লন্ডনে বিয়ানীবাজার সমিতির রজতজয়ন্তী উত্সব

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন রুশনারা আলী, এমপি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন রুশনারা আলী, এমপি।

যুক্তরাজ্যে হাতে গোনা যে কটি সামাজিক সংগঠন নিজ নিজ কমিউনিটির কল্যাণে দীর্ঘকাল ধরে কাজ করেছে, তার মধ্যে অন্যতম বিয়ানীবাজার থানা জনকল্যাণ সমিতি, ইউকে। সম্প্রতি এই সংগঠন সাড়ম্বরে উদযাপন করল রজতজয়ন্তী।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২৫ বছর ধরে সংগঠনটি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ, উভয় জনপদে জনকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। সংগঠনের এই কল্যাণমুখী কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করলেন রজতজয়ন্তী উত্সবে যোগদানকারী অতিথি ও শুভানুধ্যায়িরা।

উত্সব অনুষ্ঠানের শুরুতে সকলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর খান। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সের সদস্য ও ছায়া শিক্ষামন্ত্রী রুশনারা আলী এমপি, বাংলাদেশের সাংসদ মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী, চ্যানেল এস-এর চেয়ারম্যান আহমেদ-উস-সামাদ চৌধুরী জেপি, বিচারপতি স্বপ্নারা খাতুন, সিলেট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বাবুরুল হোসেন, বিয়ানীবাজার থানা জনকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আশেক আহমেদ ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন, বিয়ানীবাজার ওফেলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে-এর সভাপতি ও অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন (আয়েবা)-এর প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান মুহিব, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক প্রমুখ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদ আহমেদের অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন।

আলোচকরা বলেন, কমিউনিটির কল্যাণে ২৫ বছর ধরে কাজ করে বিয়ানীবাজার থানা জনকল্যাণ সমিতি যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা অন্যান্য কমিউনিটি সংগঠনের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। প্রবাস জীবনের নানা ব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে দেশে ও প্রবাসে নিজ কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করে যাওয়া অনেক কঠিন। মাটি ও মানুষের প্রতি তাদের যে অঙ্গীকার তা নিঃসন্দেহে অন্যের জন্য অনুকরণীয়।

বক্তারা আরও বলেন, এই অনুষ্ঠান শুধু প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসীদের একত্রিত করেনি, সকল কমিউনিটির মানুষ একত্রিত হয়ে একটি সামাজিক সংগঠনের সাফল্যকে উদযাপন করছেন। এমন সফল আয়োজন ব্রিটেনে সামাজিক সংগঠনগুলোর জন্য মাইলস্টোন হয়ে থাকবে। রজতজয়ন্তী উত্সবের আয়োজন করায় তাঁরা আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

মাওলানা আশফাকুর রহমানের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এর পর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। সমিতির নেতৃবৃন্দকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ রজতজয়ন্তীর বিশেষ কেক কাটেন। সমিতির মৃত সদস্যদের রুহের মাহফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন মাওলানা জিল্লুর রহমান চৌধুরী। পরে সমিতির ওয়েবসাইট আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন বিচারপতি স্বপ্নারা খাতুন, ম্যাথসওয়ার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমদ ও রয়েল লন্ডন হসপিটালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. শফি আহমেদ।

অনুষ্ঠানে বিয়ানীবাজার থানা জনকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদেরকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। সাংস্কৃতিক সম্পাদক কবি ওয়ালি মাহমুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী গৌরী চৌধুরী ও তাঁর দল। সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ কয়েস আহমদ। সবশেষে অতিথিদের নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়।
শামসুল হক
লন্ডন, যুক্তরাজ্য