তৃণমূলের নারীদের তথ্য অধিকারে আগ্রহ বেড়েছে

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় তৃণমূলের নারীদের মধ্যে তথ্য অধিকার সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ছে। নারীরা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য নিচ্ছেন।

তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করা নারীরা জানালেন, তাঁরা সমাজসেবা অধিদপ্তর, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদে তথ্য চেয়ে বেশি আবেদন করেছেন। অনেকেই তথ্য পেলেও দীর্ঘসূত্রতারও অভিযোগ করলেন।

বয়স্ক ভাতার তথ্য জানতে চেয়ে আবেদন করা সুরেশ হেডম্যান পাড়া এলাকার মালিনী ত্রিপুরা (৪২) বললেন, ‘আমি বয়স্ক ভাতার তথ্য চেয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করেছিলাম। আমি তথ্য পর্যালোচনা করে জানতে পারি, আমাদের গ্রামের রাজেন্দ্র ত্রিপুরা নামের এক ব্যক্তি কয়েক বছর ধরে বয়স্ক ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন। অথচ গ্রামে এই নামের কাউকে পাইনি।’

মিলনপুর গ্রামের আলো রানী চাকমা (৩৫) বললেন, ‘আমি গত বছর আমাদের গ্রামের কৃষ্ণ ভক্ত চাকমা নামের এক অসহায় বৃদ্ধের জন্য বয়স্ক ভাতার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তাঁকে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়নি। পরে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর তাঁকে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হবে।’

হাচিনসনপুর এলাকার জ্যোৎস্না আক্তার, বিপুরিতা চাকমাসহ তথ্য অধিকার আইনে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা নারীরা জানান, তাঁরা গ্রামের নারীদের তথ্য সেবা প্রাপ্তি বিষয়ে সচেতন করে তুলছেন।

নারীর তথ্য অধিকার নিয়ে কাজ করা তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার প্রকল্প সমন্বয়ক মিনুচিং মারমা বললেন, ‘গ্রাম পর্যায়ে নারীরা এখন অনেক সচেতন হয়েছেন। আমরা তথ্য অধিকার নিয়ে নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাঁরা এখন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে সেবা প্রাপ্তি বিষয়ে তথ্য চেয়ে আবেদন করে সুফল পাচ্ছেন। আমরা এখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তথ্য অধিকার বিষয়ে সচেতন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা দেওয়ান বললেন, ‘গ্রামের নারীদের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আবেদন করে তথ্য চাওয়া খুবই ইতিবাচক। এ প্রক্রিয়া দুর্নীতি প্রতিরোধেও সহায়ক হবে। আমি গ্রামের নারীদের বলেছি কোনো সরকারি দপ্তরে তথ্য প্রাপ্তিতে ভোগান্তি বা হয়রানির শিকার হলে আমার কাছে আসতে। নারীরা প্রয়োজনে তথ্য অধিকার আইন অনুসরণ করে তথ্য কমিশন পর্যন্ত যাবেন।’