মাবিয়ার লক্ষ্য অলিম্পিক

মাবিয়া আক্তার, ছবি: অধুনা
মাবিয়া আক্তার, ছবি: অধুনা

পরিবারের সবার কাছে তাঁর নাম সীমান্ত। নামের যথার্থতা প্রমাণ করে দেশের সীমান্ত ছাড়িয়ে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়েছেন এশিয়ার অনেক দেশে। ওড়াতে চান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর অলিম্পিকে। তিনি ভারোত্তোলন খেলোয়াড় মাবিয়া আক্তার।
মাবিয়ার ভারোত্তোলনের শুরু ছিল শখের বসেই। মামা বক্সিং কোচ শাহাদাৎ কাজীর হাত ধরেই ভারোত্তোলনের মাঠে পা রাখা। ‘১২ বছর বয়সেই ভারোত্তোলনে যুক্ত হই। এই খেলায় নাম লেখানোর পেছনে মামার অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। মামাই প্রথম আমাকে ভারোত্তোলনের বার ধরতে শেখান। দুই বোন আর এক ভাইয়ের সংসারে আর কেউ খেলাধুলায় না এলেও মামাকে দেখেই খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়।’ বলেন তিনি। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিজের সাফল্যের প্রমাণ দিয়েছেন মাবিয়া।
দেশে প্রথম প্রতিযোগিতামূলক খেলায় মাবিয়া আক্তার অংশ নেন ২০১১ সালে। প্রথম আসরেই বাজিমাত। বাংলাদেশ জাতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ই জাতীয় সংগীত গেয়েছেন সাফল্যের সঙ্গে। মাবিয়া আক্তার নেপালে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক আসর সাফ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জপদক পান। ২০১৩ সালে মালয়েশিয়ায় কমনওয়েলথ ভারোত্তোলনে জুনিয়র বিভাগে রুপা ও ইয়ুথ বিভাগে ব্রোঞ্জ, ২০১৪ সালে থাইল্যান্ডের কিং কাপে ব্রোঞ্জ, উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশিয়া চ্যাম্পিয়ানশিপে রুপা এবং কাতারে ১৭তম এশিয়ান ইয়ুথ ভালোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে আল সাদ স্পোর্টস ক্লাবে ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে ১৫৮ কেজি তুলে ব্রোঞ্জপদক লাভ করেন।

পদক
পদক

মাবিয়া আক্তার বলেন, ‘বিদেশে পদক জেতার আনন্দই আলাদা। সামনে লক্ষ্য অলিম্পিকে পদক জেতা। অলিম্পিকে পদক জয় খুব কঠিন। তবে অসম্ভব নয়।’ ২০১৪ সালের জাতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় তিনটি জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন মাবিয়া।
মা গৃহিণী আক্তার বানু, বাবা ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ মেয়ের চলার পথে অনেক সাহস দেন। মাবিয়ার মা আক্তার বানু বলেন, আমি চাই আমার সন্তান যাই করুক, সেটা ভালোভাবে করুক। একই চাওয়া বাবা হারুণ অর রশীদেরও। মাদারীপুরের মেয়ে মাবিয়া আক্তারের বর্তমান অবস্থানে আসার পেছনে অনেকের অবদান রয়েছে। ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আনসারের ভারোত্তোলন কোচ মিজানুর রহমান তাঁদের মধ্যে অন্যতম। কাজল দত্ত আর ফারুক সরকারের তত্ত্বাবধানে মাবিয়া আক্তার অনুশীলন করছেন নিয়মিত। অলিম্পিকে ভালো করতে একজন ভারোত্তোলককে কম করে হলেও চার থেকে পাঁচ বছরের কঠোর অনুশীলনের মধ্যে থাকতে হয়। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন মাবিয়া আক্তার।