৭০ বছর পর প্রকাশিত হওয়া সেই চিঠি

ভিলমা আর তাঁর দুই ছেলে।  ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের সৌজন্যে
ভিলমা আর তাঁর দুই ছেলে। ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের সৌজন্যে

অশউইচ। নামটা শুনলেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার বাহিনীর গড়া পোল্যান্ডের অশউইচ ক্যাম্পে যে ১১ লাখ মানুষ মারা যান, তাঁদেরই একজন ভিলমা গ্রুনওয়ালড। ১৯৪৪ সালের ১১ জুলাই গ্যাস চেম্বারে নিয়ে তাঁকে আর তাঁর বড় ছেলেকে মেরে ফেলা হয়। মৃত্যুর আগমুহূর্তে ভিলমা তাঁর স্বামীর উদ্দেশে কয়েক লাইনের একটি চিঠি লিখে রেখে যান। মৃত্যুর ৭০ বছর পর চিঠিটি সামনে আসে। এখন সেটি রাখা আছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে।

১৯৪৬ সালে ভিলমার ছেলে ফ্রাঙ্কের যখন ১১ বছর বয়স, তখন তাঁর বাবা তাঁকে চিঠিটি দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তখন ফ্রাঙ্ক মাকে আর বড় ভাইকে হারিয়ে এতটাই বিষণ্ন ছিলেন যে ওই চিঠি দেখতে চাননি। তারপর ১৯৬৭ সালে বাবার মৃত্যুর পর একদিন ফ্রাঙ্ক তাঁর ড্রয়ারে খুঁজে পান ওই চিঠি। দীর্ঘদিন চিঠিটি লুকিয়ে রেখেছিলেন। এমনকি স্ত্রী বারবারাকেও দেখতে দেননি। তারপর ২০১৪ সালে জাদুঘরে দিয়ে দেন চিঠিটি। এত দিন পর কেন? উত্তরে ৮৫ বছর বয়সী ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘মনে হলো, আমি তো মরেই যাব। তারপর আমার মাকে মানুষ কীভাবে মনে রাখবে?’ 

১০ বাক্যের সেই চিঠি 

‘আমার সবচেয়ে প্রিয়, তোমাকেই বলছি। আমরা আজ কেবল অন্ধকারের জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা পালাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হতো না। আমি শান্ত আছি। যা ঘটল এবং ঘটবে, এ জন্য কখনোই নিজেকে দোষারোপ করবে না। দেখো, সময়ের সঙ্গে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে, পুরোপুরি না হলেও অনেকটা। ভালো থেকো। ফ্রাঙ্ককে দেখে রেখো। ওকে অতি আদরে মাথায় তুলো না। আমি ওপারে গিয়ে তোমাদেরই স্মরণ করব, আমাদের সমস্ত ভালো সময়। তোমাদের জীবন সুন্দর হোক।’ 


সূত্র: উইমেন ওয়ার্ল্ড