মহাপ্রাচীরের ‘বুনো’ অংশ ভ্রমণ করতে দেবে না চীন

চীনের মহাপ্রাচীর।
ছবি: এএফপি

চলে এসেছে চীনের জাতীয় দিবস। এই সময়টায় হাজারো পর্যটকের ঢল নামবে মহাপ্রাচীরে। এ অবস্থায় ইউনেসকো-ঘোষিত এই বিশ্ব ঐতিহ্যের ‘বুনো’ অংশে কেউ উঠলে শাস্তির ঘোষণা দিয়েছে চীন। বিবিসি বুধবার এই খবর দিয়েছে।

‘ওয়াইল্ড গ্রেট ওয়াল’ বা ‘বুনো মহাপ্রাচীর’ চীনে বেশ পরিচিত একটি পরিভাষা। বিখ্যাত এই স্থাপনার যে অংশটায় সংস্কার করা হয়নি ও পর্যটকদের যাওয়া নিষিদ্ধ, সেই অংশকে বোঝাতে এই পরিভাষা ব্যবহার করা হয়। চীনের জাতীয় দিবস ১ অক্টোবর। এদিন থেকে সপ্তাহখানেক ধরে দেশটির নাগরিকেরা ছুটির আমেজে থাকেন। তাঁরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেন। তাই এই সময়টাকে পর্যটনশিল্পের জন্য ‘সুবর্ণ সপ্তাহ’ বলা হয়ে থাকে।

বেইজিংয়ের ইয়াঙ্কিং অঞ্চলের সাংস্কৃতিক স্মৃতিচিহ্ন প্রশাসন পরিচালক ইউ হানকুয়ান চীনের দৈনিক পত্রিকা গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, এ বছর জাতীয় দিবসের ছুটি স্থায়ী হবে আট দিন। এই সময়টাতে ‘বুনো মহাপ্রাচীর’ এলাকায় প্রবেশের চেষ্টাকারী পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে তাঁরা মনে করছেন।

এ অবস্থায় দেশটির কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, যাঁরাই মহাপ্রাচীরের নিষিদ্ধ অংশে যাওয়ার চেষ্টা করবেন, তাঁদের ২০০ ইউয়ান থেকে ৩০ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে। মহাপ্রাচীরে নিরাপত্তাও জোরদার করা হবে। ‘সুবর্ণ সপ্তাহ’ জুড়ে মহাপ্রাচীরে টহল দেবেন ১১৩ জন রক্ষী। এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ সতর্ক চোখ রাখবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে। কারণ, অনেকে এসব মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে ‘বুনো মহাপ্রাচীর’ অভিযাত্রা করে থাকে।

পরিচালক ইউ হানকুয়ান বলছেন, মহাপ্রাচীরের কিছু অংশ খুবই খাড়া। সেসব এলাকায় গেলে পর্যটকেরা হারিয়ে যেতে পারেন। কেউ ওপর থেকে পড়ে যেতে পারেন। তা ছাড়া এসব অংশে গেলে ঐতিহাসিক এই স্থাপনার ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

চীনের মহাপ্রাচীর কয়েক হাজার কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত। তবে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত অল্প কিছু এলাকা। এই এলাকাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। বাকি অংশগুলোর অবকাঠামো অবিকৃত রয়েছে। অবশ্য, চীন একবার ঘোষণা দিয়েছিল, তারা মহাপ্রাচীর সংস্কারের একটা প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।

প্রতিবছর জাতীয় দিবসের ছুটির সময় লাখ লাখ চীনা পর্যটক সাধারণত বিদেশে গিয়ে সময় কাটান। কিন্তু এবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাঁরা বিদেশে যেতে পারছেন না। চীন করোনাভাইরাসের বিস্তার অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে আরোপ করা বেশির ভাগ বিধিনিষেধও তুলে নিয়েছে দেশটি। ফলে অভ্যন্তরীণ পর্যটনশিল্প এবার ব্যাপক চাঙা হবে বলে আশাবাদী চীন।