সিরিয়ায় বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াই করার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়া তরুণ-তরুণীরা প্রধানত অনগ্রসর পরিবেশ থেকে উঠে আসা; তাদের শিক্ষাদীক্ষা নিম্নস্তরের এবং ‘জিহাদের প্রকৃত অর্থ এমনকি ইসলামি বিশ্বাস নিয়েই মৌলিক বোঝাপড়ায় ঘাটতি’ রয়েছে। জাতিসংঘের একটি নতুন গবেষণামূলক প্রতিবেদনে এসব তথ্য বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমনবিষয়ক কার্যালয়ের এ গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, মুসলমানদের রক্ষার দাবি করলেও দেশত্যাগী অধিকাংশ এসব যোদ্ধা তাদের ধর্মের বিধিবিধান সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও যথাযথভাবে কীভাবে প্রার্থনা করতে হয় তা-ও কেউ কেউ জানে না।

সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে লড়াই করতে গেছে এমন ১২টি দেশের ৪৩ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই গবেষণা করা হয়েছে।

এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনের প্রণেতারা বলেন, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশ তাদের ধর্মকে ধার্মিকতা ও আধ্যাত্মিকতার পরিবর্তে শুধু বিচার ও অবিচারের মাপকাঠিতে দেখে থাকে। এই যোদ্ধারা প্রধানত পুরুষ, বয়সে তরুণ, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত অবস্থা ও শ্রমবাজারে অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। তাদের বেশির ভাগই বেকার বা আংশিক বেকার। তাদের কাছে জীবনের কোনো মানে নেই।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের তিন-চতুর্থাংশ লড়াই করতে সিরিয়ায় যাওয়ার পর সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বাকিরা নিজ দেশের কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হয়েছে বা যাত্রাপথে ধরা পড়েছে।

জাতিসংঘের সব সদস্যদেশের প্রতি এ গবেষণায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হলেও প্রতিবেদনের রচয়িতারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কেবল সাতটি দেশ এতে সম্মত হয়। দেশগুলোর তিনটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত এবং চারটি মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার।

গবেষণাকালে ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হামেদ আল-সাইদ ও সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ব্যারেট অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কারাগারের ভেতর বা নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারির আওতায়।

গবেষণায় বলা হয়, ইসলামিক স্টেট (আইএস), আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন জাবাত আল-নুসরা ও জিহাদি আহরার আল-শামসহ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ার চেষ্টাকারী সাক্ষাৎকারদাতা এই যোদ্ধাদের অধিকাংশ জানায়, তারা বিভিন্ন নগরের অবহেলিত অংশের সুবিধাবঞ্চিত পরিবার থেকে উঠে এসেছে।

সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মূলধারার কর্মকাণ্ড থেকে এই যোদ্ধারা ছিল একঘরে।