নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য দক্ষ নার্স ও মিডওয়াইফ দরকার

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন হোসেন জিল্লুর রহমান। পাশে তন্দ্রা শিকদার। গতকাল কারওয়ান বাজার সিএ ভবনে।  ছবি: প্রথম আলো
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন হোসেন জিল্লুর রহমান। পাশে তন্দ্রা শিকদার। গতকাল কারওয়ান বাজার সিএ ভবনে। ছবি: প্রথম আলো

নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে গত কয়েক বছরে সাফল্য এলেও এখনো অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। চিকিৎসকের বিপরীতে নার্সের সংখ্যা কম। প্রয়োজনের তুলনায় মিডওয়াইফও (প্রশিক্ষিত ধাত্রী) কম। কিন্তু মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমাতে তাঁদের ভূমিকা অপরিহার্য। দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত নার্স-মিডওয়াইফ তৈরিতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও কর্মপরিবেশ জরুরি।

গতকাল শনিবার দুপুরে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি: অগ্রগতি এবং সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্টজনদের আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সহযোগিতায় এ বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের এক্সিকিউটিভ চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমান ও প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।

দক্ষ-প্রশিক্ষিত নার্স ও মিডওয়াইফ তৈরি করতে পারলে স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি যেমন হবে, তেমনি বিদেশে তাঁদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা যাবে বলে জানান হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, নার্স ও মিডওয়াইফ পেশা তরুণীদের কাজের একটি বড় ক্ষেত্র হতে পারে।

বৈঠকে জানানো হয়, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ৭০ জনে নামিয়ে আনতে হবে। বর্তমানে মাতৃমৃত্যুর হার লাখে ১৭২ জন।

স্বাস্থ্য খাতে প্রতিবছর তিন হাজার করে নার্স যোগ হচ্ছে বলে জানান নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তন্দ্রা শিকদার। তিনি বলেন, নার্সিংয়ের পাঠ্যক্রম (কারিকুলাম) যুগোপযোগী করা হচ্ছে। তবে অবকাঠামো এবং দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতি রয়ে গেছে।

বৈঠকে জানানো হয়, একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে আছেন একজনেরও কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ দেশীয় প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা বলেন, মিডওয়াইফের সংখ্যা বাড়াতে সরকার যে নীতি নিয়েছে, তা ইতিবাচক। কিন্তু রোগীকে সেবা দেওয়ার থেকে তাঁরা প্রশাসনিক কাজ বা ফাইলপত্র ব্যবস্থাপনায় বেশি ব্যস্ত থাকে। মাতৃমৃত্যু রোধে এবং এসডিজি অর্জনে তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে। দক্ষতার বৃদ্ধিতেও নজরদারি করতে হবে।

নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন ইউএনএফপিএর (জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল) এ দেশীয় প্রতিনিধি অসা টর্কেলসন। তিনি বলেন, নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসবের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।