করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অর্জন ধরে রাখার আহ্বান ডব্লিউএইচওর

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস
ফাইল ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কষ্টার্জিত অর্জনগুলো ধরে রাখতে আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। তিনি বলেছেন, করোনার অমিক্রন ধরন বুঝিয়ে দিয়েছে, মহামারিসংক্রান্ত একটি বৈশ্বিক চুক্তি কতটা জরুরি।

স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যদেশগুলোর তিন দিনের বিশেষ অধিবেশনের প্রথম দিনে তেদরোস এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট ইউএন নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি আফ্রিকা অঞ্চলে শনাক্ত হয় করোনার নতুন ধরন অমিক্রন। ধারণা করা হচ্ছে, ডেলটাসহ করোনার আগের সব ধরনের চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রামক। ডব্লিউএইচওর আশঙ্কা, নতুন এ ধরন বিশ্বের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এমন অবস্থায় তথাকথিত মহামারিবিষয়ক চুক্তি ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নিতে তিন দিনের বিশেষ ভার্চ্যুয়াল অধিবেশন আয়োজন করেছে ডব্লিউএইচও। সোমবার শুরু হওয়া এ অধিবেশন শেষ হবে বুধবার।

অধিবেশনের প্রথম দিনে তেদরোস আক্ষেপ করে বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশ্ব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। আরও অন্য চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি টিকার বৈষম্যের বিষয়টিও রয়েছে। আর এসব কারণে অমিক্রনের মতো অনেক বেশি মিউটেশন হওয়া নতুন ধরন সৃষ্টি হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ‘অমিক্রন আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে, কেন বিশ্বের জন্য মহামারিবিষয়ক একটি নতুন চুক্তি প্রয়োজন। কারণ, আমাদের বিদ্যমান ব্যবস্থায় বিশ্বের দেশগুলো একে অপরকে কোনো হুমকি সম্পর্কে অবহিত করতে উৎসাহ বোধ করে না।’ তিনি বলেন, অমিক্রন কতটা সংক্রামক, কতটা মারাত্মক ও এর বিরুদ্ধ টিকা কতটা কার্যকর, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। আর এ কারণে এখনই বিশ্বের জন্য আরেকটি সতর্কবার্তার প্রয়োজন নেই। তবে তিনি মনে করেন, অমিক্রন শনাক্তের ঘটনা বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে করোনা শেষ হয়ে যায়নি।

অমিক্রন ধরন নিয়ে দ্রুত সবাইকে সতর্ক করায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশংসা করেছেন তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে একের পর এক দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশটিকে শাস্তি নয়; বরং ধন্যবাদ জানানো উচিত। নতুন ধরন শনাক্ত করা, জিন উন্মোচন করা, নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার ব্যাপারে সবাইকে অবহিত করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর অন্য দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আফ্রিকায় টিকার পরিমাণ কম হওয়ার জন্য দেশটির জনগণকে দায়ী করার সুযোগ নেই। দেশটি স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞানবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার পর তা বিশ্বকে জানিয়েছে। আর এর জন্য তার শাস্তি পাওয়া উচিত নয়।