মেয়েকে বানাবেন পুলিশ

মণিকা মজুমদার মাছ কেটে সংসার চালান, তাঁর প্রায় পুরো জীবনই কেটে যাচ্ছে এ কাজে। তবে তিনি চান মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে পুলিশ বানাবেন।  ছবি: আবদুস সালাম
মণিকা মজুমদার মাছ কেটে সংসার চালান, তাঁর প্রায় পুরো জীবনই কেটে যাচ্ছে এ কাজে। তবে তিনি চান মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে পুলিশ বানাবেন। ছবি: আবদুস সালাম

কারওয়ান বাজারের মাছের আড়তে মাছ কাটেন মণিকা মজুমদার। এটাই তাঁর পেশা, আর এ কাজে সাহায্য করেন তাঁর স্বামী। ৩২ বছর বয়সী বরিশালের মেয়ে মণিকার প্রেম করে বিয়ে হয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে—সঞ্জয় মজুমদারের সঙ্গে। সঞ্জয় ভারতের চব্বিশ পরগনায় যখন একটি দোকানে কাজ করতেন, তখনই পরিচয় হয়েছিল মণিকার সঙ্গে।

প্রায় এক যুগ আগে কাজের আশায় এই সঞ্জয়-মণিকা দম্পতি ঢাকায় এসে প্রথমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। আর ছয় বছর ধরে কারওয়ান বাজারে মাছ কাটার কাজ করছেন। ভোর চারটা থেকে দুপুর পর্যন্ত এক দফা মাছ কাটার কাজ করে বাড়ি গিয়ে গোসল ও রান্নাবান্নার কাজ শেষ করে আবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করেন। মণিকার কোনো ছুটি নেই। তাঁর গড়পড়তা দৈনিক আয় ৫০০ টাকা।

মণিকা তাঁর স্বামীর সঙ্গে তেজগাঁওয়ের রেললাইনের পাশের একটি ঘরে থাকেন। তাঁদের একমাত্র সন্তান নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া সঙ্গীতা
থাকে তার নানা-নানির সঙ্গে। মেয়ে লেখাপড়া ও খেলাধুলায় ভালো। সঙ্গীতার ইচ্ছা সে পুলিশ হবে। আর মণিকা বললেন, ‘মেয়ের ইচ্ছা পূরণ করতেই কষ্ট করছি। মেয়েই আমাদের ভরসা।’

মণিকা যে জায়গায় বসে মাছ কাটেন, তার ভাড়া বাবদ দৈনিক ২০০ টাকা দিতে হয়। তিনি বলেন, ‘আমার তেমন কোনো খরচা নাই। দিনে একটু পান খাই মাছের গন্ধ থেইকা বাঁচতে।’ মণিকা সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। তিনি চান তাঁর মেয়ে যত দূর ইচ্ছা পড়ুক, যা ইচ্ছা হতে চায় হোক। তিনি মেয়ের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ব্যাংকে টাকা জমান। ভবিষ্যতে ভালো কোনো ব্যবসা করার স্বপ্নও দেখেন মণিকা।