টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে তালিকাভুক্ত হুন্ডি ব্যবসায়ী নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ইয়াসিন আরাফাত আহমদ (২৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। তিনি টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার লামারবাজার এলাকার বাসিন্দা।

গতকাল সোমবার গভীররাতে টেকনাফ সদর ইউনয়নের হাবিরছড়ার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের দাবি, নিহত ইয়াসিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত হুন্ডি ও ইয়াবা ব্যবসায়ী ছিলেন। ওই দুটি তালিকায় তাঁর বাবা আবদুল জলিল ও তাঁর বড় ভাই মোহাম্মদ ইসমাইলের নামও আছে। ইয়াসিনের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকসহ পাঁচটি মামলা আছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা, দেশে তৈরি দুটি অস্ত্র (এলজি), নয়টি তাজা কার্তুজ ও ১৫টি গুলির খালি খোসা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সঞ্জীব দত্ত ও কনস্টেবল আবদুস শুক্কুর গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

তবে পরিবারে দাবি, ইয়াসিনকে গতকাল দুপুরে আটক করা হয়েছিল। তবে রাতে বন্দুকযুদ্ধ দেখিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, গতকাল দুপুরে টেকনাফ পৌরসভার লামারবাজার মদিনা টাওয়ার থেকে ইয়াবাসহ ইয়াসিন আরাফাত আহমদকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া পাহাড়ি এলাকার একটি ঘরে ইয়াবা ও অস্ত্র মজুতের স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়। গতকাল গভীররাতে তাঁকে নিয়ে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তাঁর সঙ্গীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়তে থাকেন। এতে এসআই বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া, এএসআই সঞ্জীব দত্ত ও কনস্টেবল আবদুস শুক্কুর গুলিবিদ্ধ হলে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে মাদক ও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা পিছু হটলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইয়াসিনকে উদ্ধার করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইয়াসিন ও তিন পুলিশ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসিফ আলভী বলেন, গুলিবিদ্ধ ইয়াসিন ও তিনজন পুলিশ সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ইয়াসিনের শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।

পরে ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, কক্সবাজার নেওয়ার পথে ইয়াসিন মারা যান। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়াধীন।

গত বছরের ৪ মে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কক্সবাজার জেলায় ৬৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফেই নিহত হয়েছেন ৪৬ জন।