পৃথিবীর পক্ষে গ্রেটার লড়াই

জাতিসংঘের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী পর্বে বিশ্বনেতাদের সামনে বক্তব্য দিচ্ছে গ্রেটা থুনবার্গ
জাতিসংঘের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী পর্বে বিশ্বনেতাদের সামনে বক্তব্য দিচ্ছে গ্রেটা থুনবার্গ

টাইম ম্যাগাজিন এ বছরের মে মাসের প্রচ্ছদ করে ১৬ বছরের গ্রেটা থুনবার্গকে নিয়ে। তাকে পরিচয় করিয়ে দেয় ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নেতা’ হিসেবে। সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা আলোচনায় আসে ২০১৮ সালের আগস্ট মাস থেকে। ক্লাস বর্জন করে বৈশ্বিক উষ্ণতার কথা মনে করিয়ে দিতে সে অবস্থান নেয় সুইডেনের পার্লামেন্টের বাইরে। তার হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট’। পরিবেশ রক্ষার এই উদ্যোগে শামিল হয় সুইডেনের শিশু–কিশোরেরা। অতি দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বহু শিশু–কিশোরের মধ্যে। ২০১৮ সালে জাতিসংঘের ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্সে কথা বলার পর দেশে দেশে শিশু–কিশোরেরা শুরু করে আরেক আন্দোলন, ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’। 

টাইম সাময়িকীর প্রচ্ছদে গ্রেটা থুনবার্গ
টাইম সাময়িকীর প্রচ্ছদে গ্রেটা থুনবার্গ

প্রতি শুক্রবার শিশু–কিশোরেরা জড়ো হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীকে রক্ষার তাগিদে। গত ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেটার আহ্বানে ১৫০টি দেশে লাখ লাখ মানুষ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভ জানিয়েছে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের ব্যর্থতার প্রতিবাদে।

গ্রেটার জন্ম ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি, সুইডেনের স্টকহোমে। তাঁর মা অপেরাশিল্পী মালিনা অ্যার্নমান, বাবা অভিনয়শিল্পী ভানতে থুনবার্গ। আট বছর বয়সে প্রথম জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি জানতে পারে গ্রেটা। বছর তিনেক বাদে অ্যাসপারজার সিনড্রোম, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার (ওডিসি) এবং সিলেকটিভ মিউটিজমের মতো জটিল কিছু ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় সে। তবে এই সমস্যাগুলোকে সে ‘সুপার পাওয়ার’ হিসেবেই ধরে নিয়েছে। কেবল রাজনীতিবিদ বা বিশ্বনেতাদের সামনে কথা বলে নয়, গ্রেটার আন্দোলন চলছে ঘরেও। মা–বাবাকে বুঝিয়ে–সুঝিয়ে পরিহার করেছে উড়োজাহাজ ভ্রমণ (এ কারণে তাঁর মাকে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বিসর্জন দিতে হয়েছে)।

গ্রেটা থুনবার্গ
গ্রেটা থুনবার্গ

খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে মাংস। যত রকমভাবে কার্বন ডাই–অক্সাইড কম নিঃসরণ করা যায়, তার সবই করছে সে। বক্তৃতা দিচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সব সমাবেশে। লিখেছে বই। এ বছর প্রকাশিত নো ওয়ান ইজ টু স্মল টু মেক আ ডিফরেন্স নামের বইটি থেকে যত টাকা আয় হয়েছে, তার সবই সে দান করেছে পরিবেশ রক্ষার কাজে। এই আন্দোলন তাকে এনে দিয়েছে বিকল্প নোবেলখ্যাত ‘রাইট লাইভলিহুড’ পুরস্কার।