ভালোবাসা নাচ ও অভিনয়ে

রূপন্তী রয়েল। ছবি: সংগৃহীত
রূপন্তী রয়েল। ছবি: সংগৃহীত

বাসার কাউকে না জানিয়েই ছোটবেলায় হুটহাট বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন রূপন্তী রয়েল। তারপর যখন পুরস্কার হাতে বাড়ি ফিরতেন, চমকে যেত সবাই! তবে চমকের চেয়েও বড় ছিল আনন্দ। পরিবারের সদস্যদের এই সহায়তা পেয়েই নাচ ও অভিনয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী রূপন্তী রয়েল। 

নাচে হাতেখড়ি হয়েছে মা রহিমা রয়েলের কাছে। মায়ের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়েই পরে নাচ শেখেন যশোর উদীচীতে। পাশাপাশি মঞ্চনাটকেও ছিল সমান আগ্রহ। স্কুলে পড়ার সময় অভিনয়ে একক নাটকে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান লাভ করেছিলেন রূপন্তী। আর সে সময় শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) পর্দায়। 

রূপন্তী বলছিলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি একটু মিশুক প্রকৃতির ছিলাম। তাই ওরিয়েন্টেশনের দিনই সবার সঙ্গে পরিচিত হয়ে যাই। এখন সবার সঙ্গেই বন্ধুসুলভ একটি সম্পর্ক হয়ে গেছে।’ 

রূপন্তী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরপরই ক্যাম্পাসে একটি লোকনৃত্যের আয়োজন করা হয়েছিল। আনর্ত নাট্যমেলায় উদ্বোধনী লোকনৃত্যে সুযোগ পান তিনি। বলছিলেন, ‘সেপ্টেম্বরে নাট্যকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী ভারতে যাচ্ছি। সেই ১৫ জনের একজন হিসেবে বিভাগ থেকে আমাকেও নির্বাচিত করা হয়েছে। সেখানে আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তাসের দেশ নাটকের মঞ্চায়ন করব। এখন মহড়া চলছে পুরোদমে।’ 

আসাদুজ্জামান রয়েল ও রহিমা রয়েল দম্পতির মেয়ে রূপন্তী রয়েলের শৈশব কেটেছে যশোরে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পার করেছেন মনিরামপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে। 

স্কুলে পড়ার সময় কুচকাওয়াজের নেতা ছিলেন রূপন্তী। পাশাপাশি স্কাউটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্কাউটিংয়ের সুবাদেই বাইরের জগৎটা দেখার সুযোগ হয়েছে তাঁর। এখন পর্যন্ত ঘুরেছেন ২৯টি জেলা। রূপন্তীর ইচ্ছা, দেশের সবগুলো জেলা ঘুরে দেখবেন। অবসর সময়ে সাইকেল চালাতে ভালোবাসেন তিনি। 

রূপন্তী বলেন, ‘২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষায় আমি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছি—৯৫। পরে ক্যাম্পাসের সিনিয়রদের কাছে শুনেছি, এই নম্বর গত কয়েক বছরের মধ্যে আর কেউ পাননি।’ নাচ আর অভিনয়ের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে ছোট পর্দায় কাজ করার ইচ্ছা রূপন্তীর।