প্রথম ত্রিশঙ্কু বিধানসভা পাচ্ছে দিল্লি?
শুধু সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধই নয়, দিল্লিবাসী এবার ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে রেকর্ড সৃষ্টি করলেন। গত কুড়ি বছরে দিল্লিতে যেখানে ৬১ দশমিক ৮ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি, এবার সেখানে বিকেল পাঁচটা পর্যন্তই ভোট পড়েছে ৬৬ শতাংশ, ভোটপর্ব শেষ হলে শতাংশের হিসাবে যা ৭০ ছোঁয়ার সম্ভাবনা।
ভোটের এই মাত্রাছাড়া হার কোন দলের মুখে হাসি ফোটাবে, ভোটপর্ব মেটার আগে থেকেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। কংগ্রেস, বিজেপি ও আম আদমি পার্টি (এএপি) তিন প্রতিপক্ষই নিজেদের জয় সম্পর্কে নিশ্চিত হলেও রাজনৈতিক সমীক্ষকদের ধারণা, এই প্রথমবার দিল্লি বিধানসভা ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে। ভোটের হার যদি ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে তা নিশ্চিতভাবেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যাবে বলে পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন।
৭০ আসনবিশিষ্ট বিদায়ী বিধানসভায় কংগ্রেসের ছিল ৪৩ আসন, বিজেপির ২৩। রাজধানীর বরাবরের দ্বিমুখী লড়াইকে এই প্রথম ত্রিমুখী চরিত্র দিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে নামা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের এএপি।
দিল্লি বিধানসভার প্রথম ভোট হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। আগের বছর বাবরি মসজিদ ধূলিস্যাৎ হয়েছিল। সেবার ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী তিনটি ভোটে মতদানের হিসাব ছিল যথাক্রমে ৪৮, ৫৫ ও ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
এবার গত এক বছর ধরে দুর্নীতির নানা অভিযোগে জেরবার কংগ্রেসকে মোকাবিলা করতে হয় মাত্রাছাড়া মূল্যবৃদ্ধির। পাশাপাশি উঠে আসে নারীনিরাপত্তার বিষয়টিও। আন্না হাজারের আন্দোলনে ভর দিয়ে গড়ে ওঠা এএপি গত ৯ মাসে প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয় কংগ্রেস ও বিজেপি দুই দলকেই।
সদ্য শেষ হওয়া মধ্যপ্রদেশ (৭১ শতাংশ), রাজস্থান (৭৪ দশমিক ৫), ছত্তিশগড় (৭৭) ও মিজোরামের (৮১ শতাংশ) ভোটের হারের মতো দিল্লির মানুষও বিপুল হারে ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, এবারের ভোট সব দিক থেকেই অনেক হিসাব পাল্টে দেবে।
দিল্লির ভোটের সঙ্গেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ভোটপর্ব শেষ হলো। ৮ ডিসেম্বর দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের ভোট গণনা। মিজোরামের ৯ তারিখে।
আগামী বছরের সাধারণ নির্বাচনের আগে এই ভোটপর্বকে সেমি ফাইনাল হিসেবেই ধরা হচ্ছে। এই রাজ্যগুলোর ভোটের ফলের নিরিখে বোঝা যাবে, সাধারণ নির্বাচনে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির প্রভাব কতখানি।
প্রধান চার রাজ্যের বিদায়ী বিধানসভায় কংগ্রেসের দখলে রয়েছে দিল্লি ও রাজস্থান, বিজেপির দখলে আছে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়।