড়া থানার দুর্গম চর বাগডাহড়ায় ফারুকের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে চার জেএমবি সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি একে-২২ বোর রাইফেল ও একটি একে বোর রাইফেলের ম্যাগাজিন, দুটি বিদেশি ৭.৬৫ পিস্তল ও তিনটি ম্যাগাজিন, একে বোর রাইফেলের ১৫টি গুলি, দুটি বর্মিজ চাকু ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এই অস্ত্রগুলো তাঁরা ‘ওপরের প্রধানদের’ কাছ থেকে পেয়েছেন।

আটক করা ব্যক্তিদের তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ বলেন, অভিযানের আগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান পুরোনো জেএমবির বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক মো. খোরশেদ আলম ওরফে মাস্টার ওরফে জিয়া ওরফে শামিল ওরফে উদয় (৩৮), পুরোনো জেএমবির রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দাওয়াহ বিভাগের প্রধান মো. শহিদুল্লাহ ওরফে ইয়ামিন ওরফে গোলাপ ওরফে নাদিদ (৪৫), পুরোনো জেএমবির রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সামরিক প্রধান মো. নূর হক ওরফে ওমর ওরফে ওসমান (৩০) এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দাওয়াহ শাখার প্রধান হাদী (৩৮)।

পুলিশের ভাষ্য, চড় বাগডাহড়া এলাকায় প্রায় এক বছর ধরে তাঁরা অবস্থান করছিলেন। এ সময়ের মধ্যে জেএমবির সুরা সদস্যরা একাধিক বৈঠক করেছেন। অদূর ভবিষ্যতে ওই স্থানে জেএমবি সদস্যদের প্রশিক্ষণ শিবির ও নিরাপদ হাইড আউট তৈরির পরিকল্পনা করছিল। এখান থেকে তাঁরা রংপুর বিভাগের একটি থানার একজন চেয়ারম্যানকে হত্যার পরিকল্পনাও করছিলেন।

এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় পুলিশ।