নিখোঁজ ছয় নাবিকের সন্ধানে

মালয়েশিয়ার লমুট বন্দর থেকে রওনা হওয়ার পর ৩ জুলাই আন্দামান সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশের জাহাজ 
এমভি হোপ। ক্যাপ্টেন রাজীব চন্দ্র কর্মকার বেতারবার্তায় অন্য জাহাজের ক্যাপ্টেনদের বিষয়টি জানান। কথাও বলেন
মালিকপক্ষের লোকজনের সঙ্গে। জানতে পারেন, অদূরে আসছে বাক্সমুন নামের একটি বাতিল (স্ক্র্যাপ) জাহাজ। ৪ জুলাই
প্রথম প্রহরে ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজটি দুলতে থাকে। আস্তে আস্তে কাত হতে থাকে। নাবিকদের ধারণা, জাহাজে থাকা
সিরামিকশিল্পের কাঁচামাল একদিকে সরে আসার কারণে কাত হয়ে যায় এমভি হোপ। প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কাত হওয়ার পর
হঠাৎ জাহাজের মূল ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। ক্যাপ্টেন নাবিকদের রক্ষার জন্য জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। এরপর
সাগরে ঝাঁপ দেন নাবিকেরা।
সাগরে ভাসতে থাকা নাবিকদের রক্ষায় প্রথমে এগিয়ে আসেন কাছাকাছি থাকা এমভি বাক্সমুনের নাবিকেরা। ৪ জুলাই
সকালে একে একে পাঁচ নাবিককে টেনে তোলা হয় বাক্সমুন জাহাজে। এই পাঁচজন হলেন ডেক ক্যাডেট মোখলেছুর রহমান,
চতুর্থ প্রকৌশলী আবদুল হাকিম, নাবিক মো. রুবেল. মো. ওসমান ও সাইফুল ইসলাম। একই সময়ে থাইল্যান্ডের
নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার আবু বকর সিদ্দিককে সাগর থেকে টেনে তোলে। তাঁকে ভর্তি করা হয় ফুকেটের একটি
হাসপাতালে।
পরদিন জাহাজের দ্বিতীয় কর্মকর্তা মোবারক হোসেন, ডেক ক্যাডেট রাইক ফাইরুজ ও ইঞ্জিন ক্যাডেট মুশফিকুর রহমানকে
জীবিত উদ্ধার করা হয়। মৃত উদ্ধার করা হয় জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মাহবুব মোরশেদ ও প্রধান প্রকৌশলী কাজী
সাইফুদ্দিনকে।
বাকি নাবিকদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা এখনো জানা যায়নি। নিখোঁজ ছয় নাবিক হলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন রাজীব চন্দ্র
কর্মকার, দ্বিতীয় প্রকৌশলী মো. নেজাম উদ্দিন, ইলেকট্রিশিয়ান মো. সাদিম আলী, চিফ কুক নাসির উদ্দিন, নাবিক মো.
আলী হোসেন ও মো. নাসির উদ্দিন। এই ছয়জনের পরিবারে এখন শুধুই উৎকণ্ঠা। জাহাজের মালিকের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন
মহিউদ্দিন আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিখোঁজ ছয় নাবিককে উদ্ধারে আমরা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।’