করোনা বাল্যবিবাহকে উৎসাহিত করছে

রাশেদা কে চৌধূরী
রাশেদা কে চৌধূরী

দারিদ্র্য বিমোচন ও শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগতি—বাংলাদেশের এই দুই অর্জন বিশ্বস্বীকৃত। শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সব শিশুর স্কুলে আনা এবং বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষায় অগ্রগতি বাংলাদেশের একটি অর্জন। তবে কোভিড সেই অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি প্রবল বিপত্তি হিসেবে দেখা দিয়েছে। আর প্রকারান্তরে তা বাল্যবিবাহকে উৎসাহিত করছে। 

গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে একটি জরিপ করে বেসরকারি সংগঠন গণসাক্ষরতা অভিযান। জরিপে কোভিড-পরবর্তী সময়ে শিক্ষা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে পাঁচটি উদ্বেগ উঠে এসেছে। সেগুলো হলো, ঝরে পড়ার হার বাড়বে, অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কারণে শিশুশ্রম বাড়বে, বাল্যবিবাহের হার বাড়বে, এর সঙ্গে বাড়বে শিশু প্রসূতি মায়ের সংখ্যা, আর এর হাত ধরেই বাড়তে পারে অপুষ্টি। 

করোনাকালে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার যত বার্তা দিয়েছে, শিশু সুরক্ষার জন্য তত বার্তা দেয়নি। শিশুদের স্কুল বন্ধ আছে, এ সময়টায় তাদের প্রতি কেমন ব্যবহার করতে হবে, এ নিয়ে কোনো বার্তা চোখে পড়েনি। এ সময় বাল্যবিবাহ রোধ করার জন্যও কোনো প্রচার নেই। 

 আমাদের শিক্ষার ধরনটাই এমন যে যত ওপরে যাওয়া যায়, তত ব্যয় বাড়ে। যে বয়সে সাধারণত মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হয়, তখন তারা সাধারণত মাধ্যমিক স্তরে থাকে। সেখানে মেয়েদের জন্য অভিভাবকদের ব্যয় আছে। আর্থিকভাবে অনগ্রসর পরিবার করোনাকালে এই অনিশ্চয়তার মধ্যে এ ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম হচ্ছে না। এ কারণে বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে মেয়েরা। এ থেকে উত্তরণে শিক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ যথেষ্ট মাত্রায় বাড়াতে হবে। এর বিকল্প নেই। 


রাশেদা কে চৌধূরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক