তারুণ্য ও জাতিসংঘ

জাতিসংঘ দিবসে তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময়
জাতিসংঘ দিবসে তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময়

দিনটি ছিল ২৪ অক্টোবর। জাতিসংঘ দিবস। সংস্থাটির বাংলাদেশে কর্মরত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মিলিত হবেন ওইদিন বিকেলে, ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। কিন্তু সকালেই একঝাঁক তরুণ-তরুণীর পদচারণা। ব্যস্ত ঢাকা জেগে ওঠার আগেই জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র, ঢাকা কার্যালয়ে উপস্থিত তাঁরা। তাঁরাও যোগ দেবেন জাতিসংঘ দিবসের সম্মিলনে। তরুণ-তরুণীর কয়েকজন এসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন বেশ কয়েকজন করে। চট্টগ্রামের ওই দলের সঙ্গে ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হারমান সালতন। তিনি ইতালির বাসিন্দা। কাজ করেছেন জাতিসংঘ সদর দপ্তরেও। এখন যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশে অধ্যাপনা পেশায়।

শুরুতেই তথ্যকেন্দ্রের নলেজ ম্যানেজমেন্ট কর্মকর্তা এম মনিরুজ্জামান সবাইকে স্বাগত জানিয়ে তরুণদের এই মিলনমেলার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেন।

তথ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী আলী রেজা জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বিভিন্ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরে বলেন, কেবল তরুণেরাই পারে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটাতে। তাই তরুণদের বেশি বেশি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা উচিত, সম্পৃক্ত হওয়া উচিত। তিনি বিভিন্ন দেশের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে রয়েছে তারুণ্যের বিশাল শক্তি, যা দিয়ে অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব। এ দেশে রয়েছে ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং টেস্ট ক্রিকেটে একই ম্যাচে হ্যাটট্রিক ও সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েছেন সোহাগ গাজী, হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়া এভারেস্ট আরোহী তরুণ-তরুণী। বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে আছেন সাবিরুল ইসলামের মতো আরও অনেক তরুণ উদ্যোক্তা।

এরপর উন্মুক্ত আলোচনায় আফগান-শিক্ষার্থী মাসুমা মাকসুদ বাংলাদেশের পল্লি অঞ্চলের উন্নয়ন সম্পর্কে জানতে চান। আলোচনায় উঠে আসে পল্লি অঞ্চলের উন্নয়নে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে অনেক গতি এসেছে। অনেকে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, কেউ কেউ সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে বলেন, গ্রামীণ জনপদের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে।

শিক্ষার্থীরা জাতিসংঘের কার্যক্রম নিয়ে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন।

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী শিক্ষক হারমান সালতনের কাছে জানতে চাইলেন, জাতিসংঘ সদর দপ্তরের মতো জায়গায় কাজ করার পর বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন। আপনার অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা কেমন। হারমান বলেন, ‘বাংলাদেশে কাজ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এখানে কাজ করার ক্ষেত্র ও গবেষণার ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত। এ দেশে অনেক কিছু করার আছে। সুতরাং এ দেশে উন্নয়নের নানা স্তরে তরুণদের ভূমিকা রাখার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমার শিক্ষার্থীদের এই সুযোগকে কাজে লাগাতে বলি।’

পরে শিক্ষার্থীরা জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র, ঢাকার গ্রন্থাগার ঘুরে দেখেন।