কেকের মধ্যেই শহীদ মিনারের ইতিহাস

কেকের মধ্যেই শহীদ মিনারের ইতিহাস
কেকের মধ্যেই শহীদ মিনারের ইতিহাস

কালো রঙের ওপর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের ১৪৪ ধারা অমান্য করে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন ইতিহাস দিয়ে পাঁচ লেয়ারে বানানো পুরো জিনিসটি হচ্ছে একটি কেক। এই কেকের মাধ্যমেই বিশ্বের কাছে শহীদ মিনারের ইতিহাস তুলে ধরেছেন সুলতানা রাজিয়া (নাজনীন)। তিনি নাজনীন’স কালিনারী স্টুডিওর কর্ণধার এবং প্রধান প্রশিক্ষক।

রাজধানীর ধানমন্ডির ২৭ নম্বরে স্টুডিওতে বসে সুলতানা রাজিয়া বললেন, যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী কেক আর্টিস্ট তাসনুতা আলম ‘ম্যাগনিফিসেন্ট বাংলাদেশ : অ্যান ইন্টারন্যাশনাল কেক আর্ট কোলাবোরেশন’–এ অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। বেশ কয়েক মাস তাঁর নেতৃত্বে কাজ চলতে থাকে। এই কোলাবোরেশনটি ছিল কেক শিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা। এতে বাংলাদেশি ছাড়া অন্যান্য দেশের কেক আর্টিস্টরাও কেকের মধ্যে বাংলাদেশকে তুলে ধরেন।

সুলতানা রাজিয়া জানান, এ কোলাবোরেশনে তিনি একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরতে শহীদ মিনার কেক তৈরি করেন। কোলাবোরেশনের কেকগুলো গত বছরের ১ ডিসেম্বর একযোগে অনলাইনে প্রকাশ করা হয়।

সুলতানা রাজিয়া বললেন, ‘আমার শহীদ মিনার কেকটি শুধু বিশ্বব্যাপী ২১ ফেব্রুয়ারির শোকাবহ ঘটনা ও গৌরবগাথা তুলে ধরার জন্য বানানো হয়েছে। এই কেক ডামি ও খাওয়ার যোগ্য মিডিয়াম দিয়ে ডেকোরেশন করলেও ভাষাশহীদদের ও শহীদ মিনারকে সম্মান জানিয়ে তা কাটা হয়নি বা কখনো কোনো অনুষ্ঠানে তা কাটার জন্য এ ধরনের কেক বানানো হয় না।’

কেক বানানোয় ব্যস্ত সুলতানা রাজিয়া।  ছবি: সংগৃহীত
কেক বানানোয় ব্যস্ত সুলতানা রাজিয়া। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে বিয়ে হয় রাজিয়া সুলতানার। বিয়ের পর থেকেই স্বামী রাইয়ান জামিল সালমান একটি স্টুডিও বানিয়ে কাজ শুরু করার উৎসাহ দিতে থাকেন। রাজিয়া সুলতানা ব্যাচেলর অব ফার্মাসিতে পড়াশোনা করেছেন। ‘ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি’তে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমবিএ করেছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন আইডিয়াল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে শিক্ষকতা করছেন আট বছর ধরে।

রাজিয়া সুলতানা জানালেন, আন্তর্জাতিক মানের স্টুডিও তৈরির কাজ চলছে, আগামী বছরই এ স্টুডিওতে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন নারীরা। এতে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জন্যও বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া দেশীয় খাবারগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত এবং জনপ্রিয় করানোর কাজ করছেন। রাজিয়া সুলতানা চান, বাংলাদেশিরা যেমন বিভিন্ন দেশে গিয়ে কেক বা অন্যান্য রান্নার প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন, একদিন বিদেশিরাও বাংলাদেশে আসবেন বাংলাদের জনপ্রিয় রান্নাগুলো শেখার জন্য।