'মানবতার ঘর' থেকে নতুন কাপড় পেল ওরা

দীঘিনালার ‘মানবতার ঘর’ থেকে গতকাল মঙ্গলবার ১০০ দরিদ্র, দুস্থ শিশু, নারী ও পুরুষের হাতে ঈদের নতুন কাপড় তুলে দেওয়া হয়। ছবি: প্রথম আলো
দীঘিনালার ‘মানবতার ঘর’ থেকে গতকাল মঙ্গলবার ১০০ দরিদ্র, দুস্থ শিশু, নারী ও পুরুষের হাতে ঈদের নতুন কাপড় তুলে দেওয়া হয়। ছবি: প্রথম আলো

‘আপনার দেওয়া বা রেখে যাওয়া একটি কাপড় হাসি ফোটাবে একটি অতি দরিদ্র পরিবারে। আপনার দেওয়া বা রেখে যাওয়া একটি বই ছড়িয়ে দেবে জ্ঞানের আলো’—এ স্লোগান নিয়ে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ‘মানবতার ঘর’ থেকে গতকাল মঙ্গলবার ১০০ দরিদ্র, দুস্থ শিশু, নারী ও পুরুষের হাতে ঈদের নতুন কাপড় তুলে দেওয়া হয়। দীঘিনালা যুব রেড ক্রিসেন্টের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় দরিদ্র পরিবারের ঘরে ঘরে গিয়ে নতুন কাপড় পৌঁছে দেন।

গতকাল সকালে দেখা গেল, উপজেলার দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের নিচে সড়কের পাশে স্থাপিত মানবতার ঘরের সামনে নতুন কাপড় হাতে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে শিশুরা। এদের মধ্যে আছে জাহাঙ্গীর হোসেন (১২)। মোটরসাইকেলের গ্যারেজে কাজ শেখে জাহাঙ্গীর। সে বলছিল, ‘ঈদে নতুন জামা কিনতে পারিনি। মানবতার ঘরের বড় ভাইয়েরা বাজারের দোকানে নিয়ে আমাকে শার্ট, প্যান্ট কিনে দিয়েছে। আমার খুব খুশি লাগছে।’

শিশু ইলিয়াছ বলল, ‘আমরা ৩০ জন নতুন কাপড় পেয়েছি। আমরা সবই খুশি।’

‘মানবতার ঘর’ থেকে সহায়তা পাওয়ার তালিকায় শুধু শিশুরাই নেই। বয়স্ক নারী ও পুরুষেরাও আছেন।

দীঘিনালার দক্ষিণ মিলনপুর গ্রামের জুলেখা বেগম (৬৫) বলেন, ‘রেড ক্রিসেন্টের সদস্য বাড়িতে এসে আমাকে একটি নতুন শাড়ি দিয়ে গেছেন।’

আলীনগর গ্রামের দুলাল মিয়া (৮০) বলেন, ‘আমি একটি নতুন পাঞ্জাবি পেয়েছি।’ মধ্য বেছড়ি এলাকার হনফা বেওয়া (৬০), বেতছড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার কমলা বেগমসহ (৩০) নতুন কাপড় পাওয়া দরিদ্র পরিবারের লোকজন জানান, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নতুন শাড়ি, লুঙ্গি, শিশুদের জন্য কাপড় পৌঁছে দেওয়ায় তাঁরা অনেক খুশি।

যুব রেড ক্রিসেন্টের যেসব সদস্য এই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে আছেন সদস্য রাফি পাটোয়ারি, আল আমিন, আমিনুল ইসলাম। তাঁরা প্রথম আলোকে জানান, যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা টাকা সংগ্রহ করে তাঁদের প্রতিষ্ঠিত মানবতার ঘর থেকে ১০০ গরিব, দুস্থ শিশু, নারী ও পুরুষের মধ্যে ঈদের নতুন কাপড় তুলে দিয়েছেন। শিশুদের বাজারে দোকানে এনে তাদের পছন্দমতো শার্ট, প্যান্ট কিনে দেওয়া হয়েছে।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, মানবতার ঘরের মাধ্যমে যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা যে দরিদ্র শিশু, নারী ও পুরুষদের ঈদের নতুন কাপড় তুলে দিয়েছেন, তা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সমাজের বিত্তবানদের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যকারী সদস্য মোহাম্মদ কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেড ক্রিসেন্ট সব সময় মানবতার সেবায় স্বেচ্ছায় কাজ করে। দীঘিনালার যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা সব সময় স্বার্থহীনভাবে মানবতার সেবায় কাজ করে থাকে। শুধু ঈদে গরিব, দুস্থদের মাঝে নতুন কাপড় বিতরণ নয়, তাঁদের মানবিক সেবার অনেক দৃষ্টান্ত আছে।’