সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেষ্টা হয়েছে: পাশা

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন শুরু হয়। মঞ্চ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। এ পরিস্থিতিতে প্রথম আলোর মুখোমুখি হয়েছেন দুই অংশের দুই প্রতিনিধি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রিয়াদুল করিম ও আসিফুর রহমান

কামাল পাশা চৌধুরী
কামাল পাশা চৌধুরী

প্রথম আলো: গণজাগরণ মঞ্চের বিভক্তির মূল কারণ কী?
কামাল পাশা চৌধুরী: বিভক্তির মূল কারণ আদর্শিক। একটা সময় দেখলাম অনেক কাজই হচ্ছে, যেটা আমরা অনেকেই জানি না। অনেককে পরিকল্পিত-ভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর দেখা গেল, অন্য জায়গা থেকে সিদ্ধান্তগুলো আসত। যেদিন জাতীয় সংসদে আপিলের সমান সুযোগ রেখে ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধন করা হলো, সেদিনই চেয়েছিলাম সমাবেশটাকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে ফেলতে। কিন্তু এটাকে দীর্ঘায়িত করা হলো।
প্রথম আলো: আপনি কি বলতে চাচ্ছেন, ইমরান এইচ সরকার আদর্শ থেকে সরে যাচ্ছে বা অন্য কোনো আদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে?
কামাল পাশা: এই মুহূর্তে এসে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে তাই। এটা বাস্তব, কোনো না কোনোভাবে এটাকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিয়ে যাওয়ার জন্য এখানে একটা মহল চেষ্টা করেছে। আমরা মনে করি, এখন এটা আরও জোরালোভাবে হচ্ছে।
প্রথম আলো: কখন থেকে মনে হচ্ছে এটা সরকারবিরোধী আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে?
কামাল পাশা: প্রথম যখন জাগরণ মঞ্চ হরতাল ডাকল। দাবি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বাস্তবায়নের জন্য সংসদে আলোচনা হচ্ছে। তার পরও ইনটেনশনালি হরতাল দিতে হবে, আমরা সেটি মনে করিনি।
প্রথম আলো: আপনারা তো শুরু থেকেই ইমরান এইচ সরকারের সঙ্গে ছিলেন, নানাভাবে সমর্থন-সহযোগিতা দিয়েছিলেন। এখন কেন বিরোধিতা করছেন?
কামাল পাশা: বিষয়টা ধীরে ধীরে হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো চলে যাচ্ছিল যতটা না যুদ্ধাপরাধী বিচারের দাবি, তার চেয়ে বেশি সরকারের বিপক্ষে। সরকার এ রকম কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বা পিছু হটেনি, যার কারণে এই আন্দোলনটা সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিয়ে যেতে হবে। আমরা যা করি এই সরকারকে দিয়েই করাতে হবে।
প্রথম আলো: অভিযোগ উঠেছে সরকার ও ছাত্রলীগের উৎসাহে আপনারা এই বিরোধিতা করছেন।
কামাল পাশা: উদ্দেশ্যমূলকভাবে কথাগুলো বলা হচ্ছে। তাদের ইনটেনশন (উদ্দেশ্য) সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিয়ে যাওয়া। বর্তমানে ইমরানসহ তার সঙ্গে যারা আছে, তারা এসব বলে অক্ষমতাটাকে লুকাতে চাচ্ছে।
প্রথম আলো: ইমরান এইচ সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ করেছেন। এর ভিত্তি কী?
কামাল পাশা: আর্থিক অস্বচ্ছতার বিষয়ে আমরা অভিযোগ করিনি। বলেছি, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে আমার হাতে কোনো প্রমাণ নেই।
প্রথম আলো: ইমরানকে কোন ক্ষমতাবলে অব্যাহতি দিলেন?
কামাল পাশা: আমরা যারা সেই সময় সংগঠিত হয়ে ডাক দিয়েছিলাম, ইমরান এইচ সরকারকে মুখপাত্র বানিয়েছিলাম। সে যেভাবে মুখপাত্র নির্বাচিত হয়েছে, আমরা মনে করি, তাকে বাদ দেওয়ার সেটাই ওয়ে। শুরু থেকেই আমরা যারা ছিলাম, তারা কয়েকজন মনে করেছি, আন্দোলনটাকে এগিয়ে নিতে নেতৃত্বে পরিবর্তন প্রয়োজন।
প্রথম আলো: আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
কামাল পাশা: ছয়টা দাবির মধ্যে অনেকটা বাস্তবায়িত হয়েছে। বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করাসহ অন্যান্য দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।