বাঙালির বন্ধু কাজুও আজুমা

বিশ্বভারতীতে স্ত্রী ও সন্তানসহ কাজুও আজুমা। ছবিটি ১৯৭০ সালে তোলা
বিশ্বভারতীতে স্ত্রী ও সন্তানসহ কাজুও আজুমা। ছবিটি ১৯৭০ সালে তোলা

‘আমার পরম সৌভাগ্য যে এমন একজন ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য পেয়েছিলাম, যিনি ছিলেন একাধারে আমার গুরুজন, শিক্ষক ও অমায়িক বন্ধু। জাপানে আসার পর স্বপ্নেও কল্পনা করিনি এমন মানুষ আমারই প্রতিবেশী হবেন! এদোগাওয়া নদীর এপার-ওপারে আমাদের অবস্থান হবে।’
১৯৮৮-৮৯ সাল, জাপানি ভাষার অধ্যয়ন শেষ করে চাকরি করছি। একটি পত্রিকা প্রকাশ এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন করব, এই আমার পরিকল্পনা। তখন দু-একজন বাঙালির কাছে প্রথম জানলাম, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপানে এসেছিলেন। এটা আমার জানা ছিল না। কোথা থেকে এ তথ্য তাঁরা জেনেছেন জিজ্ঞেস করলে তাঁরা জানিয়েছিলেন, রবীন্দ্রগবেষক অধ্যাপক কাজুও আজুমার কাছ থেকে শুনেছেন। কিন্তু কে এই কাজুও আজুমা। একদম চিনি না, জানি না। কানে আসে তিনি মাঝে মাঝে বাঙালির বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশ দূতাবাসের সাংস্কৃতিক আয়োজনে উপস্থিত থাকেন। অনর্গল বাংলায় কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন। বাংলাদেশের পরম শুভাকাঙ্ক্ষী তিনি।
সেই সময় বাংলাদেশে এরশাদের শাসন চলছে। ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ এসব প্রায় নিষিদ্ধ। প্রগতিশীলতা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপিত। জাপানেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শক্তিশালী জিয়া, এরশাদ ও গোলাম আযমের সমর্থকেরা। বাংলাদেশে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি একটু একটু করে নব কলেবরে উত্থিত হচ্ছে। প্রবাসে আমরা স্বাধীনতা পক্ষরা ম্রিয়মাণ। এই সময় কে এই জাপানি রবীন্দ্রনাথের কথা বলেন! বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন! শুধু তিনিই নন, আরেকজন জাপানি অধ্যাপক, যিনি অধ্যাপক আজুমার মতোই বাংলা ভাষার পণ্ডিত এবং বঙ্গবন্ধুভক্ত অধ্যাপক নারার নামও কানে আসতে লাগল। আমি মনে মনে বেশ উত্ফুল্ল ও সাহসী হয়ে উঠলাম। তাহলে আমরা একা নই। সুদূর বিদেশেও আমাদের শক্তি তাহলে আছে! আর সেই অমেয় শক্তি হচ্ছে অন্ততপক্ষে দুইজন। তাঁরা বিখ্যাত দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। যাঁদের বেশ ভালো পরিচিতি ও অবস্থান রয়েছে এ দেশে। মনে মনে ভাবছিলাম, তাঁদের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। সত্যের জয় হবে। আমরা জয়ী হবই।

২০০৭ সালে কলকাতায় রবীন্দ্র পুরস্কার গ্রহণ করছেন কাজুও আজুমা
২০০৭ সালে কলকাতায় রবীন্দ্র পুরস্কার গ্রহণ করছেন কাজুও আজুমা

১৯৮৯ সালের গ্রীষ্মকালে এক অপরাহ্নে তাঁর সঙ্গে আমার অকস্মাত্ পরিচয় মেট্রো ট্রেনের ভেতরে! সেদিনই একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে প্রথম দেখি। ফেরার পথে আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে তিনি আমার পাশেই এসে বসলেন আরও আসন খালি থাকা সত্ত্বেও। অত্যন্ত সুস্পষ্ট বাংলায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি বাঙালি? বাংলাদেশ থেকে এসেছেন?’
বলা বাহুল্য, তখন প্রচুর বাংলাদেশি জাপানে। আমাদের মুখের আদলই বলে দেয় আমরা কে। হয় বাংলাদেশি অথবা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি। সুতরাং তাঁরও ভুল হয়নি, ঠিকই ধরেছেন আমি বাংলাদেশ থেকেই এসেছি, ভদ্রতার খাতিরে প্রশ্নের ঢংয়ে তাঁর বলা।
আমি বললাম, ‘আপনি ঠিকই ধরেছেন, আমি বাংলাদেশের বাঙালি।’
তিনি বললেন, ‘আমার নাম আজুমা। ত্সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ভাষা ও সংস্কৃতি পড়াই।’
আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। আকাশি নীল রঙের স্যুটকোট পরা অত্যন্ত স্মার্ট ধবধবে ফরসা এক ব্যক্তিত্বশালী মানুষ। এত চমত্কার বাংলা বলছেন যে, অভিভূত না হয়ে পারলাম না!
আমি কী করি এ দেশে, বাংলাদেশে বাড়ি কোথায়, রবীন্দ্রনাথ কতটুকু পড়েছি, বঙ্গবন্ধুকে কতখানি চিনি ইত্যাদি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। যথাসম্ভব উত্তর দিলাম। তারপর এ কথা-সে কথায় স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ উঠল। তখন আমাকে প্রশ্ন করে বসলেন বেশ উত্তেজিত কণ্ঠে, ‘আপনারা কেন বঙ্গবন্ধুকে খুন করলেন? কী অপরাধ করেছিলেন তিনি? অপরাধ করে থাকলে বিচার করতেন, জেলে দিতেন, মারলেন কেন?’
আমি তো থ এমন একজন বিদেশির মুখে এই অভিযোগ শুনে! কী উত্তর দেব? আমি চুপ। তিনি তখন বললেন, ‘মহা অন্যায় করেছেন আপনারা। বাঙালি হয়ে বাঙালি জাতির পিতাকে হত্যা করেছেন! পাপ করেছেন! মহাপাপ!’
কণ্ঠে তাঁর প্রচণ্ড ক্ষোভ। তখন আমি বললাম, ‘ঠিকই বলেছেন স্যার। পাপ করেছি বলেই তো দেশে-বিদেশে প্রায়শ্চিত্ত করে চলেছি আমরা। করতে হবে সারাটি জীবন।’
এরপর তিনি আর কিছু বললেন না। নেম কার্ড বিনিময় করে ধন্যবাদ জানিয়ে নেমে গেলেন। দেখলাম নেমকার্ডে লেখা ত্সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। ডাকসাইটে ব্যাপার! কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি জাতীয় এবং জাপানের Massachusetts বলে পরিচিত।
এর পর ১৯৯১ সাল নাগাদ আজুমা স্যারের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাত্ হয়েছে প্রবাসী বাঙালি ও দূতাবাসের অনুষ্ঠানে। যদিও তিনি তখন কমই থাকতেন জাপানে। কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের স্বপ্ন ‘নিপ্পন ভবন’ তথা ‘জাপান ভবন’ প্রতিষ্ঠা ও গবেষণার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। যখনই জাপানে থাকতেন বাঙালির সংস্পর্শে কাটাতেন। রবীন্দ্রনাথ, বাঙালি ও বাংলাভাষা ছিল তাঁর সারা জীবনের আরাধনা। কিছুটা ঘনিষ্ঠতা হওয়ার পর ১৯৯১ সালে আমি মানচিত্র নামে বাংলা সাময়িকী প্রকাশ এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ, জাপান শাখা গঠন করি কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে। পত্রিকা তাঁকে পাঠাই, তিনি বাংলাদেশ ও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে দুটি প্রবন্ধ দেন প্রকাশের জন্য। বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন করেছি জেনে তার জন্য অভিনন্দিত করেন।

কাজুও আজুমার সঙ্গে লেখক
কাজুও আজুমার সঙ্গে লেখক

দুই বছর পর তাঁর গঠিত আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংস্থার উদ্যোগে টোকিওর গিনজা গ্যাস হলে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় সম্মেলন। এই সময় তিনি আমাকে এক রোববার তাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে সম্মেলনকে সফল করার জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও আমার পত্রিকার কর্মীদের সহযোগিতার অনুরোধ জানান। এটা ছিল আমার জন্য বিশাল গৌরবের!
সেদিন সারা দুপুর মাদাম কেইকো আজুমার নিজ হাতে রান্না করা চমত্কার সুস্বাদু বাঙালি খাবার খেলাম। ইলিশ ভাজি, ঝোল, সবজি ও মশুর ডাল, আতপ ভাতের সঙ্গে। তিনজনে অনর্গল বাংলায় গল্প করলাম দুধ-চা পান করতে করতে। সেদিন বুঝতে পারলাম এই দম্পতি কতখানি বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছেন।
তাঁরা দুজন ১৯৬৭-৭১ সাল পর্যন্ত শান্তিনিকেতনে ছিলেন। তখন বাংলাভাষাকে দারুণভাবে রপ্ত করেছেন। আজুমার দোতলা কাঠের বাড়ির সদর থেকে দোতলার শোবার জায়গা পর্যন্ত তাকভর্তি বই আর বই! সেটা দেখে আমি বিস্মিত না হয়ে পারিনি। প্রায় ১০ হাজার বাংলা বই! পত্রিকা, সংকলন ও সাময়িকীর কথা বাদই দিলাম। নিচতলার একটি কক্ষ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর লিখিত বই ও দলিলপত্রে ঠাসা। সেখানে কমপক্ষে ৫০০ বই আমি দেখেছি। ১৯৭২ সালে তাঁর গঠিত জাপান টেগোর সমিতির নানা কর্মকাণ্ডের ছবি ও সংবাদ, রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে গবেষণাকৃত বই, দলিলপত্র, কলকাতা, বাংলাদেশ ও শান্তিনিকেতনে গৃহীত ছবির অ্যালবাম দেখালেন। গ্রামকে গ্রাম ঘোরাঘুরি করার ছবি দেখে তাঁর সম্পর্কে আমার ধারণাই পাল্টে গেল সেদিন। তখনই তিনি পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রগবেষক আজুমাসান নামে এক কিংবদন্তি! যদিও বাংলাদেশে তাঁকে নিয়ে আদৌ আলোচনা হয়নি।
কিন্তু বাংলাদেশেও তাঁর বন্ধু ছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল হাই, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শেখ আহমেদ জালাল প্রমুখ। সবচেয়ে বড় বন্ধু ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু জাপানে সফরে এলে তাঁর দোভাষী ও সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে জাপানে জনমত গঠন করেছেন, চাঁদা তুলেছেন, স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশে গিয়েছিলেন।
সেই যে তাঁর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হলো, মৃত্যু পর্যন্ত তা অটুট ছিল। যদিও বা মাঝেমধ্যে সামান্য মনোমালিন্য হয়েছিল। উদার হূদয়ের মানুষ ক্ষমাশীলতার মূর্ত প্রতীক আজুমা স্যার সেসব ভুলে গিয়ে আবার ডেকে পাঠিয়েছেন। আমার জাপানি স্ত্রী কেইকো মাদামের কাছে বাংলাভাষা শিখেছে। ২০০০ সাল থেকে যখন তাঁর শারীরিক অসুস্থতা ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছিল প্রায় রোববারে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে ডাকতেন। সেই বাড়িটি এখন নেই, কত বিখ্যাত বাঙালি এই বাড়িতে অতিথি হয়ে কেইকো মাদামের বাঙালি আতিথেয়তা গ্রহণ করেছেন কত বছর ধরে, তার হিসাব নেই। জাপানে রবীন্দ্রপ্রচারে তাঁদের অবদানের শেষ নেই। বাংলাভাষা ও সংস্কৃতিকে তাঁরা এতটাই আপন করে নিয়েছিলেন যে অধ্যাপক আজুমা বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব, ছন্দ ও রামমোহন রায়ের গৌড়ীয় ব্যাকরণ নিয়ে গবেষণা করে সন্দর্ভ লিখেছেন। শুধু তা-ই নয়, জাপানিরা যাতে সহজে বাংলা ভাষা শিখতে পারে, তার জন্য পাঠ্যপুস্তক পর্যন্ত রচনা করেছেন। এমন ঘটনা আর কোনো দেশে কেউ করেছেন কি না, আমার জানা নেই। কেইকো মাদাম তোওহোও গাকুয়েন নামে একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষা শিখিয়েছেন জাপানিদেরকে।
সাম্প্রতিককালে রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাভাষা নিয়ে বিস্তৃতভাবে গবেষণা করেছেন এমন বিদেশি পণ্ডিত কাজুও আজুমার সমকক্ষ কেউ নেই বললে চলে। স্যার বেশ কয়েকজন জাপানি তরুণ ও তরুণীকে বিশ্বভারতীতে পাঠিয়েছেন বাংলাভাষা শেখা এবং সাহিত্য, রবীন্দ্রনাথ ও রামমোহনের ওপর গবেষণা করার জন্য। ঢাকাতেও পাঠিয়েছেন।
প্রতিবছর জাপানে আয়োজন করেছেন রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী। ১৯৯৪ সালে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের লালিত স্বপ্ন ‘নিপ্পন ভবন’ নামে জাপানি শিক্ষা অনুষদ প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন কলকাতার সল্টলেকে বিশাল ও সুদৃশ্য ভারত-জাপান সংস্কৃতিকেন্দ্র: রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবন। অনুরূপ বাংলাদেশ-জাপান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র একই সময়ে সিলেটে উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁর বিশ্বাসঘাতক শিষ্য ও দুর্বৃত্ত দারাদ আহমেদ বরাদ্দকৃত সমস্ত অর্থ আত্মসাত্ করে আজুমা স্যারের স্বপ্নকে হত্যা করেছে। জীবনের অন্তিম লগ্নে এসে তিনি সবচেয়ে বড় আঘাত পেলেন তাঁর প্রিয় বাংলাদেশ থেকে, যা আমরা কোনো দিন ভুলতে পারব না। অথচ তিনি জাপানে রবীন্দ্রপ্রচার এবং বাংলাভাষা ও সাহিত্যকে তুলে ধরার মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা রেখে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে বিদেশে উজ্জ্বল করেছেন। তাঁর উদ্যোগ ও তত্ত্বাবধানে ১২ খণ্ডে জাপানি ভাষায় প্রকাশিত রবীন্দ্র রচনাবলী এক কথায় একটি অমূল্য ঐতিহাসিক কাজ।
রবীন্দ্রনাথ, বাংলাভাষা, ভারতসভ্যতা গবেষণা এবং জাপান-ভারত মৈত্রীকে সুসংহত করার জন্য তাঁকে ২০০০ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় দেশিকোত্তম পদকে ভূষিত করে। ২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদান করে রবীন্দ্র পুরস্কার এবং জাপান সরকার কোক্কা কুনশোও তথা সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদকে সম্মানিত করে। এ ছাড়াও তিনি আরও অনেক পদক, পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন দেশ-বিদেশে। বাংলাদেশ থেকে বাংলা একাডেমির ফেলোশিপ প্রদানের ব্যবস্থা করার চেষ্টায় আমি সফল হই শ্রদ্ধেয় শামসুজ্জামান খানের বদান্যতায়, অন্যথায় বাংলাদেশ থেকে কোনো স্বীকৃতিই তিনি পেতেন না। তা-ও এটা তাঁর অবদানের তুলনায় নিতান্তই নগণ্য। জীবিতকালে সাক্ষাত্ হলেই বা ফোন করে বঙ্গবন্ধুর কন্যাদ্বয়ের খোঁজখবর নিতেন আমার কাছে। তাঁরা দুজন কতখানি সম্মান তাঁকে দিয়েছেন তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন।
বাঙালি ও বাংলাদেশের এমন অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে মৃত্যুর আগে উচ্চারণ করেছেন, ‘আবার জন্ম নিলে বাঙালি হয়ে জন্ম নিতে চাই।’ তাঁর মতো এমন কেউ আর জাপানে জন্ম নেবেন বলে মনে হয় না। তাঁর মতো করে বাংলাকে ভালোবাসার মানুষ এখন জাপানে আর কেউ নেই।

প্রবীর বিকাশ সরকার
টোকিও, জাপান