চেন্নাইয়ে করোনাবন্দী বাংলাদেশি হবু মায়েরা

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

আনোয়ারুল কিবরিয়া দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাবা হতে যাচ্ছেন। চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাঁর স্ত্রী (সামাজিক কারণে পুরো নাম-ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক) গত অক্টোবরে ভারতের চেন্নাই যান। চিকিৎসা চলতে চলতেই শুরু হয় করোনাভাইরাসের বিস্তার। বর্তমানে সেখানকার চিকিৎসক স্ত্রীকে দেশে ফেরার ছাড়পত্র দিয়েছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে যোগাযোগ জটিলতায় এই হবু মা দেশে ফিরতে পারছেন না।

আনোয়ারুল কিবরিয়া জানালেন, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তিনি যমজ সন্তানের বাবা হতে যাচ্ছেন। চলতি মাসের মধ্যে দেশে ফিরতে না পারলে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের উড়োজাহাজে চলাচলের যে নিয়মকানুন তাতে আটকে যাবেন স্ত্রী, ফলে চেন্নাইতেই সন্তান জন্ম দিতে হবে।

আনোয়ারুল কিবরিয়া জানালেন, শুধু তাঁর স্ত্রী নন, চেন্নাইতে চিকিৎসা শেষ করে দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন ৩০ জনের বেশি মা। প্রায় সবাইকে চলতি মাসেই ফিরতে হবে দেশে।

আনোয়ারুল কিবরিয়া নিজেও পাঁচ মাস ধরে বাংলাদেশে আছেন। জানালেন, অন্য পরিবারগুলোরও একই অবস্থা। চেন্নাইতে কেউ মা, শাশুড়ি বা কোনো আত্মীয় বা বেতনভুক্ত সহকারীর সঙ্গে আছেন। বেশির ভাগ নারীর সঙ্গেই কোনো পুরুষ সদস্য নেই।

চেন্নাই ও আশপাশে আটকে পড়া ৩০ জনের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ ৫৬ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আনোয়ারুল কিবরিয়া ৫ জুন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বরাবর ই-মেইল করেছেন। আটকে পড়া লোকজনের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করছেন তিনি।

আরেক ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ জানালেন, তিনিও যমজ সন্তানের বাবা হতে যাচ্ছেন।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে আছি।’ তাই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। আমরা ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে উদ্যোগ নিয়ে এ জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারব না। ইউএস বাংলার সঙ্গে কথা চলছে, তারা নির্দিষ্টসংখ্যক যাত্রী না পেলে বিশেষ সার্ভিস দিতে পারবে না।’

চেন্নাই ও এর আশপাশে আটকে পড়া এই অন্তঃসত্ত্বা নারী ও অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে শনিবার টেলিফোনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যত দ্রুত সম্ভব আটকে পড়া বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে, সে চেষ্টা করছি।’