মুশফিক শান্ত ও জেদি, ঠিক মায়ের মতো

>
ছেলে মুশফিকুর রহিমের ছবি হাতে বাবা মাহবুব হামিদ ও মা রহিমা খাতুন। ছবি: সোয়েল রানা
ছেলে মুশফিকুর রহিমের ছবি হাতে বাবা মাহবুব হামিদ ও মা রহিমা খাতুন। ছবি: সোয়েল রানা
এ বছর মা দিবসের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে ছেলেদের নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকাদের মায়েরা। ছেলেরা সবাই এখন বিশ্বকাপ খেলতে ইংল্যান্ডে। মায়েরা জানাচ্ছেন সেই বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা। আর সঙ্গে রইল মায়েদের শুভকামনা। এই মায়েদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা লিখেছেন সেই বিজ্ঞাপনের নির্মাতা।

বগুড়ার সন্তান ক্রিকেটার মোহাম্মদ মুশফিকুর রহিম। বাবার চেয়ে মায়ের সঙ্গেই শখ্য বেশি। মায়ের শান্ত স্বভাব, জেদ—সবকিছুই যেন দেখা যায় এই ক্রিকেটারের মধ্যে। কোনো কিছুতে পিছু হটতে চান না মা রহিমা খাতুন। ছেলে মুশফিক যেন ঠিক মায়ের দেখানো ওই পথেই চলেন। সম্প্রতি মা দিবস উপলক্ষে তৈরি এক বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নেওয়ার অনুভূতিও ব্যক্ত করলেন রহিমা খাতুন।

মুশফিকুর রহিমের মা অন্য মায়েদের থেকে আলাদা। তিনি বাক্‌প্রতিবন্ধী। ভালোভাবে কথা বলতে পারেন না। কানেও শোনেন না। তবে মুশফিকের বাবা মাহবুব হামিদ রহিমার ‘ভাষা’ বোঝেন। রহিমার অনুভূতিগুলো ব্যাখ্যা করতে পারেন। রহিমা খাতুনের অনুভূতি আর মাহবুব হামিদের ব্যাখ্যা শোনা হলো বগুড়া শহরে তাঁদের বাড়িতে বসে।

ক্রিকেট–বিশ্বে মুশফিক আলোচিত হওয়ার পর একাধিকবার ক্যামেরার সামনে কথা বলেছেন রহিমা। আগের বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদ হয়েছে। তবে এবার একটু আলাদা। মা দিবস উপলক্ষে তৈরি এবারের বিজ্ঞাপনচিত্রে অনুভূতির কথা বলেছেন সন্তানকে নিয়ে। তবে আলাদা কোনো অনুভূতি বোধ করেন না গুণী ক্রিকেটারের এই মা। কোনটা সংবাদ আর কোনটা বিজ্ঞাপনচিত্র, এ বিষয়ে তাঁর কোনো ধারণা নেই।

রহিমা খাতুন বোঝালেন ছেলেকে ব্যাখ্যা করার কিংবা ভালোবাসার আলাদা কোনো দিবস লাগে না। বছরের সব দিন সন্তানের জন্য একই। অন্য মায়েদের মতো ছেলেকে নিয়ে কথা বলতে না পারাটা কষ্টের। তবে এতে কোনো কষ্ট নেই তাঁর। কোনো সমস্যাও বোধ করেন না রহিমা খাতুন।

‘মুশফিক খুব শান্ত স্বভাবের। জেদও খুব বেশি। সময়জ্ঞান সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা। কোনো কাজে দেরি করে না। ব্যাপক বুদ্ধিমান। মনোযোগ দিয়ে একটানা কাজ করতে পারে। আত্মবিশ্বাসও প্রবল। আসলে এসব গুণ আমার কাছ থেকে পাওয়া। মুশফিকের প্রতিটি ‍গুণ আমার মতো। কোনো কাজ শুরু করলে শেষ দেখে ছাড়ে। আর জেদে বাবাকে ছাড়িয়ে যোজন যোজন দূরত্বে মুশফিক। তবে বাবার সঙ্গেও ব্যাপক মিল। ভালোবাসা ও আন্তরিকতায়।’ এমনটাই বললেন মা রহিমা খাতুন। শুধু মুশফিক নন, অন্য ছেলেমেয়েও মুশফিকের মতো মা–ভক্ত। মায়ের আঁচলেই তাঁরা বেশি শান্তি পান।

২০১৪ সালের বিয়ে করেছেন মুশফিক। এর আগে মায়ের হাতের মাখানো ভাত খেতেন মুশফিক। তবে এখনো বাড়িতে খিচুড়ি রান্না হলে মুশফিক মায়ের হাতে ছাড়া খান না। মায়ের আফসোস, ‘মুশফিক এখন আগের মতো খায় না। না খেয়ে থেকে থেকে মুশফিক শুকিয়ে যাচ্ছে।’ বিয়ের আগের ছবি দেখিয়ে রহিমা বোঝান,
ছেলে আগে অনেক স্বাস্থ্যবান ছিলেন। এখন অনেক শুকিয়ে গেছেন।

আমার মতোই আত্মবিশ্বাসী মুশফিক। মুশফিক খুব ভালো খেলবে। বিশ্বকাপ ঘরে আনবে। মা রহিমা খাতুন এমনটাই আশা করেন।