সম্রাট ১০ দিনের রিমান্ডে

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে বেলা ১১ টা ৪৫ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে সম্রাট ও আরমানকে প্রিজনভ্যানে করে ঢাকার আদালতে আনা হয়। রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়। এরপর বেলা পৌনে একটায় সম্রাট ও আরমানকে আদালতের এজলাস কক্ষে তোলা হয়। রাখা হয় লোহার তৈরি আসামির কাঠগড়ায়। দুজনের হাতেই ছিল হাতকড়া। সম্রাটের হাতে পরানো হাতকড়া খুলে দিতে আদালতের কাছে আবেদন করেন সম্রাটের আইনজীবীরা।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি আব্দুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, আসামি সম্রাটের দেখানো মতে তাঁর অফিস থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য আসামি সম্রাটকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

রিমান্ড শুনানির জন্য ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে আজ ঢাকার আদালতে আনা হয়। ঢাকা, ১৫ অক্টোবর। ছবি: তানভীর আহম্মেদ
রিমান্ড শুনানির জন্য ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে আজ ঢাকার আদালতে আনা হয়। ঢাকা, ১৫ অক্টোবর। ছবি: তানভীর আহম্মেদ

অপরদিকে সম্রাটের আইনজীবী মাহমুদা আক্তারসহ কয়েকজন আইনজীবী আদালতের কাছে দাবি করেন, সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যসব অভিযানে তল্লাশি করার সময় গণমাধ্যম কর্মীদের থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু সম্রাটের ঘটনায় গণমাধ্যমকর্মীদের তল্লাশির সময় থাকতে দেওয়া হয়নি। সম্রাটের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।

মাহমুদা আক্তার আদালতের কাছে দাবি করেন, সম্রাট অসুস্থ। তার হার্ট সার্জারি করা রয়েছে। ভাল্বের সমস্যা আছে। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। সম্রাটের জনপ্রিয়তার কারণেই তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করা হয়েছে। আমরা সরকারি দলে আছি না বিরোধী দলে আছি তা বুঝতে পারছি না।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে সম্রাটকে রমনা থানার দুই মামলায় পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন। আরেকটি মামলায় আরমানকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন আদালত। গত ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তাঁর এক সহযোগী যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে তাঁদের ঢাকায় আনা হয়।

এরপর র‌্যাব সম্রাটকে নিয়ে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সম্রাটের কার্যালয়ে ক্যাঙারুর দুটি চামড়া, মাদকদ্রব্য, অস্ত্র পাওয়া যায়। এ ঘটনায় র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত সেদিন তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। আটকের সময় মদ্যপ থাকায় সম্রাট ও আরমানকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ঘটনায় র‍্যাব বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করে। সেই মামলায় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। একই সঙ্গে সম্রাটকে দুই মামলায় ২০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আজ এই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এ ছাড়া সম্রাটের সহযোগী ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে রমনা থানার মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দেন আদালত। তাকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।