ছুটির দিনে বইপ্রেমীদের ভিড়

চট্টগ্রাম নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে একুশের বইমেলার একটি স্টলে দর্শনার্থীরা। গতকাল বিকেলে তোলা ছবি l প্রথম আলো
চট্টগ্রাম নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে একুশের বইমেলার একটি স্টলে দর্শনার্থীরা। গতকাল বিকেলে তোলা ছবি l প্রথম আলো

চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাঈদ বিন আকতার। গোয়েন্দা কাহিনির ভক্ত সে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে একুশে বইমেলায় গোয়েন্দা বইয়ের খোঁজে ঘুরতে দেখা গেল তাকে। সঙ্গে আসা মা-বাবা আর ছোট ভাইও নিজ নিজ পছন্দের বই খুঁজছিলেন।
সাঈদ বলল, মা-বাবা তাকে গল্পের বই পড়তে উৎসাহ দেন। সে কারণে ছুটির দিনে বাসার সবাই মেলায় চলে এসেছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে চলছে ১১ দিনব্যাপী একুশের বইমেলা। গতকাল ছুটির দিন থাকায় মেলায় বইপ্রেমীদের ভিড় অন্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। বইমেলায় স্টল রয়েছে ৫০টি। চট্টগ্রাম ছাড়াও ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে। মেলায় রয়েছে আড্ডা কর্নারও।
গতবারের মতো এবারও চট্টগ্রামের বইমেলায় অংশ নিচ্ছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘প্রথমা’। ঢাকার একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত ৬০টি নতুন বই পাওয়া যাচ্ছে চট্টগ্রামের প্রথমার স্টলেও। প্রথমা প্রকাশনের বিক্রয় প্রতিনিধি মো. সোহেল হাসান বলেন, শিশু-কিশোরদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছেন লেখক রকিব হাসান। বড়রা উপন্যাসের পাশাপাশি রাজনীতিবিষয়ক বইগুলো বেশি পছন্দ করছেন।
নক্ষত্র প্রকাশনী নামের একটি স্টলের উদ্যোক্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শিশুদের কার্টুন ও কমিক বইগুলো বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।
দুই সন্তান ও ভাইয়ের মেয়েকে নিয়ে মেলায় গতকাল বই কিনতে আসেন কলেজশিক্ষক অজিত কুমার ধর। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই বইমেলায় আসি। বিশেষ করে বাচ্চারা বইমেলায় আসতে খুব পছন্দ করে।’
অবশ্য অনেক স্টলের বিক্রেতারাই কাঙ্ক্ষিত পাঠক-ক্রেতার সমাবেশ হয়নি বলে হতাশা প্রকাশ করেন। একজন বিক্রয়কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, বইমেলার আয়োজন করলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তেমন কোনো প্রচারের ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে অমর একুশে বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা নাজিয়া শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, প্রচার কম এ কথা ঠিক না। সবাই এই বইমেলাটির কথা জানেন। তবে খুব একটা জাঁকজমকপূর্ণ করা যায়নি এবার। আগামী বইমেলা আরও বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বইমেলার আয়োজনে সহযোগিতা করেছে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ। এই পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম বলেন, মেলা আয়োজনে সিটি করপোরেশনের আন্তরিকতার অভাব ছিল না। কিন্তু সব পাঠকের কাছে মেলাটি পৌঁছানো যায়নি এবার। ভবিষ্যতে চট্টগ্রামেও ঢাকার মতো জমজমাট বইমেলা হবে।
ছুটির দিনে মেলা বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ও অন্যান্য দিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলে। মেলা শুরু হয়েছে ১৮ ফেব্রুয়ারি, চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।