বিভিন্ন দেশ নিয়ে তাঁর কাজ

জীনাত সুলতানা।  ছবি: প্রথম আলো
জীনাত সুলতানা। ছবি: প্রথম আলো

জীনাত সুলতানা হাসি মুখে বললেন, ‘দেশে ব্র্যাক, সিপিডির মতো বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। এক ফ্লোর থেকে আরেক ফ্লোরে যেতাম। খুব বেশি হলে এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগের খবর নিতাম। আর এখন অফিস করব জাতিসংঘের সদর দপ্তরে। হ্যালো আফগানিস্তান, হ্যালো... এভাবে একেক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করব। আমি বাংলাদেশি হলেও জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করব।’

জীনাত সুলতানা জাতিসংঘের (ইউএন) জুনিয়র প্রফেশনাল অফিসার প্রোগ্রামে (জেপিও) ইউনিসেফের হয়ে পাবলিক পার্টনারশিপ ডিভিশনে গ্র্যান্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে ইউএন পাবলিক পার্টনারশিপ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ ডিভিশনে কাজ করা একমাত্র বাংলাদেশি তিনি। এ ছাড়া ইউনিসেফের হয়ে জেপিওতে এ দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া প্রথম বাংলাদেশি নারীও তিনি। এক থেকে তিন বছরের জন্য এ কাজের সুযোগ পেয়েছেন জীনাত। 

জীনাত বললেন, জেপিওতে চাকরি পেতে বাংলাদেশসহ শতাধিক দেশের প্রতিযোগীরা অংশ নেন। এতে আর্থিক সহায়তা দেয় নেদারল্যান্ডস (ডাচ) সরকার।

জীনাত জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অফিস করতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চলতি মাস থেকেই কাজ শুরু হওয়ার কথা। জীনাত বললেন, ‘বাংলাদেশি হিসেবে এ ধরনের কাজের দায়িত্ব পাওয়া অবশ্যই গর্বের। আমি চেষ্টা করব আমার দায়িত্ব ভালোভাবে সম্পন্ন করতে।’

জীনাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে এমএ করেছেন। এরপর সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এবং বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকে কাজ করেন। এই দুই প্রতিষ্ঠানেও সরকারের সঙ্গে পার্টনারশিপ, অ্যাডভোকেসি করার মতো কাজগুলো করেছেন। ছোটবেলায় পড়াশোনা করেছেন ভারতেশ্বরী হোমসে। কঠোর পরিশ্রম, নিয়ম মানার মতো বিষয়গুলো বলতে গেলে এসব প্রতিষ্ঠানেই শিখেছেন বলে জানালেন জীনাত। একই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করলেন।

কিশোরগঞ্জের মেয়ে জীনাত। তাঁর বাবা মুশতাকুর রহমান এবং একমাত্র বড় ভাই তারেকুল মুশতাক বর্তমানে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মা ফেরদৌস জাহান জীনাতের ৯ বছর বয়সে মারা যান।

জীনাত জানালেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জাতিসংঘের এ চাকরির জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেন। একটি পদে এতগুলো দেশের প্রতিনিধিরা আবেদন করেছেন, তাই চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তবে এ পদে আবেদন ও চাকরি পেতে এক টাকাও খরচ করতে হয়নি, আর মামা-চাচা ধরার তো কোনো উপায়ই নেই।

জীনাত জানালেন, পড়াশোনা করলেও জিপিএ-৫-এর পেছনে কখনো দৌড়াননি। তবে বই পড়েছেন প্রচুর।