এই বিজ্ঞানী মাঠেই থাকেন

তমাল লতা আদিত্য কৃষিবিজ্ঞানী। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের পরিচালক ও বিজ্ঞানী। তিনি ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ ধানের জাত উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

খরাসহিষ্ণু, বোরো মৌসুমের অনুকূল পরিবেশে উৎপাদনযোগ্য অথবা সুগন্ধী রপ্তানিযোগ্য—তমাল লতার উদ্ভাবিত ধানের জাতগুলো বিচিত্র আর উপকারী। রাঙামাটি থেকে দিনাজপুর বা শেরপুরের নালিতাবাড়ী, তমাল লতার দিন কাটে মাঠে।
বাংলাদেশের ধানের উন্নয়নে বৈজ্ঞানিক গবেষণা আর নেতৃত্বের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর তমাল লতা পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেনাধিরা পুরস্কার। ২০১৭ সালে তাঁর নেতৃত্বে থাকা উদ্ভিদ প্রজনন গবেষক দলটি বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পায়।
এই বিজ্ঞানী ২০০২ সালে উদ্ভিদ জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে পিএইচডি করেছেন। বড় ছেলের বয়স তখনো তিন বছর হয়নি। গর্ব করে বলেন, তাঁর কাজে পরিবারের পুরো সমর্থন আছে। দুই ছেলেকে মানুষ করা আর সংসার সামলানোর কাজে শাশুড়ি আর চিকিৎসক স্বামীকে পাশে পেয়েছেন । রান্না তাঁর শখের কাজ, ‘আমি রান্না নিয়েও গবেষণা করি।’ তাঁর কথায়,‘ঘরের নেতৃত্ব আমাদের দুজনের হাতেই।’
নিজেকে তিনি কখনোই ‘নারী বিজ্ঞানী’ মনে করেন না, তিনি শুধুই ‘বিজ্ঞানী’। উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান থাকাকালে তাঁর দলে চার থেকে পাঁচজন বিজ্ঞানী ছিলেন নারী। তাঁদেরও তমাল লতা একই কথা বলতেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘পুরুষদের সাহায্য ছাড়া কোনো আবিষ্কার করতে পারব না, এই ধারণা পোষণ করা যাবে না। এবং আমাকে যেখানে দেবে সেখানেই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
হাওর অঞ্চলের জন্য বোরো মৌসুমের আগাম বন্যাসহিষ্ণু ধান তৈরি করতে চান তমাল লতা। আর চান দেশজ সনাতনী ধানগুলো উচ্চফলনশীল জাতে রূপ দিতে। পরিবার, নিজের উঠে আসা, কাজ এবং শখের বিষয় নিয়ে নিয়ে সম্প্রতি তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন।