যুক্তরাষ্ট্রে সেনাঘাঁটিতে মেজরের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত ১২
যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সেনাঘাঁটি টেক্সাসের ফোর্ট হুডে একজন মেজরের এলোপাতাড়ি গুলিতে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩১ জন। তাঁদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই সেনাবাহিনীর সদস্য। ঘাঁটির কমান্ডার লে. জেনারেল নন কোন প্রথমে বলেন, অস্ত্রধারী ওই মেজরও নিহত হয়েছেন। তবে পরে তিনি নিশ্চিত করেন, ওই মেজর নিহত হননি। তিনি সেনাবাহিনীর জিম্মায় রয়েছেন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা তিনজনই মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য।লে. জেনারেল কোন বলেন, ওই মেজর হঠাত্ কেন সহকর্মীদের গুলি চালিয়ে হত্যা করলেন সে ব্যাপারটি এখনো পরিষ্কার নয়। নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। অন্যরা সেনাসদস্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ ঘটনাকে ‘সহিংসতার ভয়াবহ বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা বলেন, ওই অস্ত্রধারী মেজরের নাম হচ্ছে নিদাল মালিক হাসান। তিনি সামরিক বাহিনীর মনোচিকিত্সক হিসেবে কাজ করছিলেন। কিছুদিনের মধ্যে তাঁর ইরাক মিশনে যাওয়ার কথা ছিল।ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে আমাদের সাহসী নারী-পুরুষদের হারানো আমাদের জন্য অবশ্যই কষ্টের বিষয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে একটি সেনাঘাঁটিতে তাঁদের গুলির মুখে পড়াটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার।’ তিনি হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা এই ভয়ঙ্কর ঘটনার প্রতিটি প্রশ্নের জবাব নিশ্চিত করব।’ ওবামা বলেন, ‘ফোর্ট হুডকে নিরাপদ সেনানিবাস হিসেবে ধরে রাখতে হোয়াইট হাউস পেন্টাগন, এফবিআই ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সঙ্গে কাজ করছে।’ কিলেন শহরের কাছে অবস্থিত ফোর্ট হুড যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেনাঘাঁটি। অস্টিন ও ওয়াকো শহরের মাঝামাঝি অবস্থিত এ ঘাঁটিতে প্রায় ৪০ হাজার সেনাসদস্য থাকেন। লে. জেনারেল কোন বলেন, গ্রিনিচমান সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ফোর্ট হুডের চিকিত্সাকেন্দ্রে গুলির ঘটনা ঘটে। সেখানে সেনাসদস্যরা কাজে যোগ দেওয়ার আগে শেষ মুহূর্তের মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন।কোন বলেন, অস্ত্রধারী ওই মেজরের হাতে দুটি হ্যান্ডগান ছিল। তিনি আচমকা ওই দুটি অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। বিবিসির খবরে বলা হয়, ঘটনার পর ঘাঁটিতেই পাশের একটি স্থাপনা থেকে দুজন সন্দেহভাজন সেনাসদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোন বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গুলির ঘটনার সঙ্গে একাধিক অস্ত্রধারী জড়িত থাকতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাঁটিতে দায়িত্বরত একজন সেনাসদস্য জানান, ‘আমি ঘাঁটির বাইরে মাইকে একজনকে জরুরি ঘোষণা দিতে শুনেছি এবং লোকজনকে বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকতে দেখেছি।’ফোর্ট হুডে থাকা সৈন্যদের মধ্যে অধিকাংশই ইরাক ও আফগানিস্তানে মোতায়েন ছিলেন। অনেকে আবার এ দুটি দেশ থেকে ওই ঘাঁটিতে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর অধিকাংশ সৈন্যকে এই ঘাঁটিতে রাখা হয়।