তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল এক সপ্তাহ ধরে ব্যাহত হচ্ছে। পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে ১৭টি ফেরির মধ্যে মাত্র ৯টি নিয়মিত চলাচল করছে। সেগুলোও পারাপারে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ সময় নিচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসির ঘাট কার্যালয় সূত্র জানায়, ৮ কিলোমিটারের এই নৌপথ স্বাভাবিক সময়ে ১টা ফেরি ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটে পাড়ি দিতে পারে। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে এখন সময় লাগছে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। আর স্রোত বেড়ে যাওয়ায় টানা ফেরিগুলোচলতেই পারছে না। এ ঘাটে এমন ফেরি আছে ৮টি।

কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের সহব্যবস্থাপক আবদুল মমিন প্রথম আলোকে বলেন, ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এখন যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে অন্য ট্রাকগুলোকে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে ১টি ফেরি প্রতিদিন ৮-১০ বার চলাচল করতে পারত। কিন্তু নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে এখন মাত্র ৩-৪ বার চলাচল করছে। আর স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়া টানা ফেরিগুলোকে ঘাট এলাকায় নোঙর করে রাখা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাক পার্কিং এলাকায় কয়েক শ ট্রাক সারিবদ্ধভাবে থেমে আছে। এ ছাড়া পারাপারের জন্য সিরিয়ালে আছে আরও শতাধিক ট্রাক। যানজট কিছুটা কমাতে পুরোনো কাওরাকান্দি ফেরিঘাটেও ট্রাকসহ ছোট-বড় ২ শতাধিক যানবাহন রাখা হয়েছে। অনেক ট্রাকে কাঁচামালও রয়েছে। ঘাট এলাকায় দীর্ঘ সময় আটকা পড়ে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাকের চালক মনসুর আলম বলেন, তিনি ১১ জুলাই ঘাটে এসেছেন। এখনো পার হতে পারেননি। আরও কত দিন লাগবে কেউ বলতে পারে না। ট্রাকের মধ্যে কাঁচামাল রয়েছে। কয়েক লাখ টাকার এ পণ্য পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

খুলনা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি ট্রাকের চালক আবদুর রশিদ মোল্লাও ঘাটে আটকা রয়েছেন পাঁচ দিন। প্রতিদিন তিন বেলা খাবার কিনে খেতে গিয়ে তাঁর পকেট ফাঁকা হয়ে গেছে। কারণ, ঘাট এলাকায় ৫ টাকার জিনিস ১০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়।

কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকার দায়িত্বে থাকা পুলিশের পরিদর্শক উত্তম শর্মা বলেন, ‘ঘাটে যেন যানজটের সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আমরা যানবাহনগুলো সারিবদ্ধভাবে রেখেছি। এ জন্য পুরোনো কাওরাকান্দি ফেরিঘাটেও অনেক যানবাহন রাখা হয়েছে। তবে শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করি।’