সিরিয়া নিয়ে জেনেভার শান্তি আলোচনা পিছিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সরাসরি দায়ী করেছেন। সিরিয়ার যুদ্ধকবলিত মানুষের সহায়তায় প্রায় নয় শ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্বনেতারা বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকের প্রাক্কালে দেশ দুটি বাশারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলে। খবর এএফপির।
দেশ দুটির অভিযোগ, আলোচনার টেবিলে সব পক্ষ যখন বসতে যাচ্ছিল, সেই সময় বাশার বাহিনী রাশিয়ার বিমান সহায়তা নিয়ে বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা চালানোয় এ অবস্থা হয়েছে। তবে সিরিয়ার প্রতিনিধি বলেছেন, বিরোধী জোটের ‘গ্রহণযোগ্য প্রতিনিধি’ নির্বাচন করতে না পারা আলোচনা পেছানোর মূল কারণ।
সিরিয়ার সরকার এবং বিরোধী জোটের মধ্যে মতবিরোধের জের ধরে জাতিসংঘের দূত স্তেফান দ্য মিস্তুরা জেনেভা আলোচনা তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। তাঁর ঘোষণামতে, ২৫ ফেব্রুয়ারি আলোচনা আবার শুরু হবে। মিস্তুরার দাবি, বৈঠক ‘শেষ কিংবা ব্যর্থ’ কোনোটাই হয়নি।
বুধবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লঁরা ফ্যাবিয়াস অভিযোগ করেন, রাশিয়া ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনী নির্বিচারে হামলা চালিয়ে পুরো শান্তি প্রক্রিয়াকেই বিধ্বস্ত করে ফেলেছে। এ ছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি অভিযোগ করেন, বিদ্রোহীদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখে বাশার সরকার প্রমাণ করেছে, তারা শান্তি আলোচনার বিষয়ে আন্তরিক নয়। কেরি রাশিয়াকে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ওপর বোমা হামলা বন্ধ করতে বলেন।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিমান হামলার সহায়তায় বাশারের অনুগত বাহিনী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো শহর ঘিরে ফেলেছে। গতকাল শহরের ভেতরে সরকারি বাহিনীকে ঢুকে পড়তেও দেখা গেছে। সরকার বলেছে, তারা বিদ্রোহীদের কাছে রসদ সরবরাহের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভোতগুলু বলেছেন, আলেপ্পো থেকে প্রাণভয়ে লক্ষাধিক লোক তুরস্কের দিকে পালিয়ে আসছে।
সিরিয়ার যুদ্ধকবলিত মানুষের সহায়তায় গতকাল লন্ডনে ৬০টি দেশের অংশগ্রহণে সম্মেলন হয়। সিরিয়ায় অবস্থানকারী এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যাওয়া মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য মূলত এ বৈঠক হয়। এ লক্ষ্যে সেখানে বিশ্বনেতাদের বড় অঙ্কের তহবিল সরবরাহের ঘোষণা দেওয়ার কথা।