'শুধু আইন প্রয়োগে সমস্যার সমাধান হবে না'

শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধে ও শিশু অপহরণকারীদের প্রতিরোধে কাজ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িত শিশুরা আরও কী ধরনের অপরাধ করছে, এদের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে তা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলছেন ডিবির উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।

কৃষ্ণপদ রায়
কৃষ্ণপদ রায়

প্রথম আলো: শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োগ করে এমন বেশ কয়েকটি অপহরণচক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। তাদের সম্পর্কে আপনারা কতটুকু ওয়াকিবহাল।
কৃষ্ণপদ রায়: শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি করাচ্ছে এমন কিছু অপরাধী আছে। অপহরণ করে শিশুকে বিকলাঙ্গ করে তাদের দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করাচ্ছে রাজধানীতে এই রকমের কদাচিৎ ঘটে। মুক্তিপণ, পাওনা টাকা ও চাঁদা আদায়ের জন্য শিশু অপহরণ করা হয়।
প্রথম আলো: ভিক্ষা করানো ছাড়া এসব চক্র শিশুদের দিয়ে আর কী কী করায়?
কৃষ্ণপদ রায়: শিশুদের দিয়ে মাদক, অস্ত্র বহন করানোই নিরাপদ ও লাভজনক অপরাধীদের জন্য। তাই অপরাধীরা ভিক্ষাবৃত্তির চেয়ে শিশুদের দিয়ে মাদক ও অস্ত্র বহনে ঝঁুকে পড়ছে। এ কাজে নিয়োজিত শিশুরা তাৎক্ষণিক নগদ টাকা হাতে পাওয়ায় তারা এ কাজেও আগ্রহী। শিশু হওয়ায় এটা যে অপরাধ তারা তা বোঝে না।
প্রথম আলো: অপহরণচক্র ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কখনো পদক্ষেপ নিয়েছে?
কৃষ্ণপদ রায়: সন্দেহভাজন শিশু অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। যার ফলে অপহরণকারী গ্রেপ্তারও হচ্ছে।
প্রথম আলো: এদের একেবারে নিমূর্ল করা সম্ভব হচ্ছে না কেন? আপনার কি মনে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ব্যাপারে আরও তৎপর হওয়া উচিত?
কৃষ্ণপদ রায়: শুধু আইন প্রয়োগে সমস্যার সমাধান হবে না। ভিক্ষাবৃত্তি একটি সামাজিক ব্যাধি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ শিশু অপহরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে নির্মূল করা কষ্টকর। তবে শিশুকে ভিক্ষাবৃত্তিতে উৎসাহিত ও নিয়োজিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রথম আলো: গত বছরে প্রণীত শিশু আইনে বলা আছে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো শিশুকে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়োগ করেন বা ভিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়োগে উৎসাহ দেন তাহলে ওই ব্যক্তিকে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এ আইনের প্রয়োগ কি হয়েছে কখনো?
কৃষ্ণপদ রায়: গত দুই বছরে রাজধানীতে এ আইনের প্রয়োগ হয়েছে বলে মনে পড়ছে না।
প্রথম আলো: কেউ কি আইনের আওতায় এ পর্যন্ত শাস্তি পেয়েছে?
কৃষ্ণপদ রায়: সাধারণত বিচারকার্য সম্পন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘ হয়। বিচারকাজ শেষে রায় দেওয়া হলে অনেক ঘটনাই পুলিশ জানে না। তাই এ ধরনের পরিসংখ্যান আমার কাছে নেই।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নজরুল ইসলাম