ফারাজের সাহস আগামীর শক্তি

ফারাজ আইয়াজ হোসেন (১৫ এপ্রিল ১৯৯৬—১ জুলাই ২০১৬)। নানা লতিফুর রহমান ও নানি শাহনাজ রহমানের ৫০তম বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে (ঢাকা, ২০১৫)। ছবি: সংগৃহীত
ফারাজ আইয়াজ হোসেন (১৫ এপ্রিল ১৯৯৬—১ জুলাই ২০১৬)। নানা লতিফুর রহমান ও নানি শাহনাজ রহমানের ৫০তম বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে (ঢাকা, ২০১৫)। ছবি: সংগৃহীত

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন দেশি-বিদেশি অনেকে। এ হামলায় নিহত হয়েছিলেন সাহসী তরুণ ফারাজ আইয়াজ হোসেন। তাঁর সাহসী ভূমিকার কথা ছড়িয়ে পড়েছে নানা দেশে। গঠিত হয়েছে ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশন, নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। ২৭ নভেম্বর হোলি আর্টিজান মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। রায়ে সাত আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ছুটির দিনের এবারের প্রতিবেদনে ফারাজকে নিয়ে লিখেছেন তাঁর বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন

২৭ নভেম্বর আদালত হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। এ রায় কেবল সে রাতের কথাই মনে করিয়ে দেয়, যে রাতে আমরা ফারাজকে হারিয়েছি। আমরা ফারাজের শূন্যতা ভুলতে পারি না। তবে ও আমাদের সবাইকে গর্বিতও করেছে। জঙ্গিরা ফারাজকে চলে যেতে বলেছিল। অসীম সাহস, চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং গভীর ন্যায়নীতিবোধ ছিল বলেই সে রাতে ও দুই বন্ধুকে ফেলে আসতে রাজি হয়নি। বন্ধুদের রক্ষা করতে ফারাজ নিজের জীবনটাই উৎসর্গ করল। ওই রাতে ফারাজ যে আদর্শের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, বাংলাদেশ ঠিক সে আদর্শই ধারণ করে। বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ন্যূনতম ছাড় দিতে নারাজ। এতে দারুণ সাফল্যও এসেছে। আমরা ফারাজের পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে জানাই গভীর কৃতজ্ঞতা। আমরা বিশ্বাস করি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াই অব্যাহত থাকবে নিরন্তর।

মস্কোর সেন্ট বাসিল’স ক্যাথেড্রালের সামনে মা সিমিন হোসেনের সঙ্গে দুই ছেলে ফারাজ আইয়াজ হোসেন (বাঁয়ে) ও  যারেফ আয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
মস্কোর সেন্ট বাসিল’স ক্যাথেড্রালের সামনে মা সিমিন হোসেনের সঙ্গে দুই ছেলে ফারাজ আইয়াজ হোসেন (বাঁয়ে) ও যারেফ আয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

দুঃসহ সেই রাত
হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ওই রাতের কথা আমি কখনোই ভুলতে পারব না। দুঃসংবাদটি শোনামাত্র মায়ের সঙ্গে আমিও ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলাম। ফারাজকে একের পর এক ফোন করে যাচ্ছিলাম, কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো উত্তর আসছিল না। যেমনটা কখনোই করত না ফারাজ। আমি ওকে অবিরাম মেসেজ পাঠাচ্ছিলাম, যে করেই হোক যেন জবাব দেয়; আমরা যেন আশ্বস্ত হই, ও ঠিক আছে। প্রথম গুলির আওয়াজটি শোনার পর থেকে মায়ের সঙ্গে সারাটা রাত রাস্তায় কেটেছিল। নিজেকে তখন খুব শক্ত রেখেছিলাম, মা যেন আশা না হারান। অন্যরা যখন বলছিল, হোলি আর্টিজান বেকারির ভেতরে জঙ্গিরা ভিনদেশি এবং মুসলমানদের আলাদা করছে, তখন মনে একটা ধাক্কা লেগেছিল। ওই রাতে আমি দেখেছি, মায়ের মন যা বলে তা কখনোই ভুল হয় না। ফারাজ ও তার দুই বন্ধু সম্পর্কে মা বলছিলেন, ‘আমি আমার ফারাজকে তো চিনি। ও যদি কাল সকালে ফিরে আসে, তাহলে তিনজনই ফিরে আসবে। আর তা না হলে আমরা তিনজনকেই হারাব। আমি তো আমার ছোটুকে জানি। ও কখনোই ওর বন্ধুদের ফেলে আসবে না।’

আমার অনুজ সাহসী আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজ আদর্শ হয়ে উঠেছে। এ কারণেই ওকে স্মরণ করছে বিশ্বের মানুষ। আমরা যাঁরা ফারাজকে চিনতাম, তাঁদের কাছে এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। ও সব সময় অগ্রণী ছিল। আদর্শ নিয়ে চলত। খুব ছেলেবেলা থেকেই সবচেয়ে দুরূহ চ্যালেঞ্জ নিতে পিছপা হতো না।

আমাদের ‘ছোটু’
সহোদর হিসেবে যে জীবন আমরা কাটিয়েছি, তার স্মৃতিচারণাই কেবল করতে পারি আমি। ফারাজ বেঁচে থাকবে সাহসের প্রতীক হয়ে। কিন্তু আমার কাছে তো ও কেবলই আমাদের ‘ছোটু’। আমার ১ বছর ১০ মাসের ছোট ছিল। শেষ দিন পর্যন্ত আমরা একই ঘরে থাকতাম। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পাগলাটে ভক্ত ছিল ও। প্রিয় দলের খেলা দেখতে দেখতে আমাদের কোনো কোনো রাত ভোর হয়ে যেত। আমিও ম্যানইউর বড় ভক্ত, তবে ও ছিল ভিন্নমাত্রার ভক্ত। যে বছর ওকে হারালাম, সে বছরের এক রাতের কথা মনে পড়ছে। এফএ কাপের ফাইনাল চলছিল। ঘরে বসে ফারাজের সঙ্গে আমিও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বনাম ক্রিস্টাল প্যালেস দলের ম্যাচটি দেখছিলাম। ম্যানইউ ০-১ গোলে পিছিয়ে। ম্যাচের ৮১ মিনিটে হুয়ান মাতা গোল করামাত্রই ফারাজ ঘরময় ছুটে বেড়াতে লাগল। সে কী উল্লাস! খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। ১১০ মিনিটে ইউনাইটেডের হয়ে জয়সূচক গোলটি করল লিনগার্ড। ফারাজ মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল, আনন্দে কাঁদতে লাগল হাপুস নয়নে! সে সময় ওর কাণ্ড দেখে খুব হেসেছিলাম। কিন্তু এখন মুহূর্তটি মনে পড়লে উপলব্ধি করি, ফারাজ যখন যা ভালোবাসত, তখন তা হৃদয় উজাড় করেই ভালোবাসত। সেই ভালোবাসা হতে পারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য, হতে পারে ওর বন্ধুবান্ধব কিংবা ওর পরিবারের জন্য। যাঁর বা যাঁদের জন্যই হোক, ওর ভালোবাসা ছিল নিখাদ।

নানি শাহনাজ রহমান ও নানা লতিফুর রহমানের সঙ্গে ফারাজ।
নানি শাহনাজ রহমান ও নানা লতিফুর রহমানের সঙ্গে ফারাজ।

এমোরির দিনগুলো

পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এমোরি ইউনিভার্সিটিতে যেদিন পাড়ি জমালাম, সেদিনই জীবনে প্রথমবারের মতো সত্যিকার অর্থে আলাদা হলাম আমরা। দিনটির কথা খুব মনে আছে। আমার ফ্লাইট ছিল গভীর রাতে। ছোটু আমাকে সারাটা দিন শোনাচ্ছিল, কীভাবে ও প্রথমবারের মতো আমাদের ঘরটায় নিজের মতো করে সময় কাটাবে। কী করে পুরো বাসায় রাজত্ব করবে আমার অনুপস্থিতিতে। কিন্তু যে-ই না আমি গাড়িতে উঠে বসলাম, ও ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করল; অমন করে কাঁদতে ওকে আর কখনোই দেখিনি। ওই বিচ্ছেদের অভিজ্ঞতা আমাদের কল্পনাতেও ছিল না। বছর দুয়েক পর ওর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় এল। জানতাম, এমোরিতে আসার জন্য এবং আবারও একসঙ্গে থাকার জন্য ও একপায়ে খাড়া। কনকনে শীতের সে রাতের কথাও তো ভুলতে পারব না। যে রাতে ও ফোন করে জানাল, এমোরিতে সুযোগ হয়েছে। আমার ঠিক মনে আছে, খবরটি শুনে আঁধার রাতে ক্যাম্পাসে ছুটে বেড়িয়েছি আমি। আর চিৎকার করে উচ্চারণ করেছি, ‘দিস ইজ দ্য বেস্ট ডে অব মাই লাইফ!’ পরিবারের প্রিয় মানুষদের কাছ থেকে দূরে থেকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার একসঙ্গে আমরা কত–না চমৎকার সময় কাটিয়েছি! রাত জেগে উপভোগ করেছি ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ওই মহাকাব্যিক ম্যাচ, যে ম্যাচে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে হারাল। ওর পুল-আউট বেড আমার শোবার ঘরে নিয়ে আসা হয়েছিল। ও যাতে যখন ইচ্ছা আমার সঙ্গে থাকতে পারে।

এমোরিতে আমাদের একসঙ্গে থাকাকালীন সবচেয়ে সুখের স্মৃতিতে ঘেরা দিনটি ছিল ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল। সেদিন ছিল ফারাজের জন্মদিন। কোনো এক কারণে সেবার চেয়েছিলাম খুব ঘটা করে ওর জন্মদিনটা উদ্‌যাপন করব, যা মনে থাকবে সারা জীবন। সে সময় দুই চাকার হোভারবোর্ডগুলো দারুণ জনপ্রিয় ছিল। আমি জানতাম ফারাজ ওটা পেলে খুব খুশি হবে। জন্মদিনে সারপ্রাইজ দেব বলে তিন–তিনটি মাস ওকে বোঝাতে হয়েছে যে এ জিনিস কেনার কোনো অর্থই হয় না। জন্মদিনের রাতে ওর এবং আমার বন্ধুদের নিয়ে আটলান্টায় একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। অনুষ্ঠান শেষে সে রাতে ও আমাকে বলেছিল, ‘এটাই আমার জীবনের সেরা জন্মদিন!’ কে জানত, ওটাই ছিল ফারাজের শেষ জন্মদিন!

ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে ওল্ড ট্রাফোর্ড স্টেডিয়ামে ফারাজ ও যারেফ।
ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে ওল্ড ট্রাফোর্ড স্টেডিয়ামে ফারাজ ও যারেফ।

ওর বন্ধুরা আমাদেরও বন্ধু

যেসব বন্ধুর সঙ্গে ফারাজের আত্মার সম্পর্ক ছিল, ওরা এখন আমার এবং আমার পরিবারেরও বন্ধু। আমরা আরও কাছে এসেছি ফারাজের প্রতি ভালোবাসার কারণে। এখন ফারাজের বন্ধুরা অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় আরও ঘনিষ্ঠ। কেউ কেউ তো আমার খুব ভালো বন্ধুও হয়ে উঠেছে।

২০১৬ সাল থেকে ফারাজ আর এমোরিতে যায় না। কিন্তু এমোরি ওকে কখনোই ভুলবে না। প্রতিষ্ঠানটি প্রাক্তন ছাত্র ফারাজকে নিয়ে গর্ব করে। তারা একটি কক্ষের নামকরণই করেছে ‘হোসেন-কবির রুম’ নামে। এমোরি ফারাজকে স্নাতক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির গয়জুয়েতা স্কুল অব বিজনেস চালু করেছে ‘ফারাজ হোসেন কোর ভ্যালুজ অ্যাওয়ার্ড’। এমনকি ইমোরির তিন সম্মানিত ডিন বাংলাদেশে এসেছিলেন। তাঁরা এসেছিলেন কেবল দেখতে, কোথায় তাঁদের প্রিয় প্রাক্তন ছাত্রটি বেড়ে উঠেছে। এর ফলে ফারাজের সঙ্গে এমোরির হৃদ্যতা পেয়েছে নতুন এক মাত্রা।

স্বপ্নের চেয়েও বড় কিছু

এমোরিতে পড়াশোনায় এবং নেতৃত্বেও আলো ছড়িয়েছিল। লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে ফিরে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থাৎ দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। আমি বিশ্বাস করি, ফারাজ ওই স্বপ্নের চেয়েও বড় কিছু করেছে। করপোরেট বিশ্বে যা করবে বলে ঠিক করেছিল, তা ও পেছনে ফেলেছে জীবন দিয়ে। ওর সাহসিকতা, বন্ধুত্ব ও মানবিকতা দেশ এবং দেশের বাইরের মানুষকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। ও যেভাবে মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছে, সাহসিকতার গুণে যেভাবে বিশ্বদরবারে সম্মানিত হচ্ছে, তাতে ভাই হিসেবে আমি দারুণ গর্বিত। ইতালির অলাভজনক সংগঠন গার্ডেন অব দ্য রাইচাস ওয়ার্ল্ডওয়াইড বা গারিও তিউনিসিয়া ও ইতালিতে ফারাজকে তুলে ধরেছে ন্যায়পরায়ণ নায়ক হিসেবে। প্রথমবারের মতো মরণোত্তর ব্যক্তি হিসেবে ভূষিত হয়েছে মাদার তেরেসা মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড ফর সোশ্যাল জাস্টিস সম্মাননায়। পেপসিকো ২০ বছরের জন্য প্রবর্তন
করেছে ‘ফারাজ হোসেন সাহসিকতা পুরস্কার’।

ইউনাইটেড গ্রুপ, হামীম গ্রুপ এবং বাংলােদশের কিংবদন্তিতুল্য ফুটবলারদের সংগঠন সোনালী অতীত ক্লাবের উদ্যোগে ফারাজ গোল্ড কাপের আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে তরুণেরা ফারাজের মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের প্রথম আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট। যা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য ভালো
ভূমিকা রাখবে। 

এমোরি প্রাঙ্গণে মায়ের সঙ্গে ফারাজ। যুক্তরাষ্ট্রের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগঠন ‘ফাই এটা সিগমা’য় অভিষিক্ত হওয়ার পর, ২০১৫।
এমোরি প্রাঙ্গণে মায়ের সঙ্গে ফারাজ। যুক্তরাষ্ট্রের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগঠন ‘ফাই এটা সিগমা’য় অভিষিক্ত হওয়ার পর, ২০১৫।

ফারাজের স্মৃতিতে প্রতিদিন

ফারাজ আজ বীর হিসেবে স্বীকৃত, আমরা গর্বিত। তবে ও তো আমাদের হৃদয়ে সব সময় মায়ের ছোট্ট ছেলেটি হয়েই বেঁচে থাকবে। থাকবে আদরের নাতি হিসেবে, প্রিয় ভাগনে-ভাতিজা হিসেবে। ও বেঁচে থাকবে সবার দেখভাল করা জ্ঞাতি ভাই হিসেবে। এবং অবশ্যই আমার জীবনের সঙ্গী হিসেবে। যদিও আমরা জানি, ও আমাদের ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে।

আমাদের মা, যিনি এক সত্যিকারের নায়ককে গড়ে তুলেছেন, তিনিও সব সময় তাঁর প্রিয় সন্তানের কথা স্মরণ করবেন। ওকে হারানোর এক মাস আগের কথা। মা ফারাজকে বলেছিলেন, তিনি ওকে নিয়ে কতটা গর্বিত। পড়াশোনায় অর্জনের কারণে নয়, মানুষের মতো মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠাই ছিল মায়ের গর্বের কারণ।

এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে হোসেন–কবির রুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লেখক, ২৯ মার্চ ২০১৭।
এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে হোসেন–কবির রুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লেখক, ২৯ মার্চ ২০১৭।

একটা দিনও যায় না যেদিন আমরা ফারাজকে স্মরণ করি না, কিংবা ওর অভাব বোধ করি না। ওর স্মৃতি আমাদের বুকের গভীরে যত্নে লালন করছি প্রতিদিন। ওর পছন্দের খাবার দেখলে ওকে মনে পড়ে। ওর প্রিয় গানের সুর ভেসে এলে আমরা স্মৃতিকাতর হই। মাঝেমধ্যে হেসেও উঠি, যখন আমাদের একসঙ্গে বেড়ে ওঠার দিনগুলোর কথা চোখে ভাসে।

ফারাজ আমাদের বিশেষভাবে  গর্বিত করেছে। আমরা আমাদের ছোটু, আমাদের প্রিয় ফারাজের স্মৃতি আজীবন যত্নে লালন করব। আমাদের ফারাজ  যে কীর্তি স্থাপন করে চলে গেছে,  বিশ্বের যত মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে,  তার মধ্য দিয়েই সে আমাদের মধ্যে  বেঁচে থাকবে।

লেখক: ফারাজ আইয়াজ হোসেনের বড় ভাই

ইংরেজি থেকে অনুবাদ: মাহফুজ রহমান