এখন আমি আরও আত্মবিশ্বাসী

প্রতীকী সম্পাদক হিসেবে প্রথম আলোর সম্পাদকের আসনে ফারিয়া মেহজাবীন খান। ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন
প্রতীকী সম্পাদক হিসেবে প্রথম আলোর সম্পাদকের আসনে ফারিয়া মেহজাবীন খান। ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন
১১ অক্টোবর ছিল আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। এ উপলক্ষে ‘গার্লস টেকওভার’ নামের একটি আয়োজনের অংশ হিসেবে ১০ অক্টোবর দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারিয়া মেহজাবীন খান প্রতীকীভাবে প্রথম আলোর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সেই অভিজ্ঞতার কথা শুনুন তাঁর মুখ থেকেই।


যাচ্ছি প্রথম আলো কার্যালয়ে। তা–ও সম্পাদক হিসেবে! ভাবা যায়? 

দুরুদুরু বুকে উপস্থিত হলাম প্রথম আলোয়। সেখানে গিয়ে আমি অবাক। সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা আমাকে অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য বসে আছেন। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান যখন আমার গলায় সম্পাদকের পরিচয়পত্র পরিয়ে দিলেন, সেটা ছিল একটা অভাবনীয় মুহূর্ত।

এরপর আমি পত্রিকার বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেছি। পরদিনের পত্রিকায় কী যাবে, প্রতিদিন তা নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় বিকেল চারটায়। সেই সভায় উপস্থিত থেকে আমি নেতৃত্ব দিয়েছি। সেখানে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পরদিনের পত্রিকায় কী কী থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। মেয়ে শিশুদের অধিকার ও ক্ষমতায়নের বিষয়টি যেন পত্রিকায় গুরুত্ব পায়, সে কথাই বলেছি আমি। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধানেরা খুব আগ্রহ নিয়ে পত্রিকার কর্মপ্রক্রিয়া আমাকে বুঝিয়ে বলেছেন। আমার কথা শুনেছেন। 

বার্তা বিভাগের কঠিন সংবাদগুলো তো বটেই, ছোটদের পাতা গোল্লাছুট পর্যন্ত যে নিষ্ঠার সঙ্গে তৈরি হয়, দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি, অনুপ্রাণিত হয়েছি। সবাই যেভাবে আগ্রহ নিয়ে আমার কথা শুনেছেন, তাতে আমার আত্মবিশ্বাস আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে।

এখন আমি পড়ছি দ্বাদশ শ্রেণিতে। ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করব কন্যাশিশুদের বাধাহীন এগিয়ে যাওয়া ও বিকাশ নিয়ে। তবে এ জন্য যে গণমাধ্যমের সঙ্গেও আমাকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে, বিষয়টি আমি বুঝতে পেরেছি এক দিনের প্রতীকী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে। আগে আমি কোনো দিন কোনো পত্রিকা অফিসে যাইনি। এটাই ছিল আমার প্রথম অভিজ্ঞতা।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ‘গার্লস টেকওভার’ কর্মসূচির অংশ হয়ে প্রথম আলোয় কাটানো এই কিছুটা সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি ২০১৬ সাল থেকে ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সের সঙ্গে শিশু, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের বিকাশ ও অধিকার রক্ষায় কাজ করছি। এই সময়ে অনেকেই জেনেছে আমার কাজের ব্যাপারে। কিন্তু প্রথম আলোতে সময় কাটিয়ে সবার কাছ থেকে যে অভাবনীয় সাড়া পেয়েছি, এমন অভিজ্ঞতা আমার আগে কখনো হয়নি। আমার ইচ্ছা, পড়াশোনা ও নিজের কাজের ক্ষেত্রের পাশাপাশি শিশু ও নারীবিষয়ক লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হব।