জীবন গড়তে ব্যবসা

ইউনিলিভার বিজম্যাস্ত্রস ২০১৩-এর চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর পলিলক
ইউনিলিভার বিজম্যাস্ত্রস ২০১৩-এর চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর পলিলক

শিক্ষার্থীদের ব্যবসায়সংক্রান্ত তাত্ত্বিক জ্ঞানকে প্রায়োগিক জ্ঞানে রূপান্তরের লক্ষ্যে ইউনিলিভার বাংলাদেশ ‘বিজম্যাস্ত্রস’ নামের একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। শিক্ষার্থীদের ব্যবসায় জগতের বহুমুখী চ্যালেঞ্জের স্বাদ দিতে ইউনিলিভার বাংলাদেশ চতুর্থবারের মতো আয়োজন করল ‘বিজম্যাস্ত্রস ২০১৩’।

‘বিজম্যাস্ত্রস’-এর প্রথম পর্বে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা হয়, যেখানে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি করে মোট ১০টি দল নির্বাচন করা হয়। ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে এই ১০টি দল থেকেই তিনটি দল যায় গ্র্যান্ড ফিনালে রাউন্ডে। এই তিনটি দল থেকেই ‘বিজম্যাস্ত্রস ২০১৩’-এর বিজয়ী খেতাবপ্রাপ্ত দল হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর পলিলক, প্রথম রানারআপ হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দল অসাম এবং দ্বিতীয় রানারআপ হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর দল অভিনব।

চ্যাম্পিয়ন আইবিএ পলিলকের সদস্যরা হলেন আকিফ আহমেদ, সামান্তা সার্নি তিরা, নওয়াজুল কবির ও সাজিয়া মেরাজ।

প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে প্রতিযোগীরা ইউনিলিভারের বিভিন্ন ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করে। পরের পর্বগুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য তারা রাখে এক নতুন আয়োজন। বিচারকেরা প্রতিযোগীদের ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ১০টি দোকান নির্বাচন করে দেয় এবং একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ কাল্পনিক টাকা নির্ধারণ করে দেয়। প্রথম দিন তারা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দোকানগুলো সম্পর্কে ধারণা নেয় এবং পরে পছন্দের দোকান নির্বাচন করতে ১০টি দলের মধ্যে নিলাম হয়। নির্ধারিত টাকার মধ্যে তাদের দোকান কিনতে হয়, এলাকাভিত্তিক চাহিদা অনুমান করে পণ্য কিনতে হয়। তারপর পণ্য বিক্রির নতুন নতুন কৌশল প্রয়োগ করতে হয়। পরের দিন আবার দোকানগুলোতে গিয়ে তারা রিপোর্ট নেয় কেমন বিক্রি হলো, তাদের কৌশল কতটা কার্যকর হলো ও নির্ধারিত টাকায় কতটুকু পরিমাণ লাভ হলো। এই প্রতিযোগিতার একটি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম ছিল ‘পয়েন্ট অব সেলস’ (পিওএস), যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের পণ্য বিক্রির নানা রকম মাধ্যম নিজেরাই তৈরি করে দেখায়। এই সম্পূর্ণ কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য ছিল কোন দল তাদের নির্ধারিত অর্থ সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে এবং তার থেকে মুনাফা অর্জন করতে পারে।

বিজম্যাস্ত্রস-এর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজয়ী দলের সদস্য নাওয়াজুল কবির বললেন, ‘এটা খুবই মজার ছিল যদিও আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে, টানা তিন রাত অনেকটা না ঘুমিয়েই কাজ করেছি। শেষমেশ আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।’ ফলাফল ঘোষণার সময় খুবই টেনশনে ছিলেন টিম ‘পলিলক’-এর সদস্যরা। কারণ, প্রথম রানারআপ টিমের প্রেজেনটেশনের পর বিচারকদের মন্তব্য ছিল ‘তোমরা তো একেবারে ছক্কা মেরে দিয়েছ’! পরপরই টিম পলিলকের পালা। তাদের উপস্থাপনা শেষে বিচারকদের মন্তব্য ছিল, ‘ওরা যদি ছক্কা মেরে থাকে, তাহলে তো তোমরা বল একেবারে স্টেডিয়ামের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছ।’

সারা বাংলাদেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক, বুয়েট ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।