একুশেই ব্যারিস্টার

শেহরিন সালাম। ছবি: খালেদ সরকার
শেহরিন সালাম। ছবি: খালেদ সরকার

‘মা-বাবার একমাত্র মেয়ে হওয়ায় অনেক আদরে বড় হয়েছি। দাদাবাড়ি ও নানাবাড়িতেও আমি খুব আদরের। এত আদরে বড় হলেও মা-বাবার কথামতো চলেছি। তাঁরা অপছন্দ করবেন, এমন কাজ কখনো করিনি।’ কথাগুলো ২১ বছর বয়সে ব্যারিস্টার হওয়া শেহরিন সালামের। ২০১২ সালে শেহরিন লন্ডনের সিটি ল স্কুল থেকে বার অ্যাট ল পাস করেন এবং কল টু দ্য বার (ব্যারিস্টার হিসেবে মনোনয়ন) নিয়েছেন লিংকন’স ইন থেকে।
ঢাকার গুলশানের বাসায় ৬ জুলাই এই কম বয়সী ব্যারিস্টারের সঙ্গে কথা হয়। কম বয়স হওয়ায় আশপাশের মানুষজন কেমন গুরুত্ব দেয়? জানতে চাইলে বেশ হেসে নিলেন তিনি। ‘আমি এমনিতে খুব হাসিখুশি। নিজে হাসতে আর অন্যকে হাসাতে পছন্দ করি। আমার চেহারার মধ্যে ‘সিরিয়াস’ ব্যাপারটা কম। অন্যদিকে বয়সও কম। সবাই নয়, কেউ কেউ মনে করেছেন আমি কতটা কাজ বুঝতে পারব। তাই নিজেই চেহারার মধ্যে ভাবগম্ভীর ভাবটা আনার চেষ্টা করছি। কাজের প্রয়োজনেই এটি দরকার। হাইকোর্টের আইনজীবী হওয়ার পাশাপাশি আমি ঢাকার লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিেজ শিক্ষকতা করি। এর আগে অবশ্য এখান থেকে এলএলবির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্ব পড়ি।’
শিক্ষকতাও খুব উপভোগ করেন শেহরিন। যে প্রতিষ্ঠানে একসময় শিক্ষার্থী ছিলেন এখন সেখানে শিক্ষকতা করছেন। এটি তাঁর কাছে গর্বের বিষয়ও। আরেকটি মজার বিষয় হলো, শেহরিন অনেক আগে পড়ালেখা শেষ করেছেন। কিন্তু তাঁর সহপাঠীরা এখনো পড়ছেন। এই প্রতিষ্ঠানে তিনি নিজেই তাঁর সহপাঠীদের শিক্ষক। প্রথম প্রথম বিষয়টিতে বিব্রতবোধ করলেও এখন মানিয়ে নিয়েছেন।
শেহরিনের বাবা বাংলাদেশের সাবেক ফুটবলার সালাম মুর্শেদী। বাড়িতে তাই খেলাধুলার চর্চা আছে। আর বাড়িতে বিকেলে সময় পেলে বাবা, ছোট দুই ভাই ইসমাম ও আইয়ানের সঙ্গে ফুটবল খেলেন। তাহলে আইনজীবী হতে চাইলেন কেন, খেলাধুলার দিকে না গিয়ে? শেহরিন বলেন, ‘আমার মা ছিলেন আইনের ছাত্রী। আমাদের জন্য ক্যারিয়ার গড়তে পারেননি। তিনি সব সময় চেয়েছিলেন আমি আইনজীবী হই। মায়ের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করেছি।’
শেহরিন শুধু আইনজীবী নন, এই কাজের পাশাপাশি তিনি বাবার প্রতিষ্ঠান এনভয় গ্রুপের পরিচালকও। একই সঙ্গে এত কাজ করতে শিখেছেন বাবাকে দেখে। ‘বাবা সবকিছু ভারসাম্য বজায় রেখে
করেন। বাবাও আমাকে সেভাবে কাজ শেখান। বাবাই আমার জীবনের আদর্শ।’