কেন এত প্রতিবন্ধী?

সিরাজগঞ্জ সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় মোট প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৪০ হাজার ১৩৭ জন। এর মধ্যে কাজীপুর উপজেলায় রয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার প্রতিবন্ধী। আর নাটুয়ারপাড়ার চরাঞ্চলে আছে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন! চর ও তাঁতশিল্প এলাকায় প্রতিবন্ধীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে প্রাথমিক জরিপের তথ্য থেকে জানা গেছে। সঠিক কারণ সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও চিকিত্সক ও সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্র থেকে বলা হয়েছে, আবহাওয়া, গর্ভবতী মায়েদের অসচেতনতা, সন্তান প্রসবকালীন সমস্যা ও পানির কারণে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা বাড়ছে। চর এলাকার লোকজনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জানা গেছে, চরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা মোটেও উন্নত নয়। চিকিৎ​সকদের শরণাপন্ন হতে পারেন না মাতৃত্বকালীন রোগীরা। তার ওপর দুর্বল যোগাযোগব্যবস্থা তো আছেই। ফলে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েন গর্ভবতী মায়েরা। প্রসবকালীন নানা রোগের সমস্যার কোনো সমাধানই মেলে না বলা চলে।

কয়েকটি মতামত
সন্তান প্রসবের মতো জটিল কাজটি করা হয় অদক্ষ ধাই দিয়ে। যে কারণে শিশুদের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। প্রয়োজনীয় মুহূর্তে অক্সিজেনের অভাবও একটা বড় সমস্যা। এ ছাড়া অবিশুদ্ধ পানি পান, মাতৃত্বকালীন পুষ্টির অভাবও প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম নেওয়ার বড় কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
গোলাম মোস্তফা
উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), সিরাজগঞ্জ সমাজসেবা অধিদপ্তর


প্রধানত প্রসবের সময় শিশুদের মাথায় চাপ বা আঘাত লাগলে প্রতিবন্ধী হতে পারে। সন্তান প্রসবে সমস্যা হলে তাকে প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করতে হয়। সেটা না করে জোর করে প্রসব করানো হলে শিশু ও মা—দুজনেরই ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া বংশগতভাবেও অনেক প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হতে পারে।
ফরিদা খাতুন
শিক্ষক, সিরাজগঞ্জ মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল


চরাঞ্চলে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা কেন বাড়ছে, এর সঠিক তথ্য নিরূপণ করা কঠিন। বিষয়টি নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন। তবে বেলকুচি, চৌহালীর তাঁতশিল্প এলাকার রঙের কারখানার সিসাযুক্ত বর্জ্য পানি নলকূপের পানির সঙ্গে মিশে যায়, আর তা পান করার ফলে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে এক জরিপে। তারপরও সঠিক তথ্যের জন্য সুনির্দিষ্ট অনুসন্ধানের প্রয়োজন।
মো. সামসুদ্দিন
সিভিল সার্জন, সিরাজগঞ্জ