'বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি'

প্রথম আলো কার্যালয়ে নির্মলা রাও। ছবি: সুমন ইউসুফ
প্রথম আলো কার্যালয়ে নির্মলা রাও। ছবি: সুমন ইউসুফ
সমাজের পিছিয়ে পড়া, অনগ্রসর ও যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের মেধাবী নারীদের উচ্চশিক্ষা ও ক্ষমতায়নে কাজ করছে চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ)। এটি বাংলাদেশের একমাত্র স্বায়ত্তশাসিত আন্তর্জাতিক নারী বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটেনের সাবেক ফার্স্ট লেডি চেরি ব্লেয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির চ্যান্সেলর। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৮ টি দেশের মোট ৭০০ শিক্ষার্থী এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। কলম্বিয়া, হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, স্ট্যানফোর্ড বা ইউরোপের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাসহ এখানে পূর্ণকালীন শিক্ষক আছেন মোট ৬৭ জন। সম্প্রতি ঢাকার প্রথম আলো কার্যালয়ে এসেছিলেন এইউডব্লিউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নির্মলা রাও। এ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা, কাজের অভিজ্ঞতা, সুবিধাবঞ্চিত নারীদের এগিয়ে যাওয়ার গল্পসহ বিভিন্ন কথা উঠে আসে আলাপচারিতায়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌহিদা শিরোপা

এইউডব্লিউয়ের মূল শক্তি কী?

বিশ্বের ১৮টি দেশ থেকে ৮০০ ছাত্রী এখন এখানে পড়ছে। এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ ও নানা সমস্যার কারণে পিছিয়ে পড়া নারীদের পড়ালেখা পুরোপুরিভাবে চালিয়ে নিতে কাজ করছে এইউডব্লিউ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী এসেছে মিয়ানমার, সিরিয়া, ইয়েমেন ও বিভিন্ন দেশের যুদ্ধের শরণার্থী শিবির থেকে। সম্প্রতি এইউডব্লিউ সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের পোশাক কারখানা থেকে নারী পোশাকশ্রমিক ও ভারতের আসাম এবং শ্রীলঙ্কার চা-বাগান এলাকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মেয়েরাও এসেছে। এ বছর মাদ্রাসা থেকেও শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়েছি আমরা।
উচ্চমাধ্যমিক পেরোনো এই মেয়েদের আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মতো করে তৈরি করে নিই। যাতে তারা উচ্চশিক্ষা লাভ করে ভবিষ্যতে ব্যবস্থাপক ও পরিদর্শক হিসেবে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে পারে। কারণ সেসব দেশে গৃহযুদ্ধের কারণে পড়ালেখার সুযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে এইউডব্লিউয়ের নিয়ম অনুযায়ী মোট ভর্তি নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৫ শতাংশ অবশ্যই বাংলাদেশের হতে হবে।

এইউডব্লিউ নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
এইউডব্লিউ ডটারস ফর লাইফ ফাউন্ডেশন, স্পার্ক অব হোপ ফাউন্ডেশনের মতো বিভিন্ন স্থানীয় সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের পার্টনার। এ প্রতিষ্ঠানগুলো সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ইরাক ও ইয়েমেনের উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ করে দিতে সাহায্য করে। এইউডব্লিউ বৃত্তি দিয়ে সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে এখানে ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত, যুদ্ধের কারণে এগোতে পারছে না সেসব জায়গার মেধাবী মেয়েরা। এই অল্প বয়সী নারীদের আমরা উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে চাই। এ ধরনের কাজ আমরা এখন করছি, ভবিষ্যতে আরও বেশি করে এর পেছনে সময় দিতে চাই। বর্তমানে এটাই আমাদের পরিকল্পনা। তার মানে এই নয় যে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কথা ভুলে যাচ্ছি। তারাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বুঝতে পেরেছি, প্রান্তিক জনপদের শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিলে তারা ভালো করে। আর এই নারী নেতৃত্ব একদিন লিঙ্গ সমতার সূচকে পরিবর্তন আনবে। তাদের নিজ জনপদের টেকসই উন্নয়ন হলে প্রান্তিকদের জীবনযাত্রার মানের উন্নতিও হবে।
আমাদের নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ক্যাম্পাস তৈরির জন্য বর্তমানে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছি। বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ে এশিয়ান স্টাডিজ, বায়োলজিক্যাল সায়েন্স, পরিবেশবিজ্ঞান, রাজনীতি, দর্শন, অর্থনীতি এবং জনস্বাস্থ্য স্টাডিজ বিভাগে চার বছর মেয়াদি কোর্স আছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন বিষয় যুক্ত করে, ২০২১ সালের মধ্যে ৮০০ থেকে ৩ হাজার শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান করতে চাই। জনস্বাস্থ্য, পরিবেশবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিভাগকে আরও শক্তিশালী করতে চাই। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, আমাদের লক্ষ্য: ১. শিক্ষা (স্কুল অব এডুকেশন) ২. নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা ৩. পরিবেশ, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা বিষয়ে নতুন স্কুল (ফ্যাকাল্টি) তৈরি করা। স্কুল অব এডুকেশন প্রতিষ্ঠা হলে বিশ্বের নামকরা শিক্ষকেরা এসে এখানে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। কারণ উন্নত শিক্ষাদানের জন্য সেই মানের শিক্ষকের সংখ্যা অনেক কম এখানে।
কোনো দেশের সবচেয়ে অবহেলিতদের মধ্যে মেধাবীদের খুঁজে বের করা এবং তাদের উচ্চমানের শিক্ষা লাভের সুযোগ করে দেওয়াকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কেননা, অসমতা ও দারিদ্র্য যেমন শিক্ষা লাভের মৌলিক বাধা, তেমনি নারীর ক্ষমতায়ন ও মানবিক উন্নয়নেরও প্রতিবন্ধক।
এটিও বলতে চাই, আমাদের এখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণের শিক্ষার্থী পড়ছে, যারা সুবিধাভোগী, সচ্ছল পরিবার থেকে এসেছে। আমরা চাই, এই শিক্ষার্থীরা সুবিধাবঞ্চিত, প্রান্তিক ও সংকটের মধ্যে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশুক, একসঙ্গে থাকুক, লেখাপড়া করুক। এতে তাদের মধ্যে সহমর্মী মনোভাব তৈরি হবে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সমাজের সুবিধাভোগী, সচ্ছল পরিবারের মেয়েদেরও এখানে ভর্তি করাতে চাই। স্নাতকোত্তরসহ আরও উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে চাই। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আরও বেশি শিক্ষার্থীকে সুযোগ দিতে চাই।
আসল কথা হলো, বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি। এটা সত্যিই আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, উদ্যাপন করতে চাই।

এইউডব্লিউ কেন সমাজের অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর মেয়েদের এগিয়ে দিতে কাজ করছে?
এইউডব্লিউ বিশ্বাস করে, কোনো জনগোষ্ঠীর একচেটিয়া সুযোগ থাকা উচিত নয়। এই কঠিন বিশ্বাসের জন্য এইউডব্লিউ শিক্ষা খাতে সমতা আনার জন্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর মেয়েদের ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। আমরা বুঝতে পেরেছি, নারীকে ক্ষমতায়িত করলে তার মাধ্যমে তাঁর পরিবার ও স্থানীয় জনগণ, এমনকি ওই ভৌগোলিক এলাকার সবচেয়ে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ঘটে।
শুধু তা-ই নয়, এইউডব্লিউ নারী নেতৃত্বদানের ক্ষমতা তৈরির করার জন্য তাকে উন্নত শিক্ষা দেয়। দেশ-বিদেশে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। পড়াশোনা শেষে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের আমরা নানা রকম বৃত্তি দিয়ে থাকি। যাতে তারা পড়াশোনা নিশ্চিন্তে শেষ করতে পারে। সফলভাবে কর্মজীবন শুরু করতে পারে।

যারা অনগ্রসর গোষ্ঠী থেকে আসে, তাদের কীভাবে প্রস্তুত করেন?
অনগ্রসরদের জন্য আমাদের অ্যাকসেস একাডেমি আছে। এটি এক বছরব্যাপী প্রাক্-স্নাতক প্রোগ্রাম, যারা ইংরেজি, গণিত বা কম্পিউটারে দুর্বল তাদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
পোশাক কারখানা, চা-বাগান বা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর যারা এখানে ভর্তির সুযোগ পায়, তাদেরকে দুই বছরের প্রাক্-স্নাতক প্রোগ্রামের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা ও এখানকার পরিবেশের জন্য প্রস্তুত করা হয়। এখানে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহানুভূতিশীল হতে শেখানো হয়।

এইউডব্লিউয়ের শিক্ষার্থীরা অন্যদের থেকে আলাদা কেন?
তারা বিভিন্ন দেশ, সমাজের নানা স্তর থেকে আসে। এখানে আসার পর তারা জীবনকে অন্যভাবে ভাবতে শেখে। জীবনের দর্শন গভীরভাবে বুঝতে শেখে, প্রশ্ন করতে শেখে, সমস্যার সমাধান করতে জানে। এখানে গড়পড়তা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষকেরা শুধু লেকচার দিয়ে চলে যান না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। শিক্ষার্থীর নিজের উন্নয়নের দিকে বেশি জোর দেওয়া হয়। যেন শিক্ষার্থীরা যেকোনো পরিবেশে গিয়ে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে পারে। আত্মরক্ষার জন্য কারাতেও শেখানো হয়। বৈচিত্র্যতার মধ্যে শিক্ষালাভ করে বলে তারা অন্যদের থেকে আলাদা। একটা তথ্য যুক্ত করতে চাই, আফগানিস্তানের ১৫০-এর বেশি মেয়ে যারা এখান থেকে স্নাতক পাস করেছে, তাদের পরিবারে সেই মেয়েটিই প্রথম মাধ্যমিক পাস। তবে অন্যান্য দেশের মেয়েরা পরিবারের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়ে হিসেবে স্নাতক পাস করেছে।

সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ কী মনে হয়েছে?
এটি যেহেতু নিবন্ধনকৃত দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়; আবাসন সুবিধা, খাবার, একাডেমিক কার্যক্রম, চিকিৎসা-সুবিধা, লাইব্রেরি, ব্যবহারিক চার্জ এমনকি বিমানে যাতায়াতের ভাড়াসহ সব মিলিয়ে এখানে পড়তে বছরে একজন শিক্ষার্থীর খরচ হয় ১৫ হাজার মার্কিন ডলার। কিন্তু এখানে প্রায় ৮৫ শতাংশ বাংলাদেশি এবং বিদেশি শিক্ষার্থী বিনা খরচে পড়াশোনা করছে। শিক্ষার্থীর পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ও সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে বৃত্তি নির্ধারণ করা হয়। আর সেরা শিক্ষকদের জন্য তাদের সম্মানীও বেশি দিতে হয়। ফলে সব সময় অনুদান খুঁজতে হয়। সেটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছে।
আরেকটা চ্যালেঞ্জ হলো, ভিন্ন দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মিক মেলবন্ধন ঘটানোর কাজটি করা। তৃতীয়টি হলো, বিশ্বমানের শিক্ষকদের চট্টগ্রামে আনা, অতীতের মতো ভবিষ্যতেও এই মান ধরে রাখা।

এখানকার শিক্ষার্থীরা পেশাজীবনে কেমন করছেন? কোথায় কোথায় তাঁরা কাজ করছেন?
এইউডব্লিউয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, অক্সফাম, ইউনেসকো, বিশ্ব ব্যাংক, কেমিস্ট উইদাউট বর্ডার, রোম টু রোড, টিচ ফর নেপাল, শেভরন বাংলাদেশ, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালসহ প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী সংস্থায় কাজের মধ্য দিয়ে তাদের কর্মজীবন শুরু করছে। এইউডব্লিউয়ের স্নাতক পাস করা ৮৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী নিজ দেশে ফিরে গিয়ে সেখানকার সরকারি-বেসরকারি, অলাভজনক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে।
কিছু শিক্ষার্থী যারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যানফোর্ড, কলম্বিয়া, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়, ইডব্লিউএইচএ (দক্ষিণ কোরিয়া) ও ইউরোপ-এশিয়ার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরও উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যায়, ইতিমধ্যে এশিয়ার ১৬টি দেশের শিক্ষার্থীরা মিলে নারী নেতৃত্ব ও পরিবর্তনকারীদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।

এইউডব্লিউয়ের সঙ্গে কেন, কীভাবে যুক্ত হলেন, গল্পটা যদি বলেন...
আমি এখানে যোগ দিয়েছি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তিন বছরের চুক্তি। যদিও ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আহমেদের আমন্ত্রণে আমি এইউডব্লিউতে এসেছিলাম। মেয়েদের সঙ্গে এক সপ্তাহ সময় কাটাই। তখন আমার ভালো লেগেছিল। আমি এখানকার মেয়েদের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। আমাকে যখন প্রস্তাব দেওয়া হলো উপাচার্য হিসেবে কাজ করার, এটা সত্যি আমার জন্য খুব গর্বের মনে হয়েছে। আমার পরিবার লন্ডন থাকে। এই মেয়েদের জন্য কিছু করব বলে পরিবার থেকে দূরে থাকছি।

এখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
আমার জন্ম দক্ষিণ ভারতে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করি। এরপর ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে পিএইচডি করি। এখানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে ৩০ বছর শিক্ষকতা করেছি। স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিসের সাবেক প্রো-ডিরেক্টর আমি। ফলে অনেকগুলো বছর একধরনের পরিবেশ দেখেছি। এইউডব্লিউ অন্য রকম, এখানকার লক্ষ্যই যেহেতু অনগ্রসর মেয়েদের উন্নত উচ্চশিক্ষাদানের মাধ্যমে ক্ষমতায়িত করা, এ ধরনের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করা পুরস্কার পাওয়ার মতো আনন্দের। এইউডব্লিউকে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি খুবই গর্বের আমার জন্য। নিজেকে কখনো ভারতীয় ভাবিনি, মনে হয়েছে আমি সারা বিশ্বের। এরা আমার ছেলেমেয়ে।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের বোর্ড অব ট্রাস্টিজে যাঁরা আছেন
আন্তর্জাতিক এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। এ ছাড়া সদস্যদের মধ্যে আছেন ভারতীয় কূটনীতিক শিব শংকর মুখার্জি, হার্ভার্ড অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড অব ডিরেক্টরদের একজন—ওয়াই জে কিম, বিশিষ্ট ভারতীয় ব্যবসায়ী কপিল জেইন, কাতারের শিক্ষাবিদ শেইখা আবদুল্লাহ আল–মিসনাদ, এইউডব্লিউয়ের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আহমেদ, হংকংয়ের ব্যবসায়ী লিন অ্যানি ডেভিস, ভারতের লেডি শ্রী রাম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মীনাক্ষী গোপিনাথ, গ্লোবাল করপোরেট ব্যক্তিত্ব লেল কেসেবি, মিলকেন ইনস্টিটিউট এশিয়া সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লরা ডিল লেসি, মালয়েশিয়ার লেখক ও মানবাধিকারকর্মী ম্যারিনা মাহাথির, পাকিস্তানের সাংবাদিক ও পরিচালক শারমীন ওবায়েদ–চিনয়, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মারিয়াম কুদরাত, যুক্তরাষ্ট্রের সুইট ব্রিয়ার কলেজের প্রেসিডেন্ট মেরেডিথ য়ু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রুবানা হক, বাংলাদেশি কূটনীতিক এম হুমায়ুন কবির এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন কাশেম খান।