আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায়

যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের খবরটি আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়েছে।
এর আগে জামায়াতে ইসলামীর ছয় নেতাকে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ দুপুরে রায় ঘোষণার পর বিবিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায়ের সংবাদটি, যার শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ এমপি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী টু হ্যাঙ ফর ওয়্যার ক্রাইমস’ (যুদ্ধাপরাধের দায়ে বাংলাদেশের সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি)। খবরটিতে বলা হয়, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতন ও গণহত্যার দায়ে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলের সাংসদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।’ সাকা চৌধুরীকে বিএনপির প্রথম দিকের সদস্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসির এই প্রতিবেদনে।
ইংল্যান্ডের আরেক প্রভাবশালী পত্রিকা ‘দ্য ইনডিপেনডেন্ট’-এর শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ এমপি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সেনটেন্সড টু ডেথ ওভার ওয়্যার ক্রাইমস’ (যুদ্ধাপরাধের দায়ে বাংলাদেশের সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ)। এখানে সাকা চৌধুরীকে উল্লেখ করা হয়েছে বিএনপির অন্যতম প্রধান নীতিনির্ধারক হিসেবে।
রয়টার্স শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশ সেনটেন্স সেভেন্থ অপজিশন লমেকার টু ডেথ ফর ওয়্যার ক্রাইমস’ (যুদ্ধাপরাধের দায়ে বাংলাদেশে বিরোধী দলের সপ্তম নেতার ফাঁসি)। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতন, ধর্ষণ ও গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা সালাউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে।’ রায় ঘোষণার পরপরই চট্টগ্রামে হরতালের ডাক ও রাজধানী ঢাকায় একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলোও উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
বার্তা সংস্থা এএফপির শিরোনাম ছিল, ‘গণহত্যার দায়ে প্রথমবারের মতো সাংসদের মৃত্যুদণ্ড’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে নয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।’ রায় ঘোষণার সময় আসামির কাঠগড়ায় থাকা সাকা চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ার উল্লেখও আছে এএফপির প্রতিবেদনে। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর বন্দরনগর চট্টগ্রামে নতুন করে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
‘বাংলাদেশের সাংসদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ’ শিরোনামে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় ২০০ জন বেসামরিক মানুষকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন বিরোধী দল বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।’ রায়-পরবর্তী সহিংসতা এড়ানোর জন্য রাজধানী ঢাকা ও সাকা চৌধুরীর নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামে বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে আল জাজিরার এই প্রতিবেদনে।
পাকিস্তানের জিও টিভির ওয়েবসাইটেও খবরটি গুরুত্বের সঙ্গে পরিবেশিত হয়েছে। শিরোনাম ছিল ‘বিএনপি লিডার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সেনটেন্সড টু ডেথ’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে নির্বাচিত আইনপ্রণেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় অত্যাচার, ধর্ষণ এবং গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সে সময় বাংলাদেশিরা পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভের জন্য লড়ছিল।
এ ছাড়াও পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন, ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া, জি নিউজের অনলাইন সংস্করণে বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে সাকা চৌধুরীর ফাঁসির আদেশের সংবাদটি।