কমনওয়েলথ যুব পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় বাংলাদেশের শেখ ইনজামামুজ্জামান

এ বছরের কমনওয়েলথ যুব পুরস্কারের জন্য ১২টি দেশের ১৬ জন অসাধারণ উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও অধিকারকর্মীর সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ওই তালিকায় বাংলাদেশ থেকে স্থান পেয়েছেন শেখ ইনজামামুজ্জামান। তিনি তাঁর ‘স্টাডি বাডি’ প্রকল্পের জন্য এশিয়া অঞ্চল থেকে বিচারকদের রায়ে তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

কমনওয়েলথের তথ্য অনুযায়ী, এসডিজি-৪ বা মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কাজের উদ্যোগ হিসেবে ওই তালিকায় স্থান পেয়েছেন শেখ ইনজামামুজ্জামান। স্টাডি বাডি মূলত একটি স্টার্টআপ, যা বাচ্চাদের শেখার অসুবিধা সব দূর করে এবং তাদের মা-বাবার একটি বিকল্প শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। এতে বিভিন্ন ইন্টার–অ্যাকটিভ পদ্ধতি, যেমন অগমেন্টেড রিয়্যালিটি ও গেমিংয়ের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিশুদের যাচাই করা হয় এবং তাদের উপযোগী শিক্ষাপদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। কোন শিশুর জন্য কোন টুল ও বিশেষ পেশাদার ব্যক্তি প্রয়োজন, তা এর মাধ্যমে ঠিক করা হয়। এ কর্মসূচি এখন পর্যন্ত ৮০০ শিশু ও ১ হাজার অভিভাবককে সহযোগিতা করেছে।

কমনওয়েলথের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চারটি আঞ্চলিক ক্যাটাগরির জন্য একটি প্যান-কমনওয়েলথ বিচারক প্যানেল গত সপ্তাহে বৈঠক করে শীর্ষ ১৬ ব্যক্তিকে বাছাই করেছে। এ পুরস্কারের জন্য এ বছর ৪০টি দেশ থেকে ৫০০টির বেশি আবেদন জমা পড়ে। সংক্ষিপ্ত এ তালিকা থেকে চারটি অঞ্চলের শীর্ষ চার আঞ্চলিক বিজয়ীকে ‘কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার’ ২০২০ ঘোষণা করা হবে।

শীর্ষ ১৬–তে থাকা প্রতিযোগীরা প্রত্যেকেই একটি করে ট্রফি, সনদ ও এক হাজার পাউন্ড করে অর্থ পুরস্কার পাবেন, যা তাঁদের উদ্যোগে কাজে লাগবে। এ ছাড়া বিজয়ীরা আগামী ১১ মার্চ লন্ডনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং তিন হাজার পাউন্ড করে পাবেন। সব মিলিয়ে প্যান কমনওয়েলথ বিজয়ীরা ৫ হাজার পাউন্ড অর্থ পাবেন।

বিচারক প্যানেলের মধ্যে ছিলেন হাইকমিশনার, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও কমনওয়েলথ জুড়ে তাকা তরুণ নেতৃত্বরা।

এ পুরস্কার তরুণদের অসামান্য উদ্ভাবনের স্বীকৃতি দেয়, যাতে তাঁদের উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করার ক্ষেত্রে সত্যিকারের প্রভাব ফেলে।

কমনওয়েলথ পুরস্কারের জন্য ১৬ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছেন নাইজেরিয়ার জশুয়া এবিন। তিনি কৃষিপ্রযুক্তি নিয়ে নিজের উদ্যোগ গড়ে তুলেছেন। তাঁর উদ্যোগের নাম জুমেলা লিমিটেড, যা প্ল্যান্টভিত্তিক নাইজেরিয়ায় কম্পোস্ট তৈরিতে কাজ করে। উগান্ডার গালাবুজি ব্রায়ান কাকেমবো। তিনি কাজ করছেন ইউউয়ি ক্লিন এনার্জি নামের একটি উদ্যোগ নিয়ে। তানজানিয়ার সালভেটরি কেসি কাজ করছেন মানসম্মত শিক্ষা নিয়ে নিয়ে। তাঁর উদ্যোগের নাম স্মার্ট ক্লাস। কেনিয়ার এলিজাবেথ ওয়ানজিরু ওয়াতহুতি কাজ করছেন জলবায়ু নিয়ে। তাঁর উদ্যোগের নাম গ্রিন জেনারেশন ইনিশিয়েটিভ, যা পরিবেশবিষয়ক শিক্ষা দেয়।

এশিয়া অঞ্চল থেকে এ তালিকায় আরও রয়েছে ভারতের বেদান্ত জৈন, তিনি মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছেন। এ তালিকায় আরও আছেন পাকিস্তানে জয়া রাজওয়ানি। তিনি লিঙ্গসমতা নিয়ে কাজ করছেন। এ তালিকায় পরিষ্কার পানি ও স্যানিটেশন প্রকল্পে রয়েছেন পাকিস্তানের আরেক উদ্যোক্তা হাফিজ ওসামা তানভির। ক্যারিবিয়ান ও কানাডা অঞ্চল থেকে জলবায়ু নিয়ে গায়ানার ললিতা গোপাল, লাইফ অন ল্যান্ড বিভাগে কানাডার সোমিয়ান জেগাথিশন, জ্যামাইকার স্টেফান ম্যাককুবিন, স্যামুলেন নিল, প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে ফিজির সাগুফতা জানিফ, ব্রডেরিক জন মারভিন, রিনেশ শর্মা ও সামোয়ার ফুসি মাসিনা তেইতের নাম রয়েছে।