কিউ ম্যাটের ব্যবহার হচ্ছে না

সন্তান প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রায় ৩০ শতাংশ মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। প্রসবের পর রক্তক্ষরণ বেশি হচ্ছে, তা নিয়ে আগে থেকেই সচেতন করার জন্য একটি পরিমাপের পদ্ধতি বের করেছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সহযোগী বিজ্ঞানী মো. আবদুল কাইউম। ম্যাটের নাম দেওয়া হয়েছে আইসিডিডিআরবি কিউ ম্যাট। তবে সরকার এ ম্যাট ব্যবহারে এখন পর্যন্ত আগ্রহী হয়নি।

২০১৬ সালে সরকারের সর্বশেষ মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ বলছে, মাতৃমৃত্যুর ৫৪ শতাংশ ঘটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনি—এ দুই কারণে। ২০১০ সালের জরিপেও মাতৃমৃত্যুর প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে এক নম্বরেই ছিল প্রসব-পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ (৩১ শতাংশ)।

আবদুল কাইউম জানান, প্রসবের পর ২৪ ঘণ্টায় ৫০০ মিলিলিটারের (আধা কেজি) বেশি রক্তক্ষরণ হলে তাকে বলে ‘প্রসব-পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ’। আর কিউ ম্যাটটি রক্তে পুরোপুরি ভিজে লাল হয়ে যাওয়ার অর্থ ওই প্রসূতি মায়ের ৪০০ থেকে ৪৫০ মিলিলিটার রক্তক্ষরণ হয়ে গেছে। 

আবদুল কাইউম জানালেন, ম্যাটের ব্যবহার বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়নি। ম্যাট ব্যবহারের ট্রেনিং ম্যানুয়াল তৈরি করা হয়েছে। প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) এ ম্যাট সম্পর্কে অবগত। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশ থেকে এটি ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে সরকার বিষয়টিকে কেন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করছে না, তা জানা নেই। 

মো. আবদুল কাইউম কথা বলছেন গ্রামের নারী–পুরুষের সঙ্গে।  ছবি: শহিদুল আলম
মো. আবদুল কাইউম কথা বলছেন গ্রামের নারী–পুরুষের সঙ্গে। ছবি: শহিদুল আলম

আবদুল  কাইউম জানালেন,  আন্তর্জাতিক জার্নালে খবর প্রকাশের পাশাপাশি ২০১৫ সালে আইসিডিডিআরবির পক্ষ থেকে জাতিসংঘে এই বিষয় উপস্থাপন করা হয়। এর ব্যবহার নিয়ে এখন আর কোনো সন্দেহ নেই। তাই এখন এটি ব্যবহারে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।

ওজিএসবির সাবেক প্রেসিডেন্ট রওশন আরা বেগম বললেন, এই ম্যাট নিয়ে আলোচনা তেমন বেশি দূর অগ্রসর হয়নি। তবে মাকে বাঁচানোর জন্য পদ্ধতিটি ভালো হলে অবশ্যই তা ব্যবহারে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।