আনিলার অদম্য যাত্রা

বাবা–মায়ের সঙ্গে আনিলা।  ছবি: জাহিদুল করিম
বাবা–মায়ের সঙ্গে আনিলা। ছবি: জাহিদুল করিম

আফিয়া কবির আনিলা এ-লেভেল পাস করেছেন। শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নয়, এ পর্যন্ত আসতে মানুষের তৈরি অনেক প্রতিবন্ধকতা পার হতে হয়েছে আনিলাকে। তবে নিজের ইচ্ছা এবং বাবা আশফাক-উল-কবির এবং মা মারুফা হোসেনের অক্লান্ত চেষ্টায় আনিলা এ পর্যন্ত আসতে পেরেছেন। কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাঁকে দমাতে পারেনি।

আনিলার প্রতিবন্ধিতার নাম হচ্ছে সেরিব্রাল পালসি (শারীরিক প্রতিবন্ধকতা)। তিনি হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী। হাঁটতে পারেন না ও হাত সঞ্চালন করতে পারেন না, এমনকি দৃষ্টিশক্তিও কম। ফলে বইয়ের অক্ষর পরিষ্কারভাবে দেখতে পারেন না। অন্যকে পড়তে হয় আর সেটা শুনে তাঁকে পড়ার কাজ চালাতে হয়। এ ছাড়া উচ্চারণ সমস্যা আছে। অনেক দিন তাঁর সঙ্গে কেউ কাজ করলে তবেই তাঁর কথা বুঝতে পারেন বা সহজ হয়।

আনিলার বাবা আশফাক-উল-কবির বললেন, আনিলা জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধিতার জন্য সার্বিকভাবে নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে। শুরুতে আনিলাকে কোনো মূলধারার স্কুলে ভর্তি করা হয়নি। স্কুলগুলোর বক্তব্য ছিল, আনিলা অন্য শিশুদের বিরক্ত করবে এবং অন্য অভিভাবকেরা তাকে গ্রহণ করবে না। তাই সেভাবে কোনো স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়নি আনিলার। একাডেমিয়া নামের একটি স্কুল ভর্তি না নিলেও কোচিং করার সুযোগ দেয় আনিলাকে। অবকাঠামোগত এবং প্রবেশগম্যতার সমস্যা তো আছেই। ব্রিটিশ কাউন্সিলে শ্রুতিলেখক নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে সব সময়। শ্রুতিলেখক দেওয়া হয় পরীক্ষার আগের দিন, ফলে তিনি আনিলার ভাষা বুঝতে পারেন না। তাই ফলাফল আশানুরূপ হয়নি।

আশফাক-উল-কবির জানালেন, মেয়ের বয়স ২০ পার হয়েছে। সমন্বিত শিক্ষাপদ্ধতিতেই আনিলা উচ্চশিক্ষা লাভ করতে চায়। তবে সে সুযোগ কতটুকু পাওয়া যাবে তা অনিশ্চিত।