ম্যানচেস্টারের ট্রাফোর্ড সেন্টার

ট্রাফোর্ড সেন্টারের ভেতরের একটি অংশ।
ট্রাফোর্ড সেন্টারের ভেতরের একটি অংশ।

ম্যানচেস্টারের নান্দনিক কারুকাজের প্রাচীন দালানগুলো দেখলেই বোঝা যায় এই শহর অনেক পুরানো। আবার সর্বত্র আধুনিকতার ছাপও আছে। বছরজুড়ে পর্যটক, স্থানীয় ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের পদচারণে ব্যস্ত শহরটি।
এই শহরের দর্শনীয় একটি বিপণিবিতান ট্রাফোর্ড সেন্টার। ইংল্যান্ডের অত্যন্ত সৌন্দর্যমণ্ডিত আর কারুকাজ সংবলিত নান্দনিক বিপণিবিতান। মূল শহর থেকে একটু দূরে ট্রাফোর্ড এলাকায় এর অবস্থান। অত্যাধুনিক এই বিপণিবিতানে রয়েছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের নামীদামি সব দোকান।

সুদৃশ্য সিঁড়ির সামনে কয়েকজন।
সুদৃশ্য সিঁড়ির সামনে কয়েকজন।

যাঁরা ম্যানচেস্টার আসেন, তাঁদের খুব কমই এটা না দেখে ফেরেননি। প্রায় এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিপণিবিতানটি। সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক এই বিতানে রয়েছে সিনেমা হলসহ শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য পার্ক।
স্থানীয় ও নানা দেশের স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয়ে তৈরি ট্রাফোর্ড সেন্টার প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থীর পদচারণে মুখরিত থাকে। সেন্টারের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে মিসরীয় নারীদের আদলে সাদা ও গোলাপি পাথরে তৈরি মূর্তি। আলোর প্রতিফলনে মূর্তিগুলো সোনালি রঙে ঝলমল করে পুরো ট্রাফোর্ড সেন্টার। চারদিকে চীন, মিসর, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, মরক্কোসহ নানা দেশের স্থাপত্যশৈলীর সমাহার। রঙিন মার্বেল পাথরে চৌকস কারুকাজ যেকোনো দর্শনার্থীকে হাতছানি দেয়। আদি ও আধুনিকতার ছোঁয়া পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে।

মূর্তির সামনে পর্যটকদের ছবি সেশন।
মূর্তির সামনে পর্যটকদের ছবি সেশন।

ট্রাফোর্ড সেন্টার যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিপণিবিতান। ভবনের ওপর রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় বড় গম্বুজ। এর বাহারি নকশা আর শৈল্পিক কারুকাজ দেখলে অনেকটা মুসলিম স্থাপত্যের মতো মনে হয়। আলপনা দেখেও পর্যটকেরা মুগ্ধ হন। এখানে রয়েছে অনেকগুলো ভবন। একটি ভবনের নাম ম্যানচেস্টার আই। এর শীর্ষে উঠে দেখা যায় গোটা ম্যানচেস্টার শহর।
এই বিপণিবিতানে একবার দেখা পেয়েছিলাম বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে আসা সিলেটের বিশ্বনাথের ব্যবসায়ী শেখ আজাদের। আরও দেখা হয়েছিল লিভারপুল বাংলা প্রেসক্লাবের বেশ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে। তাঁরা ক্লাবের সভাপতি শেখ ছুরত মিয়ার নেতৃত্বে দল বেঁধে এসেছিলেন ট্রাফোর্ড সেন্টারে। বাঙালি অনেকে এখানে আসেন কেনাকাটা করতে বা দেখতে।
ম্যানচেস্টারে সারা পৃথিবী থেকে অসংখ্য মানুষ প্রতিবছর বেড়াতে আসে। সত্যিকার অর্থে ইউরোপ বড়ই মজার জায়গা। বিভিন্ন দিবসে তারা আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ে। তাদের উত্সবের সঙ্গে থাকে বিশাল শোভাযাত্রা। দুর্দান্ত পোশাকআশাক, উন্মাত্তাল গানবাজনা, বিয়ারের নেশা, ষাঁড়ের লড়াই, ঘোড়া ও কুকুরের দৌড়, হিজড়াদের নিয়ে উত্সবসহ বছরব্যাপী চলে নানা উত্সব।
এক কথায় বিচিত্রমুখী আয়োজন থাকে এই সব উত্সবে। নেচেগেয়ে রাতভর চলে আনন্দফুর্তি। এ সব আয়োজন দর্শনার্থীদের দেয় অতিরিক্ত আনন্দ। সময় ও সুযোগ হলে একা অথবা প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ট্রাফোর্ড সেন্টার থেকে। ম্যানচেস্টারে হোটেল থাকা ও খাওয়া লন্ডন কিংবা অন্যান্য শহরের চেয়ে অনেক কম।


মো. ফখরুল আলম
লিভারপুল, ইংল্যান্ড
<[email protected]>