আমিরাতে বাংলাদেশি জনশক্তির অভাবে সংকটে ব্যবসায়ীরা

ঢাকা স্টার রেস্তোরাঁ
ঢাকা স্টার রেস্তোরাঁ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির শিল্পনগর মোসাফফা। এখানে রয়েছে বাংলাদেশিদের গড়া অনেক প্রতিষ্ঠান। ঢাকা স্টার রেস্তোরাঁ এর একটি। মালিক, নবী সারোয়ার চৌধুরী। জন্ম চট্টগ্রামে। তাঁর সমস্যা, বাংলাদেশি জনশক্তির ঘাটতির কারণে তিনি ব্যবসা চালাতে পারছেন না।

মালিক নবী সারোয়ার চৌধুরীসহ কর্মচারীরা
মালিক নবী সারোয়ার চৌধুরীসহ কর্মচারীরা


বাংলাদেশিরা এই দেশে বিদ্যুত্ বিভাগে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন। সিংহভাগ বিদ্যুত্কর্মী ছিলেন বাংলাদেশের। এখনো সে সংখ্যা কম নয়। বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর সব জায়গায় তাঁরা দোর্দণ্ড গতিতে কাজ করে গেছেন। নির্মাণশ্রমিকরাও এ দেশে কাজ করে সুনাম কুড়িয়েছেন, কথাগুলো গর্বের।

এ ছাড়া গ্যারেজ, ওয়ার্কশপ, এসব জায়গায়ও তাঁদের কর্মকাণ্ড সম্মানের। বলা যায়, এই দেশের বেশির ভাগ ছোট ব্যবসা বাঙালিদের দখলে। কিন্তু বাংলাদেশি লোকের অভাবে এখন এসব জায়গায় ঠিকমতো কাজ চলছে না। নবী সারোয়ার এসবের সঙ্গে যুক্ত করলেন রেস্তোরাঁ ব্যবসার হাল হকিকত। তিনি জানালেন, তার নিজের রেস্তোরাঁয় এখন তিন-চার জন লোকের প্রয়োজন।

কিন্তু ভিসা বন্ধ থাকায় অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো তাঁরও সমস্যা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে ভারতীয়, পাকিস্তানি ও নেপালি কর্মী চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন তিনি। বললেন, এরা এ কাজে ভালো নয়। তার পরও নিতে হবে। মুখমণ্ডলে যেন তাঁর দুঃখের কালো মেঘ, প্রচণ্ড রকম বিস্ফোরণের প্রকাশ সঙ্গে সঙ্গে। বললেন, এর একটা সমাধান হওয়া উচিত।

এই রেস্তোরাঁর বৈশিষ্ট্য, সাধ্যের মধ্যে যে কেউ বাঙালিয়ানা খাবার খেতে পারেন। বিস্তৃত জায়গায় তিন লাইনে চেয়ার টেবিল সাজানো। সামনে বড় পর্দার টিভি। খাওয়ার পাশাপাশি টিভি অনুষ্ঠান উপভোগ করার ব্যবস্থাও আছে। পাশে ওয়ার্কার্স ভিলেজ। ওখান থেকে অনেক খরিদ্দার আসেন। নৈশভোজ, মধ্যাহ্নভোজ করেন তাঁরা। সকালে কেউ বা আসেন ডিম কিংবা ডাল-সবজি সমন্বয়ে গরম গরম পরোটা খেতে। রসগোল্লা, সন্দেশ, চমচম, দই বা রসমালাই খান অনেকে।

আমি যখন নবী সারোয়ারের সঙ্গে কথা বলছি, তখন আল গাজাল কোম্পানির একদল গাড়িচালক এলেন, তাঁরা বাংলাদেশি।

নবী সারোয়ারের কষ্টের প্রতিষ্ঠান এই রেস্তোরাঁ। এখন ১৮ জন তরুণ কাজ করছেন। কিন্তু প্রয়োজন কমপক্ষে ২১-২২ জনের। ফলে কাজগুলোর সঠিক বণ্টনে সমস্যা হচ্ছে। এতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না রেস্তোরাঁটি। এ কারণে ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়। নবী সারোয়ারই বললেন কথাগুলো।

নিমাই সরকার

আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত