ছেলের শুভকামনায় কাটে সারা দিন

>এ বছর মা দিবসের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে ছেলেদের নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকাদের মায়েরা। ছেলেরা সবাই এখন বিশ্বকাপ খেলতে ইংল্যান্ডে। মায়েরা জানাচ্ছেন সেই বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা। আর সঙ্গে রইল মায়েদের শুভকামনা। এই মায়েদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা লিখেছেন সেই বিজ্ঞাপনের নির্মাতা।
মাহমুদউল্লাহর মা আরাফাত বেগম । ছবি: আনোয়ার হোসেন
মাহমুদউল্লাহর মা আরাফাত বেগম । ছবি: আনোয়ার হোসেন

প্রতিপক্ষ দলের জন্য ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহর মা আরাফাত বেগম খুব ধীরস্থির স্বভাবের। হতে পারে মায়ের এ স্বভাবই পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। এ কারণেই খেলার মাঠে তাঁকে ধীরস্থির আর ধৈর্যশীল দেখা যায়।

২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নিতে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ইংল্যান্ডে আছেন দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ। হাজার হাজার মাইল দূরে বসে ছেলের জন্য শুভকামনা জানাচ্ছেন মা আরাফাত বেগম। ২৭ মে সকালে ময়মনসিংহ শহরে মাহমুদউল্লাহর বাড়িতে গিয়ে কথা হয় আরাফাত বেগমের সঙ্গে। তিনি জানালেন, জাতীয় দলের খেলা নিয়ে অনেক বছর ধরেই ভীষণ ব্যস্ত মাহমুদউল্লাহ। ছুটি মেলে কমই, তাই ময়মনসিংহে যাওয়া হয় খুব কম।

সকালে ফজরের নামাজের পর কিছুক্ষণ হাঁটেন আরাফাত বেগম। নামাজ আর কোরআন তিলাওয়াত ছাড়া বাকি সময় তেমন কোনো কাজ থাকে না। ময়মনসিংহের বাড়িতে থাকা এক নাতির সঙ্গে গল্পগুজব করে কাটে তাঁর দিন। এর বাইরে সারাক্ষণই মনে মনে ছেলের জন্য শুভকামনা করেই দিন কাটান তিনি। দেশে থাকলে ঈদের সময় অবশ্য ময়মনসিংহেই থাকেন মাহমুদউল্লাহ। তখন ছেলে, পুত্রবধূ আর নাতির সঙ্গে বেশ কাটে সময়টা।

পায়েস মাহমুদউল্লাহর অন্যতম প্রিয় খাবার। ঈদে ময়মনসিংহে থাকলে আরাফাত বেগম পায়েস রান্না করে ছেলেকে খাওয়ান। অনেক সময় অল্প দিনের ছুটিতে দেশে আসেন মাহমুদউল্লাহ। তখন ছেলের তাগাদায় মাকেই ছুটে যেতে হয় ঢাকায়। গত বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি করে মাহমুদউল্লাহ বেশ আলোচনায় আসেন। তখন থেকে ময়মনসিংহের বাড়িতে শুভাকাঙ্ক্ষী ও সংবাদকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে।

মাহমুদউল্লাহ
মাহমুদউল্লাহ

আরাফাত বেগম বলেন, ‘ছেলের কৃতিত্বের জন্য মানুষ আসে বাড়িতে, এতে আমি খুব খুশি হই।’ বিশ্বকাপ এখন দুয়ারে। বাংলাদেশ দলে খেলবেন ছেলে। তাই মায়ের খেলা দেখার প্রহর গণনা চলছে। মাহমুদউল্লাহর খেলা বাংলাদেশের দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ মিরপুর স্টেডিয়ামে বসে দেখেছেন তিনি। তবে মাঠের চেয়ে ঘরে বসে টিভিতে খেলা দেখতেই বেশি স্বস্তি পান তিনি। মাহমুদউল্লাহ যতক্ষণ ব্যাট করেন, ততক্ষণই তিনি ভীষণ উৎকণ্ঠায় কাটান। কখনো টিভির সামনে বসেন, আবার কখনো পায়চারি করেন, এভাবেই কেটে যায় খেলার সময়।

ইংল্যান্ডে থাকা মাহমুদউল্লাহ নিয়মিত নামাজ পড়েন। কঠোর অনুশীলনের পাশাপাশি তিনি রোজা রাখছেন। রোজা রাখলে বেশি পিপাসা হয় কি না, ইফতারে বাংলাদেশের মতো খাবার পাওয়া যায় কি না, বারবার ফোন করে এসব কথা জানতে চান মা।