অ্যাসাঞ্জের 'আটক অবৈধ'
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ‘বলপূর্বক আটকাবস্থার শিকার’ বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘের একটি প্যানেল। তাদের মতে এই আটকাবস্থা ‘অবৈধ’। সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছে। খবর এএফপির।
বলপূর্বক আটক-সংক্রান্ত জাতিসংঘের প্যানেল আজ শুক্রবার অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে তাদের অনুসন্ধানের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে অ্যাসাঞ্জ ওই প্যানেলের কাছে সুইডেন ও ব্রিটেনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। তাতে দাবি করা হয়, লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে তিনি অবৈধভাবে ‘বলপূর্বক আটকের’ শিকার হয়ে আছেন। কেননা, সেখান থেকে বের হলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।
সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বলেছে, জাতিসংঘ প্যানেলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের একটি অনুলিপি তারা পেয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, অ্যাসাঞ্জের ‘আটক অবৈধ’।
সুইডেনের পক্ষ থেকে এ কথা জানানোর পর অ্যাসাঞ্জের সুইডিশ আইনজীবী পার স্যামুয়েলসন বলেছেন, জাতিসংঘ প্যানেলের এই সিদ্ধান্তের পর সংশ্লিষ্টদের উচিত তাঁর মক্কেলকে মুক্ত করে দেওয়া। সুইডেনের সরকারি কৌঁসুলি আদালতের কাছে অ্যাসাঞ্জের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ওই আইনজীবী।
এর আগে টুইটারে গতকাল উইকিলিকসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে অ্যাসাঞ্জ বলেন, ‘জাতিসংঘের প্যানেল যদি আগামীকাল (শুক্রবার) আমার বিরুদ্ধে রায় দেয়, তবে আমি দূতাবাস ছেড়ে চলে যাব। তখন ব্রিটিশ পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করতে পারে। কারণ, এরপর এ বিষয়ে আর কোনো আবেদনে অর্থবহ কোনো পরিবর্তনের আশা নেই।’
অ্যাসাঞ্জ বলেন, ‘রায় যদি আমার পক্ষে আসে এবং এটি প্রমাণিত হয় যে রাষ্ট্রপক্ষের কার্যক্রম অবৈধ, তবে আমি প্রত্যাশা করব, আমার পাসপোর্ট আমাকে ফেরত দেওয়া হবে। এ ছাড়া আমাকে গ্রেপ্তার করার যেকোনো চেষ্টাও বন্ধ হবে।’
তবে সুইডেনের সরকারি কৌঁসুলিরা বলেছেন, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগের ওপর তাঁদের তদন্তে ওই রায়ের কোনো প্রভাব পড়বে না। আর ব্রিটেন বলেছে, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যতক্ষণ ইউরোপীয় গ্রেপ্তার আদেশ বহাল থাকছে, ততক্ষণ তারা তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
২০১০ সালে কয়েক লাখ মার্কিন গোপন নথি ফাঁস করে সারা দুনিয়ায় হইচই ফেলে দেয় উইকিলিকস। এরপর ধর্ষণের অভিযোগে সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে জারি করা হয় ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।