বাউবি নারীদের স্বাবলম্বী করছে

দুই সন্তানের মা রেহেনা বেগম এ বছর বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) রাজশাহীর নওহাটা কলেজ স্টাডি সেন্টার থেকে বিএ পরীক্ষা দিয়েছেন। বাঘমারার এক অজপাড়াগাঁয়ে থাকেন তিনি। শুক্রবার গৃহস্থালির কাজ শেষ করে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত ক্লাস করেছেন। ইচ্ছা, পাস করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হবেন।

প্রায় ৫০ বছর বয়সী ফারহানা বেগম গত বছর এইচএসসিতে ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছেন। এবার পাস করবেন বলেই জানালেন। বাউবি থেকে এসএসসি পাস করে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। তাঁর মেয়েও বাউবির এসএসসি পরীক্ষার্থী।

অনিতা রানীর সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে। তিনিও বাউবিতে পড়াশোনা করছেন। এইচএসসি পাস করে তিনিও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চান।

২২ বছর বয়সী মিলি এ বছর  রাজশাহীর পঙ্গু শিশু নিকেতন সমন্বিত অবৈতনিক কলেজ কেন্দ্র থেকে এইচএসসি দিয়েছেন। তিনি বাউবির এসএসসির সার্টিফিকেট কাজে লাগিয়ে স্থানীয় একটি এনজিওতে কাজ করার পাশাপাশি বাসায় মা–বাবাকে কাজে সহযোগিতা করেন।

অনুরূপা দেবী শিক্ষকতা করেন রাজশাহীর একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। তিনি বাউবির রাজশাহী সরকারি নিউ গভর্নমেন্ট কলেজ কেন্দ্র থেকে বিএসএস পাস করেছেন। চাকরির পাশাপাশি লেখাপড়ার সুযোগ পেয়ে তিনি আনন্দিত। বাউবি থেকে বিএড, এমএড করে নিজেকে আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে চান।

বাউবি থেকে ব্যাচেলর অব অ্যাগ্রিকালচারাল এডুকেশন (বিএজিএড) পাস করে মণিকা এখন কৃষি বিভাগের ব্লক সুপার ভাইজার। মোটরসাইকেলে চড়ে রাজশাহীর গ্রামে গ্রামে ঘুরে কৃষি বিষয়ে পরামর্শ দেন চাষিদের।

কণা স্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির পাশাপাশি ভর্তি হয়েছেন  বাউবির এমবিএ প্রোগ্রামে। এমবিএ সম্পন্ন করলেই একটা পদোন্নতি পাবেন।

সোহানা এনজিওতে উচ্চতর পদে চাকরি করেন। বাউবিতে মাস্টার্স অব পাবলিক হেলথ চালু হয়েছে জেনে তিনি এসেছেন বাউবির রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্রে।

এভাবেই নারী শিক্ষার্থীরা বাউবির মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন বা হচ্ছেন। ফিরে পেয়েছেন নিজেদের নতুন জীবন।

মেজবাহ উদ্দিন
গবেষক ও লেখক
আঞ্চলিক পরিচালক, বাউবি, রাজশাহী